বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
বন্দর প্রশাসন ও কোস্টগার্ড সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৮৫-২০০ কিলোমিটার বেগে উম-পুন সাইক্লোন পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূল এলাকা হলদিয়ায় প্রথম আছড়ে পড়ায় শিল্পশহরে গাছের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। টাউনশিপ এলাকাতেই কয়েক হাজার বড় গাছ উপড়ে এবং ভেঙে পড়ে। বন্দরের ডক এরিয়া ও আবাসন এলাকায় বট, অশ্বত্থ, কৃষ্ণচূড়া, মহানিম, মেহগনি, জারুল সহ এক হাজারের বেশি বড় গাছ নষ্ট হয়। ঝড়ের ফলে টাউনশিপ শিল্প আবাসন এলাকার সবুজ বনানী কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। হলদিয়া বন্দরের পরিবেশ পার্কের সিংহভাগ গাছ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বন্দরের প্রশাসনিক অফিস জওহর টাওয়ার যাওয়ার পথে বড় বড় গাছগুলি উপড়ে গিয়ে কার্যত মরুভূমির চেহারা নেয়। টাউনশিপ এলাকায় সব মিলিয়ে পঁচিশ কিলোমিটার রাস্তার দু’পাশে সব গাছই উপড়ে পড়েছে।
হলদিয়া বন্দরের জেনারেল ম্যানেজার (প্রশাসন) প্রবীণকুমার দাস বলেন, ঝড়ের কয়েকদিন পরই বন্দর কর্তৃপক্ষ বড় গাছ বাঁচানোর জন্য টাস্ক ফোর্স তৈরি করে। একদল আধিকারিক নিজেরাই এবিষয়ে উদ্যোগী হন। এই টিমে হর্টিকালচার ও এগ্রিকালচার নিয়ে পড়াশোনা করা কয়েকজন আধিকারিক ও কর্মী রয়েছেন। টাস্ক ফোর্স প্রথমে কোন গাছগুলিকে পুনঃস্থাপন করে বাঁচানো সম্ভব, তা চিহ্নিত করে। তারপর বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে, বন্দরের পণ্য খালাসের জন্য ব্যবহৃত হাইড্রা মেশিন ও পে-লোডার দিয়ে এখন গাছের জীবন বাঁচানোর চেষ্টা চলছে। বন্দরের শ্রমিকদেরও এই কাজে যুক্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, গত একমাসে একশোটি গাছ পুনঃস্থাপন করা হয়েছে। বিভিন্ন রাস্তার পাশের বড় কৃষ্ণচূড়া, মহানিম, বকুল প্রভৃতি গাছকে আগের অবস্থায় ফোরানো হচ্ছে। সবমিলিয়ে দু’শো বড় গাছ পুনঃস্থাপন সম্ভব বলে জানিয়েছে টাস্ক ফোর্স।
টাস্ক ফোর্সের এক আধিকারিক বলেন, বন্দর এলাকা বা টাউনশিপে ৫০-৬০ বছরের বহু পুরনো গাছ নষ্ট হয়েছে। বন্দরের শুরুর সময়কার শতবর্ষ প্রাচীন অনেকগুলি ল্যান্ডমার্ক বট ও অশ্বত্থ গাছ ঝড়ে নষ্ট হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটিকে হরমোন প্রয়োগ করে বাঁচানোর চেষ্টা হচ্ছে। সিংহভাগ গাছকে পুনঃস্থাপন করে বাঁচিয়ে তোলাই এখন চ্যালেঞ্জ। ভিডিও কনফারেন্স করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গাছ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ চাওয়া হচ্ছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ ‘কমিউনিটি পার্টিসিপেশন’ নামে গাছ লাগানোর কর্মসূচি শুরু করছে। গাছ বাঁচানোর দায়িত্ব দেওয়া হবে আবাসিক ও স্কুলপড়ুয়াদের। হলদিয়ার পরিবেশপ্রেমী সংগঠনগুলির সঙ্গেও বন্দর কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করতে আগ্রহী।