রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
মহম্মদবাজারের দেউচা-পাঁচামি, দেওয়ানগঞ্জ, হিংলো, হরিণসিঙা প্রভৃতি অঞ্চলে উন্নতমানের কয়লা শিল্প গড়ার পরিকল্পনা দীর্ঘদিনের। কিন্তু, প্রশাসনিক কাজকর্ম ছাড়া শিল্পের ব্যাপারে বিশেষ কিছু এগয়নি। বৃহস্পতিবারই প্রথম গ্রামবাসীদের সঙ্গে রাজ্য সরকার বৈঠকে বসল।
এদিন দুপুর ১২টা ১৫মিনিট নাগাদ রাজ্যের মুখ্য সচিব ও অন্যান্য কর্তারা দেউচা গৌরাঙ্গিনী উচ্চ বিদ্যালয়ে হাজির হন। সেখানে প্রশাসনের সঙ্গে প্রতিনিধিত্বমূলক বৈঠকে বসেন দেউচা-পাঁচামি এলাকার ২০জন বাসিন্দা। গ্রামবাসীদের সঙ্গে প্রশাসনের প্রায় ঘণ্টাখানেক বৈঠক চলে। এদিন মুখ্য সচিবের সফরে কড়া নিরাপত্তার জন্য সিউড়ি থেকে দেউচা পর্যন্ত রাস্তায় পুলিস মোতায়েন করা হয়।
পরে মুখ্য সচিব বলেন, করোনার জেরে প্রায় তিন-চার মাস ধরে উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ ছিল। কিন্তু রাজ্য সরকার এবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, করোনার বিরুদ্ধে যেমন যুদ্ধ চলবে, তেমনি উন্নয়নমূলক কাজও হবে। তিনি বলেন, দেউচা-পাঁচামি কয়লা শিল্প সরকার নিজেই করবে। এখানে মাঝে কোনও ব্যবসায়ী থাকবে না। তাই সরকারের কোনও মুনাফা পাওয়ার ব্যাপার নেই। প্রাকৃতিক সম্পদ মানুষের স্বার্থে কীভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে সেই স্বার্থেই আমরা এদিন বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছি। এখানকার কয়লা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদনের জন্য দেওয়া হবে।
রাজ্য প্রশাসনের দাবি, ৩৫০০ একর জমির উপরে এই শিল্প হবে। ধাপে ধাপে ৫০০-৬০০ একর জমির উপরে প্রথমে মাইনিং হবে। তিন-চারটি ধাপে সমগ্র কাজটি হবে। তবে, উত্তোলনের কাজ শুরু হতে প্রায় দেড়-দু’বছর সময় লাগবে। আপাতত পুজোর পর দেউচা-পাঁচামি এলাকায় মাটির কত নীচে কয়লা রয়েছে বা অন্যান্য পর্যবেক্ষণের কাজ খতিয়ে দেখা হবে।
প্রশাসনের আরও দাবি, একটি অংশে কয়লা উত্তোলনের কাজ শুরু হলে পরবর্তী মৌজায় ফের নতুন করে কাজ হবে। ১০০ শতাংশ মানুষকে পুনর্বাসন দিয়ে শিল্প হবে। ঘর-বাড়ির ব্যবস্থা করা হবে।
এদিন গ্রামবাসীদের পক্ষে বৈঠকে উপস্থিত বীরভূমের আদিবাসী নেতা রবিন সরেন বলেন, কীভাবে কয়লা শিল্প হবে তা নিয়ে সরকারের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। সরকারের কথা আমরা গ্রামের মানুষের সঙ্গে আলোচনা করব। তারপর সিদ্ধান্ত নেব। তবে, এদিন পুনর্বাসন প্যাকেজ নিয়ে সেভাবে কোনও আলোচনা হয়নি। আমরা ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত বিষয়ের ক্ষেত্রে চাকরি, জমির দাম প্রভৃতি নিয়ে প্রশ্ন করেছি। আদিবাসীদের স্বার্থ রক্ষা না হলে আন্দোলন হবে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বর্তমানে দেউচা-পাঁচামি এলাকায় পাথর খাদান চলছে। সেই খাদানের জমিতে কয়লা শিল্প হওয়ার ক্ষেত্রে যে ধরনের সুবিধা পাওয়া উচিত তা দিতে হবে। এদিন রাজ্য প্রশাসনও সরাসরি গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে শিল্প গড়ার আশ্বাস দিয়েছে। তাই পরবর্তী সময়েও বিষয়গুলি আলোচনা করা হবে।