বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
ধৃতদের স্মার্টফোন এবং ল্যাপটপ থেকে একাধিক ‘লোন উলফ’ কায়দার জঙ্গি হামলার ভিডিও উদ্ধার হয়েছে। বিগত কয়েক বছর ধরেই এই কৌশল নিয়েছে আল কায়েদা ইন ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট (একিউআইএস)। এই আন্তঃরাজ্য মডিউল তেমনই হামলার পরিকল্পনা করছিল। কাশ্মীরে ‘লোন উলফ’ হামলার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ শিবির হওয়ার কথা ছিল। তার দিনক্ষণ, বিভিন্ন দফায় সেখানে কতজন যাবে, সে সবও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল পাকিস্তান থেকে। এমন কিছু গোপন কথপোকথন হাতে এসেছে এনআইয়ের। চ্যাট গ্রুপে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের সঙ্গে যুক্ত লোকজনও ছিল। চলতি আর্থিক বছরে আইএসআইয়ের এক কর্তার থেকে ঘুরপথে বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া হয়ে টাকাও এসেছে ধৃতদের কাছে। পাশাপাশি, ধৃতদের ফোন-ল্যাপটপ এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় সিএএ-এনআরসি আন্দোলন, ৩৭০ ধারার অবলুপ্তি, করোনা আবহে তবলিগ-ই-জামাতের সমাবেশ ইত্যাদি নিয়ে পরিকল্পিত মিথ্যা প্রচারের ভিডিও শেয়ার হয়েছে। এসবের প্রতিশোধের নাম করেই দিল্লিতে নাশকতার ছক কষে তারা। অনলাইনে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছিল বলেও খবর।এদিন রানিনগরে আবু সুফিয়ানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে গভীর একটি সুড়ঙ্গের হদিশ পান এনআইএর আধিকারিকরা। একতলা বাড়িটি সবে তৈরি হয়েছে। গোয়েন্দাদের অনুমান, বিস্ফোরক মজুত রাখার কাজ করত সুফিয়ান। বিস্ফোরক রাখার জন্যই সুড়ঙ্গটি খোঁড়া হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সুফিয়ান সাধারণত ওই ঘরে বাইরের কাউকে ঢুকতে দিত না বলে জানিয়েছে পরিবার। মধুবোনা গ্রামের মইনুল মণ্ডলের কেরল ফিরে যাওয়ার কথা ছিল শনিবারই। প্লেনের টিকিটও কাটা ছিল। তার স্ত্রী বলেন, ‘কেরলে যাওয়ার আগে স্বামী কোনও বৈঠকে যোগ দিয়েছিল কি না জানি না। তবে বৃহস্পতিবার রাতে ও আমাকে নিয়ে ডোমকল গিয়েছিল। ডাক্তার দেখিয়ে বাপের বাড়ি গিয়েছিলাম।’
ডোমকলের জয়রামপুরের বাসিন্দা লিউ ইয়ান আহমেদ বিস্ফোরক তৈরির প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল। যে কোনও ধাতব বস্তু থেকে ধারালো অস্ত্র এবং দেশীয় কায়দায় বুলেট প্রুফ জ্যাকেট তৈরি করতে পারে সে। একিউআইএসের প্রধান আসিম উমরের সঙ্গেও দু’বার দেখা করেছিল মুর্শিদ ও লিউ ইয়ান। শেষ ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সীমান্তে একটি জায়গায় একটি ধর্মীয় জলসার আড়ালে তাদের কথা হয়। অবশ্য গত বছর আসিমের মৃত্যুর খবর জানা যায়।
এছাড়া জলঙ্গির আতিউর রহমানও একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত ছিল বলে খবর। সেখানে জঙ্গি কাজকর্ম নিয়ে আলোচনা হতো। গ্রেপ্তারির সময় সেই কথোপকথন পরিবারকে দেখিয়েছিল এনআইএ। কম্পিউটার সায়েন্সের ছাত্র নাজমুস শাকিবও একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ছিল। সেখানে কাশ্মীরের কয়েকজনের সঙ্গে তার নিয়মিত কথা হতো বলে গোয়েন্দা সূত্রে খবর। জানা গিয়েছে, মুর্শিদের নির্দেশে ধৃতেরা গ্রামে গ্রামে ধর্মীয় জলসা বা মজলিশ বসাত। তার আড়ালেই চলত গ্রামবাসীদের মগজধোলাই। এই মডিউলের সঙ্গে যুক্ত আরও কিছু নাম এনআইএ-র হাতে এসেছে। মুর্শিদাবাদ এবং মালদহে নজরদারি চলছে।