কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ডেঙ্গু মোকাবিলায় গত বছর বেশ কয়েকটি শহরে পুর কর্তৃপক্ষের যথেষ্ট গাফিলতি উঠে এসেছিল। নদীয়া জেলায় পুরসভার সংখ্যা ১১টি (দু’টি নোটিফায়েড এরিয়া সহ)। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তাদের পুরসভার কাজের তদারকি এবং নজরদারি চালাতে হবে। পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যানদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেই কাজ করতে বলা হয়েছে। জানা গিয়েছে, সময়মতো তাঁদের থেকে কাজের খতিয়ানও নেওয়া হবে।
জেলাশাসক বিভু গোয়েল বলেন, ডেঙ্গু মোকাবিলায় আমরা সব এলাকায় আরও নজরদারি চালানোর চেষ্টা করছি। ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট, চিকিৎসকদের একটি করে পুরসভার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ব্লকে বিডিওদের কড়া নজরদারি রাখতে বলা হয়েছে। এটা অস্বীকার করা উপায় নেই, ডেঙ্গু নিয়ে আমরাও একটু চিন্তায় আছি। মানুষকে সচেতন থাকতে হবে, জল যাতে কোথাও জমতে না পারে তার উপর সবসময় নজর রাখতে হবে।
নির্দেশিকায় সদর মহকুমার এক ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটকে কৃষ্ণনগর পুরসভা এলাকার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সদরের এসিএমওএইচকে নোডাল অফিসার করা হয়েছে। রানাঘাট মহকুমা প্রশাসনের এক ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটকে রানাঘাট পুরসভার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের সুপারকে নোডাল অফিসার করা হয়েছে। শান্তিপুর, কল্যাণী, হরিণঘাটার মতো পুরসভা এলাকাগুলিতেও এক একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আর এসিএমওএইচ অথবা ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে নোডাল করা হয়েছে।
গতবছরের চেয়ে জুন মাসেই ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা এবছর তিনগুণ বেশি নদীয়া জেলায়। করোনা আবহের মধ্যেই জোরালো থাবা বসিয়েছে ডেঙ্গু। বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৫০। গত বছর নদীয়ায় এরকম সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৬। গতবার নদীয়ায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা এপর্যন্ত সর্বকালীন রেকর্ড ছিল। কিন্তু এবছর এখনই যা অবস্থা, তাতে আক্রান্তের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের কর্তারা। স্বাস্থ্যদপ্তরের দাবি, প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে। এব্যাপারে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিভিন্ন পুরসভা এবং ব্লকে সম্প্রতি গাপ্পি মাছ ছাড়া হয়েছে। বাড়ি বাড়ি সার্ভের কাজও একবার হয়েছে। এখন বিভিন্ন জায়গায় মশা মারার তেল ছড়ানো হচ্ছে। পাশাপাশি জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর থেকেও বলা হয়েছে, কারও জ্বর হলে প্রয়োজনে ডেঙ্গু পরীক্ষাও করাতে হবে। গত কয়েক বছর ধরে দেখা গিয়েছে, হরিণঘাটা, কল্যাণী, রানাঘাট পুরসভার মতো কয়েকটি এলাকায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই বেশি। এবছর এখনও পর্যন্ত কৃষ্ণনগর পুর এলাকাতেই পাঁচজন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে এরকম জায়গাগুলিতে করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গু মোকাবিলায় জোর দেওয়া হচ্ছে বলেই প্রশাসনের দাবি।
পাশাপাশি চাপড়া, হরিণঘাটা, হাঁসখালি, রানাঘাট-১, ২, ব্লকে এবছর ডেঙ্গু আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। গতবছর হরিণঘাটা ব্লকে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত মিলেছিল। এবছর হরিণঘাটা সহ এরকম কয়েকটি সংবেদনশীল ব্লককে আরও বেশি করে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব বাড়ে। স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগে রয়েছে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্যদপ্তরের কর্তারা।