বিতর্ক-বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম-পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থোপার্জনের সুযোগ।প্রতিকার: অন্ধ ব্যক্তিকে সাদা ... বিশদ
মহিষাদলের গেঁওখালির দত্ত পরিবারের মেজোভাই গত ২০জুলাই তমলুক হাসপাতালে মারা যান। তেষট্টি বছর বয়স্ক ওই ব্যক্তি টায়ফয়েডে আক্রান্ত হয়ে কিছুদিন ধরে ভুগছিলেন। অসুস্থতা বাড়লে তাঁকে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারপর হঠাৎ তাঁর মৃত্যু হয়। মৃতের এক ভাই জানান, দাদার কার্ডিয়াক ফেলিওর হয়েছে বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই দাদার করোনা টেস্ট করা হয়েছিল। মৃতদেহ বাড়ি এনে দাহ করার একদিন পর দাদার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। তিনি বলেন, করোনার রিপোর্ট আসা পর্যন্ত মৃতদেহ হাসপাতালে রেখে অপেক্ষা করতে চেয়েছিল পরিবারের সবাই। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টিতে গুরুত্ব দিতে চায়নি। পরিবারের দাবি, করোনা সুরক্ষা বিধি মেনে মৃতদেহ হাসপাতাল থেকে আনলে সকলকে এমন বিপর্যয়ের মধ্যে পড়তে হতো না।
দত্ত পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁরা চার ভাই গেঁওখালি বাজার এলাকার বাসিন্দা। বাজার এলাকাতেই সবাই আলাদা বাড়িতে থাকেন। মেজো ভাইয়ের মৃত্যুর পর করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসায় দত্ত পরিবার ও তাঁদের আত্মীয়স্বজন সকলেই গত দশদিন ধরে গৃহবন্দি হয়ে রয়েছেন। কন্টেইনমেন্ট জোন হওয়ায় কয়েকদিন ধরে বাজারও বন্ধ ছিল। বন্ধ ছিল বাজার সংলগ্ন নাটশাল-১ গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসও। গত ২৪ জুলাই দত্ত পরিবার ও শ্মশানবন্ধু সহ মোট ১৫জনের করোনা টেস্ট হয়। ২৭ ও ২৯জুলাই ১২জনের করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট আসায় সবাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন। তারপর চব্বিশ ঘণ্টা না কাটতেই বৃহস্পতিবার বিকেলে স্বাস্থ্যদপ্তরের ফোন পেয়ে নিরাশ হন দত্ত পরিবারের সদস্যরা। ছোট ভাইয়ের পরিবারের তিনজনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে।
দত্ত পরিবারের সেজোভাই তাঁর মেজদার মুখাগ্নি করেছিলেন। শুক্রবার তাঁদের ১০দিনের বিশেষ পারলৌকিক কাজকর্ম হওয়ার কথা ছিল। সেজোভাই বলেন, ছোট ভাইয়ের পরিবারের সকলে করোনা আক্রান্ত হওয়ায় দাদার শ্রাদ্ধের কাজকর্ম আপাতত বন্ধ থাকবে। পারিবারিক পুরোহিত পারলৌকিক কাজ পরে করার নিদান দিয়েছেন। দাদাকে হারালাম, অন্যদিকে ভাইয়ের করোনা, আমাদের কারও মনমেজাজ ভালো নেই। মেজদা অবিবাহিত ছিলেন। দাদার মৃত্যুর পর তাঁর করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসায় বাড়িতে সবাই গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। করোনার জন্য বহু নিয়মই মানা সম্ভব হয়নি।
ছোট ভাই করোনা আক্রান্ত হওয়ায় ফোনেই তাঁকে মনের সাহস যুগিয়েছেন। তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়াতে না পেরে মন খারাপ ভাইদের। স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য শিবপ্রসাদ বেরা বলেন, দত্ত পরিবারের বিপর্যয়ের সময়ে পাশে রয়েছে প্রশাসন।