বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শুভ্রজ্যোতির বাড়ি দুর্গাপুরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রীনগরপল্লি এলাকায়। সে টাউনশিপের একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ত। তার বাবা আশিসকুমার মণ্ডল বেসরকারি কারখানার কর্মী। শুভ্রজ্যোতি মাস তিনেক অসুস্থ ছিল। ডিএসপি মেন হাসপাতালে পাঁচদিন ভর্তি ছিল। সোমবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে মায়ের সঙ্গে কাশীরাম দাস অ্যাভিনিউ এলাকায় তার মামারবাড়ি গিয়েছিল। এদিন সকাল ৯টা নাগাদ মামারবাড়ি থেকে সাইকেল নিয়ে সে বের হয়। কিছুটা যাওয়ার পরই সি-জোনের দিকে যাওয়া একটি অতিরিক্ত পাথরবোঝাই ডাম্পার পিছন থেকে তাকে ধাক্কা মারে। উত্তেজিত জনতা ডাম্পারটিতে ভাঙচুর চালায়। স্থানীয় বাসিন্দারাই গুরুতর জখম অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে দুর্গাপুর হাসপাতালে ভর্তি করেন। কয়েক ঘণ্টা পর সেখানেই তার মৃত্যু হয়। ছেলের মৃত্যুশোকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তার মা রীতা মণ্ডল। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুভ্রজ্যোতির দিদিমা পূর্ণিমা মণ্ডল বলেন, কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন হাসপাতালে নাতির চিকিৎসা করা হয়। মাত্র একদিন আগে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছিল। এদিন সবকিছু শেষ হয়ে গেল। এখন খালি মনে হচ্ছে, সাইকেল নিয়ে নাতিকে বেরতে না দিলেই ভালো হতো। রাজেশ পাশোয়ান নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, শুভ্রজ্যোতি বাঁদিক দিয়েই সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিল। ডাম্পারটিই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাকে ধাক্কা মারে। সম্পূর্ণ দোষ ডাম্পার চালকের। আমরা মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কিছুদিন ধরে এই এলাকায় অতিরিক্ত বালি, পাথরবোঝাই লরি ও ডাম্পার যাতায়াত করছে। বীরভূম থেকে পাণ্ডবেশ্বর হয়ে টাউনশিপের ভিতর দিয়ে শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় সহজে পৌঁছে যাচ্ছে। তাই মালবাহী গাড়িগুলি এই রাস্তাই পছন্দ করে। তার ফলে এলাকায় দুর্ঘটনা ঘটার পাশাপাশি টাউনশিপের রাস্তাঘাট বেহাল হয়ে পড়ছে। পুলিস প্রশাসনের নজরদারি আরও বাড়ানো দরকার। দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের (ডিএসপি) জনসংযোগ আধিককারিক বেদবন্ধু রায় বলেন, স্টিল টাউনশিপের রাস্তা দিয়ে পণ্যবাহী যানবাহন চলাচলের নিয়ম নেই। বিষয়টি নিয়ে পুলিস ও প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
এসিপি ট্রাফিক-৩ তৌহিদ আনোয়ার বলেন, ঘাতক ডাম্পার সহ চালককে আটক করা হয়েছে। টাউনশিপ এলাকায় পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলের উপর নজরদারি করা হচ্ছে। প্রতিনিয়ত আটক করে মামলা দায়ের করা হচ্ছে। টাউনশিপে প্রবেশ করার আগে প্রতিটি জায়গায় পুলিসি নজরদারি চালানো হয়। এর পরেও বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে ঢুকে পড়ছে। আমরা আরও কয়েকটি রাস্তায় নজরদারি বাড়িয়েছি। দুর্গাপুরে জ্বলছে ডাম্পার। - নিজস্ব চিত্র