রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
কলকাতার ধাঁচে পশ্চিম বর্ধমানেও করোনা ওয়ারিয়র্স গ্রুপ তৈরির উদ্যোগ নেয় প্রশাসন। জেলার যে সব বাসিন্দা করোনায় আক্রান্ত হয়ে সহজেই সুস্থ হয়ে উঠেছেন তাঁদেরই এই গ্রুপে শামিল করা হবে। পরিকল্পনা ছিল, বর্তমানে করোনা আক্রান্ত রোগী ও তাঁদের আত্মীয়দের মনোবল বাড়ানোর কাজ করবেন গ্রুপের সদস্যরা। বহু এলাকায় করোনা আক্রান্ত হলেই তাঁদের সামাজিকভাবে বয়কট করার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। সেইসব এলাকায় গিয়েও করোনা জয়ীরা সচেতনতার বার্তা দেবেন। প্রয়োজনে তাঁদের সেফ হাউসে রেখে কাউন্সেলিং করানোর কাজেও লাগানো হবে। তবে, বিনা পারিশ্রমিকে নয়, ওই গ্রুপের সদস্যদের মাসে ১৫ হাজার টাকা ভাতার ব্যবস্থাও করা হয়। যদিও এই উদ্যোগে সাড়া মিলছে না। ফোন করে এই কাজের অফার দেওয়া হলেও মুখ ফিরিয়েছেন প্রায় সবাই। তাই জেলা প্রশাসনের এই পরিকল্পনা কার্যত ভেস্তে যেতে বসেছে। জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, করোনা ওয়ারিয়র্স গ্রুপে নাম লেখাতে কেউই আগ্রহী নয়। বিষয়টি যথেষ্ট হতাশার। কারণ এটা শুধু কাজ নয়, সমাজসেবাও।
কিন্তু, কেন এই অনীহা? তা নিয়ে অবশ্য বিভিন্ন কারণ উঠে আসছে। এখনও কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছে না একবার করোনা হলে দ্বিতীয়বার হবে না। তাই একবার যাঁরা মারণ ভাইরাসকে জয় করেছেন, তাঁরা নতুন করে সেই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে চাইছেন না। অনেকেই এই কাজ করতে গিয়ে নতুন করে সংক্রামিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন। বহু মানুষের অভাব থাকলেও স্বাস্থ্যদপ্তরের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিচ্ছেন। তবে এর পাশাপাশি শিল্পাঞ্চলের কাঁচা টাকার জোগানকেও অনেকে দায়ী করেছেন। অভিযোগ, করোনার জেরে বহু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী পথে বসেছেন। শিল্পীরা পেশা পরিবর্তন করে হকারি করছেন। বহু মানুষ কাজ হারিয়ে বাড়িতে বসে রয়েছেন। সেই অবস্থাতেও শিল্পাঞ্চলজুড়ে রমরমিয়ে চলছে অবৈধ কয়লার কারবার। অনেকে গ্রামের পাশে মাটি খুঁড়ে কয়লা তুলেও ভালো টাকা রোজগার করেন। বর্ষাকালেও জেলার বিভিন্ন নদীঘাটে চলছে বালি উত্তোলন। তাই কাঁচা টাকার প্রলোভন ছেড়ে করোনা রোগীদের মনোবল বাড়ানোর কাজের অফার অনেককেই প্রভাবিত করছে না।
করোনা ডেটাবেসে আক্রান্ত রোগীর নামের পাশে তাঁর মোবাইল নম্বরও রয়েছে। তালিকা ধরে প্রশাসনের তরফে সেই নম্বরগুলিতে ফোন করে কাজের অফার দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তা করতে গিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হচ্ছেন জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্যদপ্তরের আধিকারিরা।