বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
পুলিস জানিয়েছে, ধৃতদের নাম সুব্রত মাঝি ওরফে বাদশা, জয়ন্ত বাগ ওরফে নিরঞ্জন এবং মঙ্গলদীপ দলুই ওরফে বাবু। সুব্রত’র বাড়ি সাঁকো ডোমপাড়ায়। বাকি দু’জনের বাড়ি সাঁকো মেটেপাড়ায়। সুব্রত ও জয়ন্ত’র বয়স ২০ এবং মঙ্গলদীপের বয়স ১৮। সাঁকো মেটেপাড়াতেই তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য বুদ্ধদেব দলুইয়ের বাড়ি। তিনি পেশায় খেতমজুর। বুধবার গ্রামে মনসা পুজো ছিল। ওইদিন রাতে পুজো দেখতে গিয়েছিল বুদ্ধবাবুর ন’বছরের ছেলে সন্দীপ। সেখান থেকেই তাকে অপহরণ করা হয়। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ বুদ্ধদেববাবুকে ফোন করে অপহরণকারীরা প্রথমে সাত লক্ষ, পরে তিন লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল। ছেলেকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য বুদ্ধদেববাবু অনেকবার অনুরোধ করেছিলেন। জানিয়েছিলেন, সবকিছু বিক্রি করে দিলেও এত টাকা জোগাড় হবে না।
বুধবার রাতেই জেলা পুলিসের পুরো টিম ঘটনার তদন্তে নামে। ফোনের সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার পুলিস সুব্রত, জয়ন্ত ও মঙ্গলদীপকে আটক করে। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর ধৃতরা অপহরণের কথা স্বীকার করে। তারপর রাতেই ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু, অপহৃত বালক কোথায়? তখন ধৃতরা খুনের কথা জানায়। জেরায় তারা পুলিসকে জানিয়েছে, টাকার লোভে পরিকল্পনা করেই তারা পঞ্চায়েত সদস্যের ছেলেকে অপহরণ করেছিল। প্রথমে ওই বালককে মাদক জাতীয় জিনিস খাইয়ে আচ্ছন্ন করে। তারপর তাকে বাইকে চাপিয়ে ডিভিসি ক্যানেল পাড়ে চলে যায়। মুক্তিপণ চাওয়ার জন্য আগে থেকে অন্যের মোবাইল থেকে একটি সিমকার্ড চুরি করেছিল। ক্যানেল পাড়ে দাঁড়িয়ে ওই সিমকার্ড ব্যবহার করেই ফোন করে মুক্তিপণ চায়। কিন্তু, অপহরণের ঘটনা ছড়িয়ে পড়তেই গ্রামবাসীরা খোঁজখবর শুরু করে দেন। পুলিসের কাছেও খবর যায়। ওই নাবালকটি তিন অপরাধীর পরিচিত। তাই ধরা পড়ার ভয়ে অপহরণের দু’ঘণ্টা পরই ওই নাবালককে তারা শ্বাসরোধ করে খুন করে। প্রমাণ লোপাটের জন্য হাত-পা বেঁধে ক্যানেলের জলে ফেলে দিয়ে চলে যায়।
ওই তিনজন যুবক খুনের পর দিব্যি বাড়িতে ফিরে খাওয়া-দাওয়া সেরে ঘুমিয়ে পড়েছিল। তারা ভেবেছিল, পুলিস তাদের ধরতে পারবে না। কারণ, যে নম্বর থেকে ফোন করেছিল, খুনের পর সেই সিমকার্ড ক্যানেলের জলেই ফেলে দিয়েছিল। পুলিস সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, অপহরণ ও খুনের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্তের জন্য তিনজনকেই ১০ দিনের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।