পঠন-পাঠনে আগ্রহ বাড়লেও মন চঞ্চল থাকবে। কোনও হিতৈষী দ্বারা উপকৃত হবার সম্ভাবনা। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর এমন কোনও নির্দেশিকা না দিলেও নদীয়ায় একাধিক ঘটনায় লালারসের নমুনা সংগ্রহের পর ছাড়া পাওয়া ব্যক্তির রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। ততক্ষণে ওই ব্যক্তি আরও বহু লোককে সংক্রামিত করেছেন। সংক্রমণের ব্যাপক আশঙ্কাও ছড়িয়েছে কোথাও কোথাও। সম্প্রতি কালীগঞ্জ, চাপড়া, কৃষ্ণগঞ্জ, রানাঘাট-১ ব্লকে এমন বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। এরপরই এব্যাপারে জেলা প্রশাসনের কর্তারা ভাবতে বাধ্য হয়েছেন। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যদপ্তরের অনেক আগেই তৎপর হওয়া উচিত ছিল। কারণ, তাঁরা প্রথম থেকেই এরকম বিষয় দেখে আসছেন। যদিও এব্যাপারে প্রশ্ন শুনে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, যা বলার জেলাশাসক বলবেন। জেলাশাসক এব্যাপারে সরাসরি মন্তব্য করতে চাননি। তাঁর সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, করোনা মোকাবিলায় আমাদের যে যে পন্থা অবলম্বন করার দরকার হবে, তা আমরা করব। বিষয়টি যদিও মানছেন একাধিক বিডিও।
কিছুদিন আগে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার থেকে বাড়ি ফেরার পর কালীগঞ্জের এক যুবকের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছিল। পরে তাঁর স্ত্রী এবং ১৩ বছরের ছেলের রিপোর্টও পজিটিভ আসে। সোয়াব টেস্টের রিপোর্ট আসার আগেই ওই যুবককে কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়া হয়। তাঁর ছেলে-স্ত্রী সংক্রামিত হন। এর মধ্যে তাঁর স্ত্রী নাকাশিপাড়া থানা এলাকায় বাপের বাড়ি যান। এরপর তাঁর ভাইয়ের মেয়েরও পজিটিভ রিপোর্ট আসে। দু’দিনের মধ্যে পরিবারের আরও চারজন করোনা আক্রান্ত হন। রানাঘাট-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিও মহকুমা হাসপাতালে লালারস পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়েছিলেন। এরপর বিকেলে পেট্রোপণ্যের মূল্যবদ্ধির প্রতিবাদে দলীয় পদযাত্রায় বেরিয়ে পড়েছিলেন। পরে রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তাঁর সংস্পর্শে আসা প্রায় ৩০ জনের লালারসের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। কৃষ্ণগঞ্জের প্রতাপপুরেও সম্প্রতি এমন ঘটনা ঘটেছে। এক যুবকের লালারসের নমুনা নেওয়ার পর তাঁকে ছাড়া হয়। পরে রিপোর্ট পজিটিভ আসে। স্কুল-কোয়ারেন্টাইন থেকে ছুটি পাওয়ার পর চাপড়ার এক যুবকেরও করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে বা স্কুল-কোয়ারেন্টাইনে থাকার সাতদিন পরও যদি কোনও উপসর্গ দেখা না যায়, তবে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে। তবে বাকি সাতদিন তাঁকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। কিন্তু দেখা গিয়েছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে শেষ মুহূর্তে লালারস সংগ্রহ হয়েছে। যা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, অনেক আগেই এনিয়ে ভাবা উচিত ছিল স্বাস্থ্যদপ্তরের। এরকম যাতে না হয়, তা নিয়ে জেলাশাসক পরিষ্কার নির্দেশ দিয়েছেন।
নদীয়া জেলায় নতুন করে একজনের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। কালীগঞ্জের ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকের গাড়ির চালক আক্রান্ত হয়েছেন। আধিকারিককেও হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। এদিকে নদীয়ায় ২৫টি এলাকায় লকডাউন শুরু হয়েছে। ওইসব এলাকার মানুষের যাতে সমস্যা না হয়, সেজন্য বিডিও, এসডিওদের উপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি জায়গায় জরুরি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে। আরও কী কী করা যায়, তা নিয়ে এদিন আলোচনা হয়েছে। পুলিস ওইসব এলাকায় নাকা তল্লাশি শুরু করছে।