বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
দুর্গাপুরের সুকুমার নগর এলাকায় বাড়ি অরিন্দমবাবুর। তিনি হোটেল ম্যানেজমেন্ট পাশ করে হায়দরাবাদে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। স্ত্রী ও ছেলে দুর্গাপুরের বাড়িতে বাবা মায়ের সঙ্গে থাকত। রোজগার ভালো থাকায় ১৩ বছরের ছেলে অভিষেককে শহরের নামী বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করেন। কিন্তু করোনা ভাইরাস তাঁদের জীবন ওলটপালট করে দিয়েছে। কাজ হারান অরিন্দমবাবু। লকডাউনের আগে থেকেই বাড়িতে রয়েছেন। এলাকায় কোথাও কাজ না জোটায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার তাঁর মোবাইলে পুরস্কার জেতার ভুয়ো অফার প্রলোভনে নিজেকে সামলাতে পারেননি। পা দেন প্রতারকদের ফাঁদে। দ্রুত পুরস্কার জেতার জন্য প্রতারকদের নির্দেশিকা পালন করেন। ই-ওয়ালেটের কাস্টমার কেয়ার নম্বরে ফোন করতেই তাঁকে বলা হয়, কেটে নেওয়া ২৭০২ টাকা ফেরত পাওয়া যাবে। তবে তাদের পাঠানো লিঙ্কে দেওয়া ফর্ম পূরণ করতে হবে। সরল বিশ্বাসে তিনি তা পূরণ করে দেন। দুপুর আড়াইটা নাগাদ অপরিচিত একটি নম্বর থেকে ফোন আসে। বলা হয় টাকা ফেরতের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ফোনে পাঠানো কয়েকটি ওটিপি বলতে হবে। প্রথমবার ওটিপি বলার পরই ৯৮হাজার ৬৮৫টাকা ও পরে ৯৯হাজার ৫৫৫টাকা ও শেষে ১০ হাজার টাকা কেটে নেওয়া হয়। তারপর প্রতারকদের ফোন করলে ওপার থেকে বলা হয়, সার্ভারের সমস্যা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে টাকা ফেরত পাওয়া যাবে। অরিন্দমবাবুর বৃদ্ধা মা সরস্বতীদেবী প্রথম এই প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন। তারপরই ভবিষ্যতের জন্য জমানো সব আমানত এভাবে খোয়া গিয়েছে বুঝে মুষড়ে পড়েন অরিন্দমবাবু। অভিযোগ করতে যাওয়ার জন্য মানসিক জোর হারিয়ে ফেলেন তিনি। সরস্বতীদেবীই ছেলেকে জোর করে নিয়ে এসে অভিযোগ দায়ের করান।
পুলিসের প্রাথমিক ধারণা, বহু সাইবার প্রতারক ই-ওয়ালেটের নামে ভুয়ো ওয়েবসাইট বানিয়ে কাস্টমার কেয়ার নম্বরের জায়গায় নিজেদের নম্বর দিয়ে রাখে। যাতে মানুষ বিপদে পড়ে তাদের ফোন করলেই সহজে অপারেশন চালতে পারে তারা। তেমনই একটি চক্রের ফাঁদে পড়েছেন অভিযোগকারী।