বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, লকডাউনের পর থেকে এখনও পর্যন্ত মাস্ক, স্যানিটাইজার এবং পিপিই কিট তৈরি করে তারা প্রায় ১৫লক্ষ টাকা আয় করেছে। এখনও কাজ চলায় আগামী দিনে লাভের পরিমাণ আরও বাড়বে বলে আধিকারিকদের দাবি।
স্যানিটাইজার তৈরির জন্য জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। করোনা পরিস্থিতিতে চাহিদা থাকায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের বাড়িতে বসেই মাস্ক ও স্যানিটাইজার তৈরির পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। হাতে-কলমে তা শেখার পর থেকেই তাঁরা স্যানিটাইজার তৈরি করতে থাকেন। পাশাপাশি কোনও কোনও স্বনির্ভর গোষ্ঠী মাস্ক তৈরি করতে থাকে। তাঁদের উৎপাদিত সামগ্রীর জনপ্রিয়তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস এবং অন্যান্য সরকারি দপ্তরগুলি থেকে অর্ডার আসতে থাকে। কাজের চাপে তাদের তখন দম ফেলার ফুরসত ছিল না। চাহিদা বাড়তে থাকায় তাঁদের আর ফিরে তাকাতে হয়নি। স্বনির্ভর গোষ্ঠী দপ্তরের আধিকারিক(পিডি) দেবাহুতি ইন্দ্র বলেন, বিভিন্ন দপ্তরে সরবরাহ করার পাশাপাশি গোষ্ঠীর সদস্যরা বিভিন্ন এলাকায় বিনামূল্যে মাস্ক এবং স্যানিটাইজার বিতরণ করেছেন।
প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, জেলার ২৬টি ব্লকে ১১৫টি সংঘ এই কাজ করেছিল। মোট ৩১৭টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী মাস্ক এবং স্যানিটাইজার তৈরি করেছে। জেলার স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি এখনও পর্যন্ত ১৮২০লিটার স্যানিটাইজার তৈরি করেছে। বিভিন্ন দপ্তরে তিন লক্ষ ২২হাজার মাস্ক সরবরাহ করেছে। মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মীনা বলেন, আমাদের জেলার স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি সারাবছর বিভিন্ন ধরনের কাজ করে। তাদের উৎপাদিত সামগ্রীর চাহিদা সারাবছরই থাকে। এই মহামারীর সময়ে তারা মাস্ক এবং স্যানিটাইজার তৈরি করেও আয় করেছে।
স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য রুবি বিবি বলেন, স্যানিটাইজার তৈরির জন্য আমাদের সাতদিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। প্রথমে হাতে গোনা কয়েকজনকে শেখানো হয়। তারপর তাঁরা অন্যান্যদের শেখান। এভাবেই প্রশিক্ষণ চলতে থাকে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর আরেক সদস্য রিজিয়া বিবি বলেন, লকডাউনের প্রথম দিকে সংসার কীভাবে চলবে তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু পরে সেই চিন্তা দূর হয়ে যায়। নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে মাস্ক এবং স্যানিটাইজার তৈরি করা হয়েছে। সেকারণেই চাহিদা বেশি। প্রসঙ্গত, মুর্শিদাবাদ জেলায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে প্রশাসন বিভিন্ন কাজে শামিল করেছে। নাবালিকাদের বিয়ে বন্ধ করার জন্য তারা গ্রামে গ্রামে সচেতনতামূলক প্রচার করছে। তাদের আয় বাড়ানোর জন্য প্রশাসনের উদ্যোগে মুরগি, হাঁসের খামার তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। আধিকারিকদের দাবি, মুর্শিদাবাদের স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি লকডাউনের সময় মাস্ক এবং স্যানিটাইজার তৈরি করে অন্যান্য জেলা থেকে অনেক বেশি আয় করেছে। আগামী দিনেও তাদের এই কাজে উৎসাহ দেওয়া হবে।