সংবাদদাতা, পূর্বস্থলী: তিনি এলাকার বিধায়ক। এমনকী, রাজ্যের মন্ত্রীও। রবিবার ‘জল সংরক্ষণ দিবস’কে সামনে রেখে বিল সংস্কারের কাজে অংশ নিলেন স্বপন দেবনাথ। ১০০ দিনের কাজের শ্রমিকদের সঙ্গে তিনি এদিন নিজে মাটি কাটেন। এমনকী, পাড় বাঁধানোর জন্য মাথায় করে ৭০ ঝুড়ি মাটি ফেলেন। দিন কয়েক আগেই তিনি জলাশয় পরিষ্কার করার জন্য জলে নেমে কচুরিপানা সাফাই করেছিলেন। এবার মাটি কেটে সকলকে অবাক করে দিয়েছেন। সমুদ্রগড় গ্রাম পঞ্চায়েত ও শ্রীরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে ওই বাঁশদহ বিল সংস্কারের কাজ চলছিল। ১০০ দিনের কাজে এদিন প্রায় ৪০ জন শ্রমিক মাটি কাটার কাজে অংশ নিয়েছিলেন। এদিন সকালে সেখানে আচমকা হাজির হয়ে যান মন্ত্রী। পরণে ছিল লুঙ্গি ও ফতুয়া। মাথায় গামছার পাগড়ি। শ্রমিকরা তখন সবে মাটি কাটার কাজ শুরু করেছেন। মন্ত্রী গাড়ি থেকে নেমে ঝুড়ি মাথায় করে মাটি ফেলার লাইনে দাঁড়িয়ে পড়েন। তাঁকে দেখে সকলেই হতবাক হয়ে যান। কারণ, এক একটি ঝুড়িতে ২৫-৩০ কেজি মাটি বইতে হচ্ছিল। শ্রমিকদের সঙ্গে মন্ত্রী মাটি বইতে শুরু করেন। ওই বিলের দক্ষিণদিকের পাড় বাঁধানো হচ্ছে। দেড় ঘণ্টায় প্রায় তিনি ৭০ ঝুড়ি মাটি ফেলেন। শ্রমিকরা তাঁর দিকে বার বার তাকাচ্ছিলেন। মন্ত্রীও বুঝতে পারছিলেন। তাই কাজের ফাঁকে তিনি বলছিলেন, কোনও কাজে লজ্জা নেই। আপনারা নিজের কাজটুকু করে যান। আমিও কাজ করছি।
বাঁশদহ বিল সংস্কারের সঙ্গে সেখানে বনসৃজনের মাধ্যমে সৌন্দর্যায়ণের কাজ চলছে। মন্ত্রী নিজের উদ্যোগে ওই বিলের চারিদিকে ৩০৬টি অসমের সুপারি গাছ বসিয়েছেন। মন্ত্রী বলেন, এই খাল বিল প্রাকৃতিক সম্পদ। আমাদের সকলে মিলে এইগুলিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। আগে ছোটবেলায় এলাকার উন্নয়নে বাবা-কাকারা হাত লাগাতেন। স্কুল তৈরির সময় এলাকার মানুষ নিজেরা মাটি কাটতেন। এখন সেই সব দিন হারিয়ে যাচ্ছে। তাই এদিন আমি নিজে মাটি কাটা ও ফেলার কাজে অংশ নিয়েছিলাম। বয়স ৬৮ ছাড়িয়ে গেল। তবে, সুযোগ পেলে আবার অংশ নেব।