বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
অভিযোগ, এই অফিসে শালিজমিকে ডাঙা বা বাস্তুজমি করে দেওয়া হচ্ছে। একই জমি বিভিন্ন সময়ে সরকার নির্ধারিত মূল্যের বাইরে গিয়ে অনেক বেশি দাম ধার্য করা হচ্ছে। টাকা দিলেই দালালদের মাধ্যমে সরকারি কাগজপত্র কারচুপি করে জমির ভ্যালুয়েশন কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে, সরকারের রাজস্বের ক্ষতি হচ্ছে। আবার ঘুষ না দিলেই ভ্যালুয়েশন বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এই ব্লকের রাজগ্রাম মহামায়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শঙ্করপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় চাষযোগ্য ৩১ শতক জমি কেনার জন্য কয়েকদিন আগে মুরারই রেজিস্ট্রি অফিসে আসেন। জমির চরিত্র ও সরকারি ভ্যালুয়েশন জানতে অফিসের ইনফর্মেশন শিট ভর্তি করে আবেদন জানান। ওই শিক্ষক বলেন, অফিস অশোক স্তম্ভ লাগোনো ইনফর্মেশন শিট প্রিন্ট আকারে আমাকে দেয়। তাতে ওই সোয়েম জমির(জলাজমি) মূল্য নির্ণয় করা হয়েছে ন’লক্ষ ৪০ হাজার ২০০টাকা। পরদিন আমি রেজিস্ট্রি করাতে আসি। অফিস থেকে জানানো হয়, রেজিস্ট্রির আগে রেজিস্ট্রারের কাছে সার্টিফায়েড করাতে হবে এবং সেটা অলিখিত। পরে অফিসের বড়বাবুর পক্ষ থেকে ওই জমির ভ্যালুয়েশন ৩৭ লক্ষ টাকা জানানো হয়। এক শতক জমি রেজিস্ট্রি করতে এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে স্ট্যাম-ডিউটি দিতে হবে। আমি অবাক হয়ে যাই। একদিনে জমির দাম কী করে এত বেড়ে যায়!
তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার বিকেলে এব্যাপারে জানতে গেলে দুর্ব্যবহার করে বেরিয়ে যেতে বলা হয়। তাঁর দাবি, এর আগে তাঁর এক ছাত্রের জমির ভ্যালুয়েশন ২২ লক্ষ টাকা থেকে কমিয়ে পাঁচ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়। বোঝাপড়া করে সেটা হয়েছে। আর তার প্রমাণ আমার কাছে আছে। এভাবেই মোটা টাকা কামাচ্ছে প্রতারণা চক্র। এরই প্রতিবাদে আমি বিডিওর কাছে অভিযোগ করেছি। যাতে সরকারি নির্ধারিত মূল্যেই সকলে জমি রেজিস্ট্রি করাতে পারেন, তার ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানিয়েছি।
করোনা পরিস্থিতিতে এই অফিসে দিনে ৪০-৪২টি জমি ও বাড়ি রেজিস্ট্রি করা হচ্ছে। অফিস খুলতেই কয়েকজন জমি রেজিস্ট্রি করার জন্য বুকিং করছেন। পরে সেই বুকিং মোটা টাকার বিনিময়ে অন্যদের বিক্রি করছেন। বিডিও বলেন, ওই অফিসের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের অভিযোগ বিস্তর। ডিস্ট্রিক্ট রেজিস্ট্রারকে বলা হয়েছে। মানুষের ক্ষোভের কথা তাঁকে জানানো হয়েছে। কিন্তু, তিনি কিছু বলেননি।
মুরারই-১ এর সাব রেজিস্ট্রার রণজিৎ সাহা বলেন, অনলাইনে জমির ভ্যালুয়েশন যাই থাক, তা খতিয়ে দেখে সার্টিফাই করেন রেভিনিউ অফিসার। ওই শিক্ষক যে জমি কিনছেন তা বাস্তুভিটে। ফলে যা ভ্যালুয়েশন হওয়ার সেটাই বলা হয়েছে। আসলে কাউকে সন্তুষ্ট করতে না পারলে ঝামেলা পাকানোর চেষ্টা হয়। ভ্যালুয়েশন কমানোই তাঁদের উদ্দেশ্য। জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বলেন, আমার কাছে এখনও এই সংক্রান্ত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখব।