পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
পরিবারের থেকেও আলাদা রয়েছেন অনেকেই। অথচ রাতদিন সবরকম কাজ করতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে মূলত ৫০-এর বেশি বয়সি পুলিসকর্মীদের একাংশ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছেন। কাজেও প্রভাব পড়ছে। অনেকেই অমনোযোগী হয়ে সংক্রমণের আশঙ্কা করছেন। তাই এবার এঁদের ক্ষেত্রে ছুটির নিয়ম শিথিল করল কৃষ্ণনগর জেলা পুলিস। ছুটির আবেদন গুরুত্ব দিয়ে দেখে তা মঞ্জুর করার সবরকম চেষ্টা করা হবে বলেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জেলা পুলিসের এক কর্তা বলেন, পুলিসকর্মীদের বছরে ১৪টা সিএল, ৩০টা ইএল এবং মেডিক্যাল লিভ থাকে। তাঁর দাবি, একজন পুলিসকর্মী পুরো কর্মজীবনে ১০০টা ইএল কোনওভাবেই পান না। নতুন করে সিদ্ধান্ত হয়েছে, যাঁদের বয়স ৫০-এর উপরে তাঁদের ক্ষেত্রে মানবিকতার খাতিরেই সবদিক খতিয়ে দেখে ছুটি দেওয়ার সবরকম চেষ্টা করা হবে। জেলার পুলিস সুপার জাফর আজমল কিদওয়াই বলেন, আমরা চেষ্টা করছি পঞ্চাশোর্ধ্ব পুলিসকর্মীদের ছুটি দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা নরম হতে। কতটা সম্ভব হয়, আমরা দেখছি। তবে আমাদের মূল লক্ষ্যই হল, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কাজের এবং থাকার পরিবেশ দেওয়া। সঙ্গে প্রতি মুহূর্তে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার চেষ্টাও করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জেলার একের পর এক থানায় পুলিসকর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন। এক দু’জন আক্রান্তের থেকে অন্যান্যরাও সংক্রামিত হয়ে পড়ছেন। শনিবার জেলায় আইজি (দক্ষিণবঙ্গ) রাজীব মিশ্র, ডিআইজি (মুর্শিদাবাদ রেঞ্জ) সুনীলকুমার চৌধুরী জেলা পুলিসের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন। সেখানেও কী কী ভাবে সংক্রমণ কিছুটা কমানো যায়, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনাও হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। কয়েকটি সিদ্ধান্তও কৃষ্ণনগর জেলা পুলিসের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে। যেমন সব থানাতে বা পুলিস লাইনে কয়েকটি ঘরে বা বারাকে একপ্রকার গাদাগাদি করেই অনেক পুলিসকর্মী থাকেন। দেরিতে হলেও এবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, বারাকে আগে যে সংখ্যায় পুলিসকর্মী ছিলেন, তাঁদের মধ্যে অর্ধেককে অন্য জায়গায় স্থানান্তরিত করা হবে। এজন্য সরকারি বিভিন্ন বিল্ডিং, অফিস চিহ্নিত করা হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি সব থানায় সেফ হোম তৈরি রাখা হচ্ছে। যেখানে উপসর্গহীন বা কম উপসর্গ থাকা পুলিসকর্মীদের রাখা হবে। পাশাপাশি জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের সেফ হোমেও কিছু জায়গা পুলিসকর্মীদের জন্য সংরক্ষিত করা হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে।
শুধু কৃষ্ণনগর জেলা পুলিস এলাকাতেই সব মিলিয়ে প্রায় ২০ জনের বেশি পুলিসকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। নাকাশিপাড়া, ধুবুলিয়া, চাপড়ায় একের পর এক থানায় কনস্টেবল থেকে এসআই, এএসআই সংক্রামিত হচ্ছেন। তেহট্টের নাজিরপুর ফাঁড়ির এক কনস্টেবলও আক্রান্ত হয়েছেন। এর আগে ওই ফাঁড়ির এক সিভিক ভলান্টিয়ার আক্রান্ত হয়েছিলেন।
এমনিতেই পুলিস জেলা দু’ভাগ হয়ে যাওয়ার পর কর্মীর সংখ্যা কম। এভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ায় পুলিস কর্তাদের মনে ভয় বাড়ছে। কারণ, বর্তমান পরিস্থিতিতে পুলিসকে সবরকম কাজই করতে হচ্ছে। এই অবস্থায় ছুটির সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে মানবিকতার পরিচয়। কিন্তু কতটা বাস্তবায়িত হবে, তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।
ধুবুলিয়া থানার আবাসনে চলছে জীবাণুমুক্ত করার কাজ। -নিজস্ব চিত্র