কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
শুধু আসানসোল নয়, পার্শ্ববর্তী বার্নপুর, কুলটি, চিনাকুড়ির হালও একই। এতে স্মার্ট ক্লাসে অভ্যস্ত হয়ে পড়া শহরের পড়ুয়ারা বিপাকে পড়ছে। কখনও মোবাইলের চার্জ শেষ, কখনও ইনভার্টারের। এই অবস্থায় মোমবাতির ভরসায় অনেকেই রাত কাটাচ্ছেন। বিদ্যুৎ অনিয়মিত হওয়ার জন্য শহরের পানীয় জল পরিষেবার উপরও ব্যাপক প্রভাব পড়ছে। পাম্পিং স্টেশনে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জেরে নদী থেকে পর্যাপ্ত জল তুলতে পারছে না পুরসভা। এর জেরে ক্ষোভ বাড়ছে।
বিদ্যুৎ পরিষেবার এই ভয়ঙ্কর চিত্রটা এক সময় রাজ্যে পরিচিত ছিল। সেই সময় দিনে কয়েক ঘণ্টা লোডশেডিং ছিল রোজনামচা। এমনকী কারেন্ট আসার সঙ্গে সঙ্গে উল্লাসে চেঁচিয়ে উঠত বাড়ির শিশুরা। কিন্তু গত কয়েক বছরে সেই পরিস্থিতির আমূল বদল এসেছে। শহর তো দূরের কথা, প্রত্যন্ত গ্রামেও লোডশেডিং শব্দটি ভুলতে বসেছিলেন মানুষ। তাই বাড়িতে হ্যারিকেন বা চার্জার লাইট খুঁজে পেতে বেশ খানিকটা সময় লাগত বাড়ির সদস্যদের। কিন্তু, ফের পুরনো দিনগুলি ফিরছে খনি শহর আসানসোলে। দিন ও রাতের একটা বড় সময় বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের সাক্ষী থাকছে শহরের বিস্তীর্ণ অংশ। ওয়েস্ট আপকার গার্ডেন, ইসমাইল, মহিশীলা কলোনি, হটন রোড, চেলিডাঙা সর্বত্রই একই ছবি। ভরা শ্রাবণে টইটম্বুর জলজ মেঘ, কখনও বৃষ্টির উতলধারা। সে ঝমঝম মুষলধারায় হোক অথবা ছিঁচকাঁদুনে টিপটিপ। বর্ষার দিনে এটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু মেঘ ডাকলেই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হচ্ছে এইসব এলাকায়। বৃষ্টি থেমে আকাশ পরিষ্কার হয়ে গেলেও বিদ্যুৎ আসছে না।
বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে প্রায় সব বেসরকারি স্কুলই অনলাইনে ক্লাস করাচ্ছে পড়ুয়াদের। কিন্তু বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের জেরে তাতে ব্যাঘাত ঘটছে। দীর্ঘক্ষণ ধরে জ্বলায় ইমার্জেন্সি লাইটেরও চার্জ ফুরচ্ছে। তাই অন্ধকারেই থাকতে হচ্ছে আধুনিক শহরের বাসিন্দাদের। করোনা আবহে এমনিতেই মানুষ গৃহবন্দি। তাই বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম টিভি দেখে সময় কাটানোরও উপায় নেই।
লোডশেডিংয়ের জন্য ব্যাঘাত ঘটছে পানীয় জল পরিষেবারও। পুরসভার দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, তিন মাসের মধ্যে তাঁদের একটি পাম্পিং স্টেশনে ৭৭ ঘণ্টা ৪০ মিনিট, একটিতে ৬৬ ঘণ্টা ২৬ মিনিট লোডশেডিং হয়েছে। জল বিভাগের মেয়র পরিষদ সদস্য পূর্ণশশী রায় বলেন, লোডশেডিংয়ের জন্য আমরা জল পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে পারছি না। সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে বারবার চিঠি দিলেও কাজ হচ্ছে না।
সঙ্কটে পড়ছেন ব্যবসায়ীরাও। একে ব্যবসায় মন্দা, তার উপর লোডশেডিংয়ের গেরোয় বাড়তি জেনারেটরের খরচ লাগছে। ডব্লুবিএসিডিসিএলের আসানসোল ডিভিশনের ম্যানেজার শুভেন্দু চক্রবর্তী অবশ্য বলেন, এই সময়ে এলাকায় বড় মাপের কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি নেই। বৃষ্টির জন্য অল্পবিস্তর বিভ্রাট ঘটছে।