কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
জানা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের অনেক বাসিন্দাই কর্মসূত্রে ভিন রাজ্যে বসবাস করেন। সেই প্রবাসী বাঙালিরা প্রতিবছর সেখানে দুর্গাপুজো করেন। দুর্গাপুরের বহু শিল্পী অন্যান্য বছর প্রতিমা তৈরির জন্য ভিন রাজ্যে পাড়ি দেন। মার্চ মাস থেকে প্রায় চারমাস থেকে বাড়ি ফেরেন। এবার তাঁরা যেতে না পারায় মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ সহ বিভিন্ন রাজ্যে প্রতিমা তৈরির আকাল দেখা দিয়েছে। মহারাষ্ট্রের পুনের বাসিন্দা কৌশিক সাহা এবছর পুনেতে মাটির প্রতিমা না পেয়ে দুর্গাপুরে গ্যামনব্রিজ এলাকায় বরাত দিয়েছেন। তিনি দুর্গাপুর পূর্বাঞ্চল এলাকার আদি বাসিন্দা। কর্মসূত্রে বহু বছর ধরে সপরিবারে পুনেতে বসবাস করেন। তিনি ওই এলাকায় ‘আরাধনা প্রবাসী বাঙালি’ নামে একটি সমিতি তৈরি করেন। ওই এলাকার বাঙালি পরিবারগুলি মিলে দুর্গাপুজো করেন।
কৌশিকবাবু বলেন, মহারাষ্ট্র সরকারের করোনা বিধি মেনে এবার গণেশপুজো ধুমধাম করে হয়নি। পাশাপাশি অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষের উৎসবগুলিতেও তেমন জাঁকজমক দেখা যায়নি। সরকার পুজোপার্বণে জমায়েত রুখতে বড় করে পুজোর অনুমতিও দেয়নি। চার ফুটের বেশি কোনও মূর্তি তেরি করা যাবে না। আমি দুর্গাপুরের প্রবীণ মৃৎশিল্পী ভূপেন্দ্রনাথ দের কাছে একচালা দুর্গা তৈরির বরাত দিয়েছি। চার ফুটের প্রতিমাটি তৈরি করতে মাত্র ন’হাজার টাকা নিচ্ছেন তিনি। আমার পরিকল্পনা নিয়েছি আগামীদিনে ভিনরাজ্যের পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করে সেখানাকার সমস্ত প্রতিমা দুর্গাপুরের শিল্পীদের দিয়ে তৈরি করাব। তাতে বাংলার মৃৎশিল্পীরা অনেকটাই আর্থিকভাবে চাঙ্গা হয়ে উঠবেন।
ভিন রাজ্যের পুজো উদ্যোক্তাদের দাবি, মুম্বই, পুনে ও নাগপুর সহ বিভিন্ন রাজ্যে কয়েক হাজার দুর্গাপুজো হয়। সেখানে দুর্গামূর্তি তৈরি করতে যান পশ্চিমবঙ্গ থেকে কয়েকশো মৃৎশিল্পী। এবার শিল্পীর অভাবে প্রতিমা বানাতে পারেননি অধিকাংশ পুজো কমিটিই। তাই তারা ঘটে পুজোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এখন পুণের বাসিন্দা পুজো কমিটির সদস্য অচিন্ত্য জানা বলেন, করোনা পরিস্থিতি পৃথিবীজুড়ে চলছে। কিন্তু বাঙালির মহোৎসব তো বন্ধ হতে দেওয়া যায় না। তাই কোনওরকমে ঘটে পুজো সারব। কোনও খাওয়া দাওয়া ও সাংকৃতিক অনুষ্ঠানও হবে না।
ওই এলাকার একটি পুজো কমিটির কর্তা সঞ্জীব শ্রীবাস্তব বলেন, আমি টালিগঞ্জের আদি বাসিন্দা। এখানে এসে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী দুর্গাপুজো শুরু করি। এবছর মহারাষ্ট্রে মাটির প্রতিমার সঙ্কট রয়েছে। তাই কলকাতার কুমোরটুলি থেকে প্রতিমা নিয়ে আসছি। এছাড়াও কলকাতা থেকে প্রতিবছর দশকর্মর সামগ্রী, পদ্মফুল নিয়ে আসা হয়। ঢাকিও আসে কলকাতা থেকে। করোনা পরিস্থিতিতে ঢাকিদের আর্থিক অবস্থা সঙ্কটজনক হওয়ায় আমাদের পুজো কমিটি থেকে ছ’জন ঢাকিকে প্রায় ২৫ হাজার টাকা আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে।
দুর্গাপুরের মৃৎশিল্পী অভিজিৎ পাল বলেন, আমরা দুর্গাপুর থেকে বহু শিল্পী ভিনরাজ্যে প্রতিমা তৈরি করতে যেতাম। ভালো টাকা রোজগার হতো। কিন্তু এবার যেতে পারিনি। স্বাভাবিকভাবে ভিনরাজ্যে এবার প্রতিমার সঙ্কট দেখা দেবে। নিজস্ব চিত্র