রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, সীমান্তের গ্রামগুলিতে ট্রাক থেকে গোরু নামাতে যাতে অসুবিধা না হয়, তারজন্য রাস্তার পাশে উঁচু করে বালি জমিয়ে রাখা আছে। সেখান থেকে গোরুর পাল হাঁটিয়ে সীমান্তের দিকে নিয়ে যাওয়া হতো। ‘গুন্ডা ট্যাক্স’ জমার পর ছাড়পত্র দিত এনামুলের লোকজন। তারপর আর সীমান্তে গোরুর পাল আটকানোর সাধ্যি কার?
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একসময় শুধুমাত্র লালগোলার তারানগর এলাকায় প্রতিদিন আট থেকে ১০ হাজার গোরু পার হতো। সীমান্ত এলাকা থেকেই এই ফান্ডে দিনে প্রায় কয়েক কোটি টাকা জমা পড়ত। রানিনগর, জলঙ্গি, ধুলিয়ান, সামশেরগঞ্জ এলাকা থেকেও আরও কোটি টাকা গুন্ডা ট্যাক্স আসত। এই টাকা ছিল নাকি এনামুল বাহিনীর হাতেই। তবে, সেই টাকা ভাগ হতো। সিস্টেম সচল রাখতে প্রভাবশালীদের কাছেও যেত ‘প্রসাদের ডালা’। সেই কারণে মুর্শিদাবাদের অনেক দাপুটে লোকজনও এই পাচারকারীর নাম মুখে নেওয়ার সাহস দেখায় না। গ্রামের ভিতর দিয়ে সকলের চোখের সামনে পাল পাল গোরু সীমান্তে চলে যায়। কিন্তু প্রতিবাদ নেই। কারণ সেই প্রভাবশালী তত্ত্ব।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশে হরিয়ানার প্রজাতির গোরুর চাহিদাই বেশি। সেখানে দ্বিগুণের বেশি দামে বিক্রি হয়। তাই মোটা টাকা ‘গুন্ডা ট্যাক্স’ দেওয়ার পরেও লাভ ভালোই থাকে। এলাকার লোকজন বলেন, এনামুলের উত্থান অনেকটা রূপকথার গল্পের মতো। প্রথমদিকে জুয়ার প্রচণ্ড নেশা ছিল। জুয়ায় হেরে সে লালগোলার বাড়ি পর্যন্ত খুইয়েছিল। পরে গাঁজা ও জালনোটের কারবার শুরু করে। ২০১৫সালে গোরু পাচারে হাতেখড়ি হয় এনামুলের। মুর্শিদাবাদ ছাড়াও মালদহ ও উত্তর ২৪ পরগনার সীমান্ত ছিল তার আওতায়। এই কারবারে তার গুরু ছিল বসিরহাটের এক পাচারকারী। এনামুল ২০১৫ সালের আগে বেশ কিছুদিন সেখানে ছিল। পাচারের কৌশল শিখে লালগোলায় চলে আসে। সেই সময় বাংলাদেশের সীমান্ত লাগোয়া এই ব্লকে অন্য এক পাচারকারীর দাপট ছিল। পরে এনামুল ওই পাচারকারীর লোকজনদের দলে টানে। তারপর থেকেই ধীরে ধীরে প্রভাব বিস্তার করে।
রাজ্যের বিভিন্ন প্রভাবশালীর সঙ্গে গড়ে ওঠে সম্পর্ক। দিল্লির এক প্রভাবশালী নেতার ছেলের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা নিয়ে জেলাজুড়ে চর্চা রয়েছে। অনেক সরকারি আধিকারিকের সঙ্গে তার ওঠাবসা ছিল। কয়েক বছর আগে তার বোনের বিয়ের অনুষ্ঠানে অনেক প্রভাবশালী হাজির ছিলেন। সম্প্রতি খবরের শিরোনামে আসা ওই বিএসএফ আধিকারিকও এসেছিলেন। লালগোলায় পদ্মার পাড়ে দাঁড়িয়ে কথা হচ্ছিল এক মধ্যবয়স্ক ব্যক্তির সঙ্গে। তিনি বলেন, এনামুল খুব বেশি প্রকাশ্যে আসত না। তবে, চোখে না দেখলেও তার নাম সকলেই জানে।