কর্মপ্রার্থীরা বেশ কিছু সুযোগের সংবাদে আনন্দিত হবেন। বিদ্যার্থীরা পরিশ্রমের সুফল নিশ্চয় পাবে। ভুল সিদ্ধান্ত থেকে ... বিশদ
রবিবার দু’জনকে তমলুকে সিজেএম কোর্টে তোলা হয়। তদন্তকারী অফিসার দীপক অধিকারী তাদের সাতদিনের পুলিস হেফাজতের আবেদন জানান। ভারপ্রাপ্ত সিজেএম সমতা দাস সেই আবেদন মঞ্জুর করেন। সরকারি আইনজীবী সফিউল আলি খান বলেন, ধৃত দু’জনেরই নাম এফআইআরে আছে। এছাড়াও অন্য কেউ ওই ঘটনায় জড়িত কি না, সেটা পুলিস তদন্ত করে দেখবে। ধৃতদের নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করবে পুলিস।
উল্লেখ্য, শনিবার দুপুরে মেচেদা-হলদিয়া ৪১নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া নন্দকুমার থানার ফতেপুর গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে মাটির নীচে থেকে উদ্ধার করা হয় ৪০বছরের শেখ নুর মহম্মদ দিনের দেহ। গত ৩ জুলাই নুর মহম্মদ ও তাঁর স্ত্রী আসমা ফতেপুর গ্রামে আসে। ওই বাড়িতে স্বামী পরিত্যক্তা আসমার মা একাই থাকে। আসমার ১৬ বছরের বিবাহিত জীবন। কিন্তু, প্রায় গোড়া থেকেই দুলালের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে গিয়েছিল আসমা। স্ত্রীর অবৈধ সম্পর্ক জানার পরই ভাঙতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন নুর মহম্মদ। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য স্ত্রীর ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করে দিয়েছিলেন। এমনকী আসমাকে বাপের বাড়িতে একা যেতে দিতেন না। অবৈধ সম্পর্কের কবল থেকে স্ত্রীকে বের করে আনার জন্যই আসমার স্বামী অনেক কাঠখড় পুড়িয়েছিলেন। কিন্তু, তাতেও সম্পর্কের ছেদ ঘটাতে পারেননি। মাস দেড়েক আগেই একবার মায়ের বাড়িতে দুলালের সঙ্গে আসমাকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় ধরে ফেলেছিলেন এলাকার লোকজন। সেনিয়ে নুর মহম্মদের দক্ষিণ ধান্যঘর গ্রামে সালিশি সভাও বসেছিল। সভায় অপদস্থ হয়েছিল শেখ দুলাল। তারপরই নুর মহম্মদকে ‘উচিত শিক্ষা’ দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল দুলাল। বিষয়টি তখন সেভাবে গুরুত্ব দেননি নুরের পরিবারের লোকজন। শেষমেশ পরিকল্পনা করেই শ্বশুরবাড়িতে ডেকে এনে নুর মহম্মদকে খুন করে বাড়ির ভিতর দেহ পুঁতে দিয়ে তার উপর সিমেন্টের ঢালাই দিয়েছিল। হাড়হিম করা এই ঘটনায় চমকে গিয়েছেন এলাকা বাসিন্দারা। এমন ভয়াবহ ও নৃশংস ঘটনার পরেও ন’দিন একেবারে স্বাভাবিক অবস্থায় কাটিয়েছে আসমা। তবে, কয়েকটা দিন গা ঢাকা দিয়েছিল দুলাল। সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে ভেবে বৃহস্পতিবার সে বাড়ি ফিরে এসেছিল। আর শুক্রবারই নিহত যুবকের পরিবারের চাপে স্বামীকে খুনের ঘটনার কথা স্বীকার করে নেয় আসমা। সঙ্গে সঙ্গে এলাকাবাসী পাকড়াও করে দুলালকে।
পুলিস জানিয়েছে, সরবতের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে নুর মহম্মদকে প্রথমে বেহুঁশ করে দেওয়া হয়েছিল। তারপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্বামীর গলায় পর পর কোপ মারে আসমা। মৃত্যু নিশ্চিত হতেই সে প্রেমিককে ডেকে পাঠায়। তারপর বাড়িতে চার ফুট গর্ত খুঁড়ে সেই দেহ পুঁতে দেয়। সেই এলাকাটি সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই করে দেয় আসমার প্রেমিক। তারা ভেবেছিল, সেখানেই সব শেষ হয়ে গিয়েছে। আর কেউ কিছু জানতে পারবে না। দু’জনে বিভোর ছিল নতুন করে সংসার পাতার স্বপ্নে। কিন্তু, ঘটনার ন’দিনের মাথায় সেই দেহ তোলার পর তাদের স্বপ্ন পূরণ হয়নি। দু’জনেরই ঠাঁই হয়েছে শ্রীঘরে। ধৃতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সোচ্চার গোটা এলাকা।