নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর ও সংবাদদাতা, রানাঘাট: নদীয়া জেলায় নতুন করে মোট ৭২জন করোনা আক্রান্ত হলেন। প্রশাসনের উদ্বেগ বাড়িয়ে রানাঘাটের এক চিকিৎসক, চাপড়া থানার চার পুলিসকর্মী এবং বিএসএফের ৯৯নম্বর ব্যাটেলিয়নের পাঁচ জওয়ান করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এনিয়ে চাপড়া থানার মোট ছ’জন করোনা আক্রান্ত হলেন। রানাঘাটের এক পঞ্চায়েত প্রধানও আক্রান্ত হয়েছেন। কৃষ্ণনগর জেলার পুলিস সুপার জাফর আজমল কিদওয়াই বলেন, পুলিসকর্মীরা প্রথম দিন থেকে কোভিডের বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছেন। তাঁরাও সংক্রামিত হচ্ছেন। আক্রান্তদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
এদিন রাজ্যের ঘোষিত লকডাউনে জেলার সর্বত্রই শুনশান ছিল। গাড়ি চলাচল করেনি, বাজার-হাট, অফিস বন্ধ ছিল। কৃষ্ণনগর শহরের বেশ কয়েকটি কন্টেইনমেন্ট জোন ঘুরে দেখেন আইজি(দক্ষিণবঙ্গ) রাজীব মিশ্র, ডিআইজি সুনীলকুমার চৌধুরী।
জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চাকদহ পুরসভায় ২১জন, চাকদহ ব্লকে সাতজন, বীরনগর পুরসভায় একজন, কৃষ্ণনগর পুরসভায় দু’জন, চাপড়ায় ন’জন, হরিণঘাটা পুরসভায় তিনজন, কল্যাণী পুরসভায় একজন, কৃষ্ণগঞ্জে দু’জন, কালীগঞ্জে একজন, কৃষ্ণনগর-১ ব্লকে একজন, কৃষ্ণনগর-২ ব্লকে একজন, নাকাশিপাড়ায় একজন, রানাঘাট পুরসভায় দশজন, শান্তিপুর ব্লকে একজন, নবদ্বীপ পুরসভায় দু’জন, রানাঘাট-২ ব্লকে ছ’জন, তেহট্ট-১ ব্লকে দু’জন, করিমপুর-২ ব্লকে একজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। জেলায় সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ১২১৯। এই মুহূর্তে চিকিৎসাধীন ৪৩৪জন। ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে। রানাঘাটে তিন দমকলকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁরা পায়রাডাঙা এবং মাজদিয়ার বাসিন্দা। রানাঘাট দমকলের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক তাপস সাহা বলেন, আমাদের অফিসের তিনজন আক্রান্ত হওয়ার পর বাকি ৩৪জনের সোয়াব টেস্ট করানো হচ্ছে। পাশাপাশি অফিস সম্পূর্ণভাবে স্যানিটাইজ করা হয়েছে। এছাড়াও রানাঘাট শহরের ৩, ৫ ও ১২নম্বর ওয়ার্ডের চারজন আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৫নম্বর ওয়ার্ডে একই পরিবারের দু’জন রয়েছেন। বীরনগর পুরসভার ৫নম্বর ওয়ার্ডের একজন এবং শান্তিপুর ব্লকের বেলগড়িয়া-২ পঞ্চায়েত এলাকার একজন মহিলা আক্রান্ত হয়েছেন। নবদ্বীপ পুরসভার এক গাড়ির চালকও আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁর বাড়ি পুরসভার ৫নম্বর ওয়ার্ডের প্রাচীন মায়াপুর অষ্ঠম লেনে। তাঁকে হোম আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালের কর্মরত এক নার্স সম্প্রতি কাঁচড়াপাড়ায় গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পর শরীর খারাপ হওয়ায় তাঁকে হাসপাতালের আইসোলেশন বিভাগে রাখা হয়। পরে তাঁর সোয়াব টেস্ট হলে রিপোর্ট পজিটিভ আসে। নবদ্বীপ পুরসভার ১৮নম্বর ওয়ার্ডের এক বৃদ্ধও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
রানাঘাট-২ ব্লকের দত্তপুলিয়া পঞ্চায়েতের কর্ত্রী করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় অফিস সিল করে দেওয়া হয়েছে। কর্মীদের সোয়াব টেস্ট করা হবে বলে বিডিও অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে। ওই পঞ্চায়েত এলাকার আক্রান্ত এক আশাকর্মীর পরিবারের আরও দু‌’জনের পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। এছাড়াও ওই ব্লকের শ্যামনগর পঞ্চায়েতের রূপশ্রী পল্লি ও পান্থপাড়া এবং রঘুনাথপুর হিজুলি-২ পঞ্চায়েতের হালালপুর এলাকায় একজন করে আক্রান্ত হয়েছেন।