শরীর নিয়ে চিন্তায় থাকতে হবে। মাথা ও কোমরে সমস্যা হতে পারে। উপার্জন ভাগ্য শুভ নয়। ... বিশদ
পাত্রের নাম মীর আবু তালেব আলি। পাত্রীর নাম সাহরাম ফতেমার। হঠাৎই যে তাঁদের বিয়ে হয়ে গেল, এমনটা নয়। বলা যায় দীর্ঘ প্রেম পরিণতি পেল জুম্মাবারে। এতগুলো দেশের বর্ডার পেরিয়ে কীভাবে যুগলের দেখা হল, কীভাবেই বা প্রেম হল, সে এক রোমঞ্চকর গল্প। থুড়ি, গল্প না, বাস্তব। আবু তালেব দাঁইহাটের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাজিপাড়ার বাসিন্দা। তাঁর বাবার নাম মীর আদম আলি।
দীর্ঘদিন ধরে আবু তালেব কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। ২০১৭ সালে ভেলোরের খ্রিস্টান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান দু’টি কিডনিই প্রতিস্থাপন করতে। প্রতিস্থাপনের পর ফিরে আসেন। তারপর থেকে মাঝেমধ্যেই ভেলোরে চিকিৎসা করাতে যান তিনি। ২০১৮ সালে কুয়েতের বাসিন্দা পেশায় গাড়ি ব্যবসায়ী মহম্মদ আয়ূব তাঁর বড় মেয়েকে নিয়ে ভেলোরে আসেন। তাঁরও কিডনির সমস্যা! তখনই আয়ূব সাহেবের ছোট মেয়ে ফতেমাকে প্রথম দেখেন আবু তালেব। এরপর দু’জনের আলাপ-পরিচয় হয়। তা থেকে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু সেই ভালোবাসা ভেলোরেই শেষ হয়ে যায়। দু’জনেই ফিরে যান তাঁদের নিজের নিজের ঠিকানায়। কিন্তু বাড়ি ফিরেও আবু তালেবের মন পড়ে থাকে কুয়েতে।
এরপর ফেসবুক ঘাঁটতে ঘাঁটতে আবু তালেব একদিন পেয়ে যান ফতেমার সন্ধান। ফের শুরু হয় প্রেম পর্ব। এবার ভার্চুয়াল প্রেম। করোনার আবহ শুরুর আগেই কুয়েত থেকে ফতেমা দিদির চিকিৎসার জন্য পরিবার নিয়ে বাংলাদেশের ঢাকায় চলে আসেন। তারপরই শুরু হয় লকডাউন। আন্তর্জাতিক উড়ান পরিষেবা বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ সরকার। ফতেমার পরিবার বাংলাদেশেই আটকে পড়ে। এদিকে দু’জনের প্রেমপর্ব তখন অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। দু’জনেই চিন্তাভাবনা করছেন বিয়ে করার। কিন্তু কীভাবে তা সম্ভব? এই অবস্থায় ‘পরিত্রাতা’ রূপে দেখা দেন কাটোয়া শহরের ফটোগ্রাফার ইন্দ্রনীল নাথ। তিনিই দু’জনের ভার্চুয়াল বিয়ের ব্যবস্থা করেন।
রীতিমতো কার্ড ছাপিয়ে আত্মীয়-স্বজনদের নিমন্ত্রণ করা হয়। শুক্রবার পাত্রের বাড়িতেই বসে বিয়ের আসর। সেখানে খাবারের মেনুতে মাংস, পোলাও থেকে মিষ্টি, কিছুই বাদ ছিল না। নবাব বেশে পাত্র এসে ক্যামেরার সামনে পোজ দেন। তারপর সুন্দর সোফায় ল্যাপটপ খুলে বসেন। ওদিকে তখন বাংলাদেশের ঢাকায় ল্যাপটপ খুলে তৈরি পাত্রী। নির্দিষ্ট সময়ে বাংলাদেশের কাজি সাহেব নিকা পড়ালেন।
বিয়ের পর পাত্র আবু তালেব বলেন, আমরা দু’জন দু’জনকে প্রায় তিনবছর ধরে ভালোবাসি। কিন্তু করোনা আবহে সবকিছু গোলমাল হয়ে গিয়েছিল। তারপর দুই পরিবার মিলে সিদ্ধান্ত হয় ভার্চুয়াল বিয়ের। আমি খুশি। বাংলাদেশ থেকে পাত্রী সাহরাম ফতেমা বললেন, শেষমেশ বিয়েটা হল, এতেই আমরা খুশি। কবে দু’জনের সামনাসামনি দেখা হবে জানি না!