বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
বর্ধমান একটি গুরুত্বপূর্ণ জংশন স্টেশন। স্টেশনের ওপরে এই পুরনো রেলওয়ে ওভারব্রিজের অবস্থা খারাপ হওয়ায় পাশে ঝুলন্ত রেলওয়ে ওভারব্রিজ তৈরি হয়েছে। যা রাজ্যের প্রথম। গতবছর পুজোর আগে ২৬ সেপ্টেম্বর মেদিনীপুর থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্বোধন করেছিলেন। চলতি মাসের গত ১৯ তারিখ রেল কর্তৃপক্ষ পুরনো ওভারব্রিজে ওই উচ্ছেদের নোটিস দিয়েছিল। তাতে এই ওভারব্রিজ ভাঙার জন্য দু’পাশের ব্যবসায়ীদের শান্তিপূর্ণভাবে উঠে যেতে বলা হয়েছিল। উচ্ছেদের জন্য তাঁদের ১০দিন সময় দেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু, এই নোটিস দেখেই আন্দোলনে নামে এসইউসি এবং তৃণমূল কংগ্রেস। কারণ, গত বছর পুজোর আগে থেকেই রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ পুরনো ওভারব্রিজের উপর দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। ভারী যান চলাচলের ফলে চাঙর খসে পড়ছিল। বড় গাড়ির যাতায়াত বন্ধ করতে ‘হাইট বার’ও লাগিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে টোটো, রিকশ, বাইক, সাইকেল এবং সাধারণ মানুষ হেঁটে পারাপার করেন। তাই বিকল্প পারাপারের ব্যবস্থা না করে ভাঙা যাবে না বলে দাবি তোলা হয়। পাশাপাশি, ওই রেলব্রিজের দু’পাশে অনেক ব্যবসায়ী রয়েছেন। তাঁরা বহু বছর ধরে একই জায়গায় বসে রুটিরুজি জোগাড় করছেন। তাই তাঁদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণের দাবিও তোলা হয়। গত ২২ সেপ্টেম্বর এই দাবিতে হকারদের দিয়ে আন্দোলনে নামে এসইউসি। গত ২৪ সেপ্টেম্বর ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন, ক্ষতিপূরণ এবং বিকল্প যাতায়াতের ব্যবস্থার দাবিতে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বর্ধমান স্টেশন চত্বরে মঞ্চ বেঁধে প্রতিবাদ করা হয়। ওইদিন আইএনটিটিইউসি’র পূর্ব বর্ধমান জেলার সভাপতি ইফতিকার আহমেদ রেল কর্তৃপক্ষকেও এই দাবিগুলি লিখিত আকারে জানিয়েছিলেন।
এই পুরনো রেলব্রিজ না ভাঙর জন্য গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিজেপি নেতৃত্বও বর্ধমান স্টেশন ম্যানেজারের অফিসে একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছিল। ওইদিনই বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভার বিজেপির সংসদ সদস্য এসএস আলুওয়ালিয়াও এ ব্যাপারে রেলমন্ত্রী পীষূষ গোয়েলকে একটি চিঠি দিয়েছিলেন। এই বিষয়টি নিয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনও হস্তক্ষেপ করে। কারণ, ওই পুরনো রেলব্রিজ ভেঙে দিলে টোটো, সাইকেল, রিকশ এবং হেঁটে পারাপার করার কোনও বিকল্প ব্যবস্থা নেই। নতুন ঝুলন্ত ওভারব্রিজ দিয়ে হেঁটে, রিকশ নিয়ে বা টোটোয় যাতায়াত করার অসুবিধা রয়েছে। তাই পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসকও বেল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি নিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন। সব মিলিয়ে রেল কর্তৃপক্ষ ব্রিজ ভাঙার সিদ্ধান্ত থেকে আপাতত সরে আসে। উচ্ছেদ অভিযান স্থগিতও করে দেয়। রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ পর্যন্ত উচ্ছেদ স্থগিত থাকবে। ‘বর্ধমান শহর জনপ্রিয় হকার্স ইউনিয়নে’র সম্পাদক ঝর্ণা পাল বলেন, রেল স্থগিত করায় আমরা খুশি। তবে, পুনর্বাসনের দাবিতে আমাদের আন্দোলন চলবে।
জেলাশাসক বিজয় ভারতী বলেন, রেল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছে, তারা এখনই পুরনো রেলওয়ে ওভারব্রিজ ভাঙছে না। আমরাও রেলকে জানিয়েছি, বিকল্প ব্যবস্থা না করে ভাঙা যাবে না। দ্বিতীয়ত, ভাঙার আগে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।