গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন ভিন রাজ্য থেকে যাঁরা ফিরছেন, তাঁদের সংখ্যাগরিষ্ঠই পরিযায়ী শ্রমিক। বাকি কিছু সাধারণ মানুষও রয়েছেন। যাঁরা ভিন রাজ্যে চিকিৎসা করাতে গিয়ে বা অন্য কাজে গিয়ে লকডাউনে আটকে পড়েছিলেন। গত ২৭ মে রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তর থেকে নির্দেশিকা জানানো হয়েছে, মহারাষ্ট্র, দিল্লি, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ ও তামিলনাড়ু এই পাঁচটি রাজ্য থেকে যে পরিযায়ী শ্রমিক বা সেখান থেকে যাঁরাই ফিরছেন, তাঁদের প্রত্যেককেই সরকারি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রাখতে হবে। অর্থাৎ তাঁরা হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে পারবেন না। তাই জেলায় আরও সরকারি কোয়ারেন্টাইন সেন্টার বাড়ানো হচ্ছে। কারণ, জেলায় প্রতিদিন ভিনরাজ্য থেকে ফেরতদের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। সরকারি কোয়ারেন্টাইন সেন্টার করার জন্য কৃষিভবন, নতুন অব্যবহৃত সরকারি বিল্ডিং, কৃষকবাজার, কলেজ, পলিটেকনিক কলেজ, আইটিআই কলেজ এবং বন্ধ থাকা হাইস্কুল ও প্রাথমিক স্কুলও নেওয়া হচ্ছে।
প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, বুধবার পর্যন্ত পূর্ব বর্ধমান জেলায় মোট ৯৪৬টি সরকারি কোয়ারেন্টাইন সেন্টার খোলা হয়েছে। বুধবার পর্যন্ত ভিন রাজ্য থেকে ফেরা মোট ১০ হাজার ৮৯০ জনকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রাখা হয়েছে। এদিকে, সরকারি কোয়ারেন্টাইনে যেমন ভিড় বাড়ছে, তেমনই জেলায় হোম কোয়ারেন্টাইনের সংখ্যাও হাজারে হাজারে বাড়ছে। গত ১ মে থেকে বুধবার পর্যন্ত জেলায় হোম কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন মোট ৪০ হাজার ১৬৩ জন। এই হোম কোয়ারেন্টাইনে যাঁরা থাকছেন, তাঁদের কোনও উপসর্গ দেখা দিলে, অথবা অসুস্থ হলে তাঁদের সরকারি কোয়ারেন্টাইনে এবং হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হচ্ছে। ১ মে থেকে এখনও পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টাইন থেকে ১৩ হাজার ২১৮ জনকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার ও আইসোলেশনে স্থানান্তর করতে হয়েছে। ফলে, সরকারি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের উপর ক্রমশ চাপ বাড়ছে।
যেখানে সরকারি কোয়ারেন্টাইন সেন্টার করা হচ্ছে, সেখানে সমস্ত পরিকাঠামোও তৈরি করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রতিদিন চিকিৎসক ও নার্সরা তাঁদের মেডিক্যাল চেকআপও করছেন। প্রসঙ্গত, এই সরকারি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে মানসিকভাবে অবসাদ কাটাতে বর্ধমানের কালনা রোডে মডেল কোয়ারেন্টাইন সেন্টারও করা হচ্ছে। সেখানে এলইডি টিভি, ওয়াইফাই জোন সহ একগুচ্ছ বিনোদনমূলক পরিষেবা দিয়ে সাজানো হচ্ছে। অন্যদিকে, সরকারি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে খাবার নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ উঠছিল। অনেকে প্রশাসনের দেওয়া খাবার খেতে চাইছিলেন না। ভিন রাজ্য থেকে বাড়ির কাছে ফিরে তাঁরা বাড়ির খাবার চাইছিলেন।
কিন্তু, সংক্রমণের জন্য বাড়ির লোকজন সেন্টারের ভিতরে খাবার দিয়ে যেতে পারতেন না। ২৭ মে’র নির্দেশিকায় বাড়ির খাবার খাওয়ারও সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, সরকারি কোয়ারেন্টাইনে যাঁরা থাকবেন, তাঁরা পরিবারের খাবার খেতে পারবেন। তবে, পরিবারের লোকজনকে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে খাবার দিয়ে যেতে হবে।
এদিকে, জেলায় কোয়ারেন্টাইন সেন্টার বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ যাত্রীদের রাতে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বর্ধমান শহরের দু’টি হাইস্কুল নিয়েছে জেলা প্রশাসন। কারণ, বর্ধমান স্টেশনে অনেকেই গভীর রাতে নামছে। এখন হোটেলও বন্ধ। তাই তাঁদের থাকার জায়গা নেই। প্ল্যাটফর্মে যাতে ভিড় না জমে তার জন্য দু’টি স্কুল নির্দিষ্ট করা হয়েছে। সেখানে তাঁদের খাওয়া-দাওয়ারও ব্যবস্থা করা হয়েছে।