গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
পর্যটন মানচিত্রে বীরভূমের কদর গোটা রাজ্যজুড়েই। একদিকে, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হাতে গড়া শান্তিনিকেতন। রয়েছে তারাপীঠ সহ পাঁচ সতীপীঠ থেকে পাথরচাপুড়ির দাতা বাবার মাজার। রয়েছে বক্রেশ্বর উষ্ণপ্রস্রবণ। তাই সারা বছরই জেলায় এইসব পর্যটনস্থলগুলিতে পর্যটকের আনাগোনা লেগেই থাকে। বিশেষ পার্বণে পর্যটকের ঢল নামে।
তাই পর্যটকদের নজর কাড়তে পর্যটনকেন্দ্রের সংযোগকারী রাস্তাগুলির সৌন্দর্যায়নেও জোর দিয়েছে পর্যটন দপ্তর। হাওয়া বদলে বাড়ি থেকে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ার পর এবার রাস্তার সৌন্দর্যও নজর কাড়বে পর্যটকদের। ১০০ দিনের কাজে রাস্তার দু’পাশে ওইসব গাছ লাগানোর কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, পলাশ, শিমূলের মতো দেশি গাছের সৌন্দর্যে পর্যটকদের চোখের আরামের পাশাপাশি সেখানে দাঁড়িয়ে ছবি তোলার স্মৃতিও সঞ্চয় করতে পারবেন তাঁরা।
বীরভূমের জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বলেন, এমনজিএনআরইজিএ প্রকল্পের মাধ্যমে জেলায় এমন প্রায় ১০ হাজার গাছ লাগানো হচ্ছে। গাছ বাঁচাতে রাস্তার দু’ধারে ইতিমধ্যে ইট দিয়ে ঘেরার কাজ চলছে। গাছগুলি বড় হয়ে গেলে গোটা রাস্তা মনোরম হয়ে উঠবে। পর্যটকরা অবশ্যই নিজের ইচ্ছায় রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে পারবেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সাম্প্রতিক উম-পুন ঘূর্ণিঝড়ে জেলায় প্রায় দু’হাজার গাছ ভেঙে যায়। এছাড়া বহু গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিভিন্ন নির্মাণ কাজ করতে গিয়েও গাছ কাটতে হয়েছে। ফলে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার স্বার্থে নতুন করে বৃক্ষরোপণও প্রয়োজন। তাই বর্ষার মরশুমেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় জেলায় পর্যটন কেন্দ্রগুলির সংযোগকারী রাস্তার দু’ধারে গাছ লাগানো হবে। রাস্তার সৌন্দর্যায়নে রঙিন ফুলের গাছগুলি বেছে নেওয়া হয়েছে। তারাপীঠ যাওয়ার রাস্তায় মনসুবা মোড় থেকে রাস্তার দু’ধারেও এই কাজ শুরু হয়েছে। তার সঙ্গে বক্রেশ্বর, পাথরচাপুড়ি আসার রাস্তাতেও একইভাবে গাছ লাগানো হবে।
রাস্তার দু’ধারে ইট দিয়ে ঘিরে দেওয়ায় সৌন্দর্য আরও বাড়বে। গাছগুলি বড় হলে প্রকৃতি আরও অপরূপ হয়ে উঠবে। বোলপুর-শান্তিনিকেতনকে ঘিরে পর্যটকদের আনাগোনা সারা বছরই বেশি থাকে। সেখানে শান্ত প্রকৃতির ছোঁয়া পেতে পর্যটকরা ঘুরে বেড়ান। সোনাঝুরিও পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়। এবার বোলপুরে প্রবেশের আগে রাস্তাগুলিও সৌন্দর্যে ঢাকবে।
বোলপুরের বিডিও শেখর সাঁই বলেন, অমলতাস, ফাগুন বউ, কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, লাল ও হলুদ পলাশের চারা বিভিন্ন জায়গা থেকে জোগাড় করে লাগানো হয়েছে। ইলামবাজার, মোলডাঙা, সিউড়ি থেকে বোলপুর যাওয়ার রাস্তায় ওই গাছ লাগানোর কাজ চলছে। একইসঙ্গে কঙ্কালীতলা মন্দিরে যাওয়ার রাস্তাতেও কাজ হবে।
তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, গাছগুলিকে রক্ষণাবেক্ষণ করাও ভীষণ জরুরি। বিভিন্ন এলাকায় বিনা অনুমতিতে গাছ কাটার অভিযোগ প্রায়শই ওঠে। সেগুলি রোখাই প্রশাসনের কাছে চ্যালেঞ্জ। তবে পথের ধারে রংবেরঙের গ্রাম্য ফুলের সমারাহে প্রকৃতির রূপ আরও বাড়বে। ওইসব রঙিন ফুলের গাছ পিছনে রেখে মনের মানুষের সঙ্গে সেলফি, বেড়ানোর স্মৃতি আরও সুমধুর করবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ছবি পোস্টের উপরে ক্যাপশন হতেই পারে, ‘যখন শিমূল পলাশ ঝরবে পথে, দুলবে হাওয়া বুকে। থাকব দুজন, দুজনাতে শপথ নিয়ে সুখে’।