কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
পুরুলিয়া জেলায় মোবাইল চুরির ঘটনায় একাধিকবার চিনাকুড়ির কিশোরদের নাম উঠে এসেছে। মোবাইল চুরিতে যে এরা বিশেষভাবে দক্ষ, তা একাধিক পুলিসকর্তার কথাতেই স্পষ্ট হয়েছে। জেলা পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, করোনা আতঙ্কে লকডাউনের জেরে বাস ও ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। বড় কোনও জমায়েত বা বাজারেও তেমন ভিড় হচ্ছিল না বললেই চলে। তবে সম্প্রতি বিভিন্ন রুটে বাস চলাচল শুরু হয়েছে। হাটে বাজারে আগের তুলনায় ভিড় বেড়েছে। আর সেই সুযোগে পুরুলিয়া শহরে সক্রিয়তা বাড়িয়েছে পশ্চিম বর্ধমানের চিনাকুড়ির গ্যাংও।
মূলত ১২ থেকে ১৬ বছর বয়সের নাবালকরাই ওই দলে যুক্ত রয়েছে। ভিড়ের মধ্যে তারা অতি সহজেই মিশে যায়। পকেট থেকে নিমেষের মধ্যে মোবাইল সরিয়ে ফেলতে তাদের জুড়ি মেলা ভাড়। জামার বুক পকেট এবং প্যান্টের পিছনের পকেটে থাকা মোবাইলই এরা মূলত টার্গেট করে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, যেকোনও বাজারে এরা চার-পাঁচজন মিলে একসঙ্গে যায়। কখনও কখনও তাদের দলে মহিলারাও থাকে। একজন ‘অপারেশন’ সেরে ফেললে বাকিরা চারিদিকে নজরে রাখে। মোবাইল হাতে নিয়েই তার সুইচ অফ কিংবা ‘এরোপ্লেন মোড’ চালু করে দেয় নিমেষেই। তাই সঙ্গে সঙ্গে ওই নম্বরে ফোন করলেও তা কোথায় রয়েছে টের পাওয়া যায় না।
জেলা পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরুলিয়ার বড়হাট, বাসস্ট্যান্ড এলাকা সহ জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় এই গ্যাং কাজ করে। তবে রেল স্টেশন এবং বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকাতেই এরা বেশি থাকে। ভিড়ের মধ্যে থেকে মোবাইল হাতানোর পরই বিভিন্ন বাসে চেপে পৌঁছে যায় চিনাকুড়ি। সেখানে পৌঁছলেই তাদের কাজ শেষ। চিনাকুড়িতে ‘রিসিভারকে’ মাত্র দু’ থেকে তিন হাজার টাকাতেই বিক্রি করে দেয় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার মোবাইল। রিসিভারদের থেকে হাত বদল করে তা পৌঁছয় মালদহের কালিয়াচকে। পুরুলিয়া জেলায় ‘মিসিং’ হওয়া বেশকিছু মোবাইল সেখান থেকেই পরে উদ্ধার হয়েছে।
জেলা পুলিসের এক আধিকারিক জানান, সাধারণ মানুষ মোবাইল চুরির বদলে শুধুমাত্র মোবাইল হারিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেন। ফলে ওই কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে বড়সড় ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয় না। তাছাড়া নাবালক হওয়ায় অনেক সময় ধরা পড়লেও দ্রুত তারা জামিন পেয়ে যায়। ওই কিশোররা মাসোহারা ও মোবাইল বিক্রির মাধ্যমে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত মাসে রোজগার করে।
সম্প্রতি পুরুলিয়া শহরে ওই কিশোরদের ফের আনাগোনার হদিশ পাওয়ার পরই সক্রিয়তা বাড়িয়েছে সদর থানার পুলিস। বড়হাট ও বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিশেষ নজরদারিও চালাচ্ছে পুলিস। যদিও এবিষয়ে পুরুলিয়ার পুলিস সুপার এস সেলভা মুরগানকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি স্পষ্ট করে কিছু বলতে চাননি। মোবাইল চোরেদের সক্রিয়তার বিষয়টিও তিনি মানতে চাননি।