বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে জেলাজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় মশা মারার তেল স্প্রে করা শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সচেতন করছেন। চিকিৎসকদের একাংশ বলেন, করোনা রোধ করতে গিয়ে প্রাথমিকভাবে আমরা ডেঙ্গু নিয়ে যথেষ্ট সচেতন হইনি। এবার যেভাবে বৃষ্টিপাত হচ্ছে, তাতে এর জন্য বড় মূল্য দিতে হতে পারে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস হালদার বলেন, চলতি মরশুমে জেলায় বেশ কয়েকজন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। আমরা ২০ লক্ষ গাপ্পি মাছ ছাড়তে চলেছি। সার্ভে করে দেখা হবে, এই মাছগুলি কতটা লার্ভা ধ্বংস করল।
মারণ ভাইরাস করোনার জন্য যখন জেলা তথা রাজ্যজুড়ে ত্রাহি ত্রাহি রব, তারই মাঝে পুরনো শত্রু ডেঙ্গুর দাপট বাড়ছে। বর্ষাকালে মশার প্রাদুর্ভাব বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই কয়েক বছর ধরে যথেষ্ট বিস্তার লাভ করছে মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু। বহু মানুষের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। শিল্পাঞ্চলে সাম্প্রতিক কয়েক বছর ধরে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। তাই কয়েক বছর ধরে এই রোগ নিয়ন্ত্রণে বর্ষার আগে থেকেই কোমর বেঁধে নামে স্বাস্থ্যদপ্তর। কিন্তু করোনা আবহে সেই ফুরসত পাননি স্বাস্থ্যকর্মী ও আধিকারিকরা। করোনা নিয়ে একাধিক কর্মসূচি করতে গিয়ে ডেঙ্গু নিয়ে সচেতনামূলক প্রচারও ধাক্কা খেয়েছে। আর সেই সুযোগেই শিল্পাঞ্চলে থাবা বসিয়েছে এই মশাবাহিত রোগ।
তবে, পুরসভা থেকে স্বাস্থ্যদপ্তর এবার করোনার মতো যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মশা নিয়ন্ত্রণে নামছে। ইতিমধ্যেই জেলাশাসকের উপস্থিতিতে গত সপ্তাহে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করা হয়েছে। মশা নিয়ন্ত্রণে জেলাজুড়ে রেকর্ড সংখ্যক গাপ্পি মাছ ছাড়া হতে চলেছে। বিভিন্ন স্থানে যেখানে মশার লার্ভা জন্ম নিচ্ছে, সেই এলাকায় এই মাছ ছাড়া হবে। যাতে এই বিশেষ প্রজাতির মাছ লার্ভাগুলিকে খেয়ে নষ্ট করে মশার উপদ্রব কমাতে পারে। এর পাশাপাশি ৬ জুলাই থেকে স্বাস্থ্য কর্মীরা ডেঙ্গু নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচারে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। পুরসভা এলাকায় মাসে ১০ দিন ও গ্রামীণ এলাকাগুলিতে মাসে ২০ দিন এই কাজ চলবে বলে জানা গিয়েছে।
চিকিৎসক মহলের মতে, শিল্পাঞ্চলে মশার অন্যতম আঁতুড় ঘর হয়ে ওঠে বন্ধ কারখানার জমিগুলি। তালাবন্ধ কারখানার বিভিন্ন অংশে বর্ষার জল জমে থাকে। সেখানে ডিম পেড়ে সহজেই মশারা বংশবিস্তার করে। এবার যেভাবে বর্ষাকালের শুরু থেকেই বৃষ্টিপাত হচ্ছে, তাতে ইতিমধ্যেই অনেক জায়গায় জল জমেছে। এখন কয়েকদিন বৃষ্টিপাত না হলেও ঝাঁকে ঝাঁকে মশা শহর থেকে গ্রামে হানা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই, করোনার পাশাপাশি এবার ডেঙ্গুর জোড়া ফলার আক্রমণ সামলাতে হবে প্রশাসন ও স্বাস্থ্যদপ্তরকে। তবে, আধিকারিকদের দাবি, ডেঙ্গু রোধ করতে হলে শহরের মানুষকেও সচেতন হতে হবে।