পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
ঘটনার পর স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। কেউ বাড়ি ছেড়ে মেয়ের বাড়িতে উঠেছেন। কেউ আবার বাড়িতেই গৃহবন্দি। করোনা যোদ্ধাদের এই অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়েছে স্বাস্থ্য মহলেও। পুলিস উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও ফার্স্ট এএনএম তুলিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দোতলা বাড়ি, চারচাকা ও দু’চাকা গাড়ি ভাঙচুর হওয়ায় আতঙ্ক আরও বেড়েছে। যদিও পুলিস জানিয়েছে, বিষয়টি কড়া হাতে দমন করা হবে।
স্থানীয় বিএমওএইচ ফারুক হোসেন বলেন, তুলিকাদেবীর লিখিত অভিযোগ আমি থানায় পাঠিয়েছি। বিষয়টি ভীষণই উদ্বেগের। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না পাওয়া গেলে ওই এলাকায় আর কাজ করা যাবে না। এসিপি শাশ্বতী শ্বেতা সামন্ত বলেন, আমরা পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। অভিযোগের ভিত্তিতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৯ জুলাই ভরতপুর বাউরিপাড়ার এক ব্যক্তির করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তিনি প্রথমে বর্ধমানের সেফ হোমে যেতে চাননি। পরে পুলিসি সহায়তায় ৩০ জুলাই তাঁকে সেখানে পাঠানো হয়। পরের দিন তাঁর সংস্পর্শে থাকা ১৬জনের নমুনা সংগ্রহ হয়। এলাকার ৮টি পরিবারকে নিয়ে কন্টেইনমেন্ট জোন ঘোষণা করা হয়। স্বাভাবিকভাবেই গ্রামের বাকি অংশ থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তারা। এমনকী একশো দিনের কাজও বন্ধ হয়। ৩ আগস্ট আক্রান্ত ব্যক্তিকে বর্ধমানের সেফ হোম থেকে ছেড়ে দিয়ে হোম আইসোলেশনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।
কিন্তু তাঁর থাকার পৃথক বাড়ি না থাকায় স্বাস্থ্য দপ্তর ফের তাঁকে অন্য একটি জায়গায় ১৪ দিন রাখার উদ্যোগ নেয়। এরপরই এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। গুজব ছড়ানো হয় রোগীকে বাইরে রাখতে পারলে স্বাস্থ্যকর্মীরা বেশি টাকা পাবে তাই তারা বাড়ি আসতে দিচ্ছে না। এরপরই সোমবার রাতে তুলিকাদেবীর বাড়িতে হামলা হয়। তাঁর স্বামী চিকিৎসক। অধ্যাপিকা মেয়ে কলকাতায় থাকেন। বাড়ির কাচ ভাঙা হয়। গাড়িগুলিকেও ভেঙে দেওয়া হয়। আতঙ্কে তুলিকাদেবী মেয়ের কাছে চলে যান। এরপর মঙ্গলবার সকালে পর পর আশাকর্মী টুম্পা বন্দ্যোপাধ্যায়, ভিআরপি অসীম মণ্ডল ও সেকেন্ড এএনএম মাধবী বাগদির বাড়িতে হামলা করা হয়। বাড়ি থেকে বের হলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। প্রাণ বাঁচাতে এলাকায় আত্মগোপন করেন করোনা যোদ্ধারা।
বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে যেভাবে লড়াই করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা, তাঁদের নিরাপত্তা নিয়েই প্রশ্ন ওঠে। বিশেষ করে হামলার সময়ে অদূরেই পুলিস ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক উদ্বেগ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও বিডিওকে। অন্যদিকে সেই করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিকে গ্রামেরই এই জুনিয়র হাইস্কুলে রাখা হয়েছে। তাঁর ছেলে অরবিন্দ বাউরি বলেন, বাবার কিছু হয়নি। ওরাই টাকা খাওয়ার জন্য এসব করছে। তাই মানুষ বিক্ষোভ দেখিয়েছে।