গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
নদীয়া জেলার রানাঘাট, শান্তিপুর, কৃষ্ণনগর, চাকদহ, কল্যাণী সহ বিভিন্ন স্টেশন থেকে হাজার হাজার বাসিন্দা নিত্যদিন লোকাল ট্রেনে সরকারি এবং বেসরকারি অফিস, কলকারখানায় কাজে যান। করোনা আবহে গত ছ’মাস ধরে ট্রেন চালচল বন্ধ থাকায় অফিসে যাতায়াত করতে একদিকে অনেকটা সময় লাগছে। খরচও তিন-চারগুণ বেড়ে গিয়েছে। অফিসে যাওয়া এবং ফেরার সময় যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। শান্তিপুরের ছানা এবং ঘি, রানাঘাটের ফুল, গেদে-বাদকুল্লার সব্জি চাষি ও ব্যবসায়ীদের বড় অংশও ট্রেনের উপর নির্ভর করে ব্যবসা করে এসেছেন। তাঁদেরও গাড়ি ভাড়া করে বা বাসের ছাদে মালপত্র পাঠাতে খরচ অনেকটাই বেশি হচ্ছে। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু দুঃস্থ মানুষ ট্রেনে চেপে কলকাতায় চিকিৎসা করাতে যেতেন। তাঁদেরও অতিরিক্ত টাকা খরচ করে বাসে চেপে কলকাতায় যেতে হচ্ছে। প্রচুর হকার স্টেশন ও লোকাল ট্রেনের ওপর নির্ভর করেই সংসার চালান। তাঁরা কর্মহীন হয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। সকলেই চাইছেন পুজোর মরশুমে জীবন-জীবিকা স্বাভাবিক ছন্দে ফেরাতে লোকাল ট্রেন চাকা গড়াক।
মাসখানেক আগেই বিভিন্ন স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে দূরত্ববিধি মেনে দাঁড়ানোর জন্য সাদা বা হলুদ রঙের ছোট ছোট বৃত্ত আঁকা হয়েছে। কোন পথ দিয়ে যাত্রীরা ঢুকবেন এবং কোন পথ দিয়ে বেরবেন সেইসমস্ত বিষয়ে রূপরেখা তৈরি হয়েছে। এই তৎপরতা দেখে যাত্রীরা শীঘ্রই লোকাল ট্রেন চালুর আশায় ছিলেন। কিন্তু প্ল্যাটফর্মের আঁকা বৃত্তের রং ফিকে হতে শুরু করলেও চালু হয়নি ট্রেন। রানাঘাটের বাসিন্দা কলকাতার একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী অনিন্দ্য ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, আগে ট্রেনে দমদমে নেমে মেট্রো ধরে অফিস যেতাম। তাতে সময় এবং টাকা দুই বাঁচত। এখন চারজন শেয়ারে গাড়ি ভাড়া করে যাতায়াত করি। কলকাতা থেকে ফেরার বাস পেতে সমস্যা হয়। বেতনের অনেকটা টাকাই ভাড়া দিতে চলে যাচ্ছে। তার উপর রাস্তার যানজট তো আছেই। শান্তিপুরের ছানা ব্যবসায়ী সঞ্জীব ঘোষ বলেন, শান্তিপুরের ছানা কলকাতা সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মিষ্টির দোকানে যায়। আমাদের মূল ভরসা ট্রেন। সেটা বন্ধ থাকায় ছানা পাঠাতে সমস্যা হচ্ছে।
রেলমন্ত্রক অবশ্য সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় লোকাল ট্রেন চালু করার বিষয় বারংবার ভাবনাচিন্তা করছে। অফিস টাইমে লোকাল ট্রেনে বাদুড়ঝোলা ভিড় হয়। ট্রেন চালু হলে যাত্রীদের সেই ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে যাবে। নদীয়া জেলায়ও করোনা সংক্রমণ ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী। গ্রাম থেকে শহর সমস্ত জায়গায় বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। পাশাপাশি ট্রেন চালু হলে উত্তর ২৪পরগনা হয়ে কলকাতা যাবে ট্রেনগুলি। দুই জায়গায় দৈনিক সংক্রমণ অনেক বেশি। ফলে সেটাও ভাবাচ্ছে রেলমন্ত্রককে।