গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
আধুনিক ভারতের নবজাগরণের পথিকৃত রাজা রামমোহন রায়। খানাকুল-১ ব্লকের রাধানগর গ্রামে মনীষীর জন্ম হয়। খানাকুল রামমোহন কলেজকে ডান দিকে রেখে একটু এগলেই কৃষ্ণনগর মোড়। সেখান থেকেই এক ফালি রাস্তা একেবেঁকে গিয়েছে রাধানগর গ্রামে। সেখানে গিয়ে দেখা গেল, বর্তমানে মনীষীর বসতবাড়িটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। কালের গ্রাসে বর্তমান প্রজন্মও ভুলতে বসেছে আধুনিক ভারতের জনককে। যদিও বাম আমলে মনীষীর জন্মভিটেকে কেন্দ্র করে পর্যটন কেন্দ্র গড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। হুগলি জেলা পরিষদের উদ্যোগে ‘রাজা রামমোহন রায় বসতবাটি পর্যটন কেন্দ্র’ গড়ে তোলা হয়েছিল। কিন্তু, সেটিও সংস্কারের অভাবে একপ্রকার ধ্বংসের পথে।
তবে লোকসংস্কৃতি ও রামমোহন আলোচনায় জোর দিতে প্রতিবছর জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে রামমোহন মেলার আয়োজন করে জেলা পরিষদ। হুগলি জেলা পরিষদের সভাপতি মেহেবুব রহমান বলেন, রামমোহনকে নিয়ে আমাদের আবেগের শেষ নেই। রামমোহনের স্মৃতিতে অনেক কিছুই করা হয়েছে। আগামী দিনেও করা হবে।
ইতিহাস থেকে জানা গিয়েছে, রামমোহন যেখানে নিজের বসতবাড়ি গড়ে তুলেছিলেন, সেটি রায় পরিবারের শ্মশান এলাকা বলেই পরিচিত ছিল। বর্তমানে গোটা এলাকাই পর্যটন কেন্দ্রের অধীনে রয়েছে। সেখানে কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, আকাশমণি ও আমবাগানে ঘেরা। মূল গেট দিয়ে পর্যটন কেন্দ্রে প্রবেশ করলেই, ডান দিকে রয়েছে রামমোহনের আবক্ষ মূর্তি। তার সামনে রয়েছে সতীদাহ বেদি। জানা গিয়েছে, ১৮১১ খ্রিস্টাব্দে রামমোহন এখানে প্রথম সতীদাহ প্রথা উচ্ছেদের সংকল্প গ্রহণ করেন। রামমোহনের দাদার মৃত্যুর পর বউদি অলোকমঞ্জরীদেবীকে এখানেই সতীদাহ করা হয়েছিল। সেই সময় রামমোহন তাঁর তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন। তিনি সংকল্প নিয়েছিলেন, আর একটিও সতীদাহ হবে না। তাই এই সতীবেদিকে সতীদাহ প্রথা আন্দোলনের পবিত্র স্থান হিসেবে মনে করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, দেশ-বিদেশ থেকে বহু মানুষ গবেষণার কাজে এই গ্রামে আসেন। গ্রামে কোনও রামমোহন সংগ্রহশালা বা মিউজিয়াম নেই। তাই গবেষণার কাজে এসে পড়ুয়াদের বিভ্রান্ত হতে হয়। পর্যটন কেন্দ্রের ভিতরে রামমোহন মিউজিয়াম গড়ে তোলার জন্য একটি ভবন নির্মিত হয়েছিল। কিন্তু, ওই দ্বিতল ভবনটি আজও তালাবন্দি অবস্থায় পড়ে রয়েছে। একসময় গ্রামে রামমোহন লাইব্রেরি চালু হয়। কিন্তু, সেটিও ২০১২ সালের পর থেকে বন্ধ হয়ে রয়েছে। আঞ্চলিক গবেষক দেবাশিস শেঠ বলেন, বিদগ্ধ মানুষদের নিয়ে একটি টিম তৈরি করা হচ্ছে।