পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
এসিপি(পশ্চিম) শান্তব্রত চন্দ্র বলেন, যেসব এলাকায় ওয়ার্কশপে লেদ মেশিন রয়েছে, তাদের বিস্তারিত তথ্য নেওয়া হচ্ছে। আমরা একটি ডেটা ব্যাঙ্ক তৈরি করে রাখব।
অবৈধ অস্ত্র কারখানার হদিশ মেলার পর তার রেশ এখনও রয়েছে কুলটি থানার নিয়ামতপুরে। গত শুক্রবার রাতে কলকাতা পুলিসের এসটিএফ শাখা পুরনো একটি মামলা সূত্রে স্থানীয় পুলিসকে সঙ্গে নিয়ে হানা দেয় নিয়ামতপুরের নুরনগরে। মেলে বিপুল অসম্পূর্ণ অস্ত্র। ঘটনার পর থেকেই পুলিসের নজরদারি বেড়েছে এলাকায়। এবার পুলিস এলাকার বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকা লেদ মেশিনগুলির অবস্থান জানতে তৎপর হয়েছে। সোর্স মারফত খবর নিয়ে যেখানেই লেদের কাজ হয়, সেখানেই হানা দিচ্ছে পুলিস। পাশাপাশি সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে বিদ্যুৎ সংযোগের বিষয়টি। লেদ মেশিন চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় থ্রি ফেজ লাইন ছিল অবৈধ অস্ত্র কারখানাতেও। তাই গোপনে লেদ মেশিন চালানো আটকাতে সেই সূত্রেকেই কাজে লাগাচ্ছে পুলিস। কুলটি থানার ওসি সোমনাথ ভট্টাচার্য বিদ্যুৎ দপ্তরের কাছে এ ব্যাপারে তথ্য চেয়েছেন।
অন্যদিকে, পুরসভার স্তরেও এলাকার ভাড়াটিয়াদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। পাড়ার মোড়ে মোড়ে এনিয়ে গুঞ্জন অব্যাহত। মূলত স্থানীয় কিছু সমাজবিরোধীর সাহায্যে ঝাড়খণ্ডের কারবারিরা এই অস্ত্র কারখানা গড়ে তুলেছিল। ঝাড়খণ্ডের পাঁচজন গ্রেপ্তারও হয়েছে। কিন্তু এত জায়গা ছেড়ে কেন নিয়ামতপুরকেই বেছে নিয়েছিল তারা, তা নিয়ে নানা তথ্য সামনে আসছে। সবচেয়ে বড় বিষয় কাঁচামালের সহজলভ্যতা। নিয়ামতপুরে গজিয়ে উঠেছে বহু লেদের ওয়ার্কশপ। এখানে লোহা থেকে বড় বড় মেশিন প্রস্তুত করা হয়। এছাড়াও গ্রিল, আলমারির প্রচুর ফ্যাক্টরি রয়েছে। তার প্রধান কারণ লোহার বিপুল জোগান। অদূরেই রয়েছে ইস্কো। এছাড়াও কোলিয়ারি সহ বিভিন্ন কারখানা থেকে সহজেই অবৈধ পথে লোহা চলে আসে নিয়ামতপুরে। এলাকায় লোহা মাফিয়াদের তিনটি কাঁটাও আছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। চোরাই লোহা স্থানীয় ব্যবসায়ীরা সহজেই পেয়ে যায়। এছাড়া বৈধ পথেও সস্তায় লোহা পাওয়া যায় কিছুক্ষেত্রে। তাই লোহার আধিক্যের জন্যই এই ধরনের শিল্প এখানে গড়ে উঠেছে। পাড়ায় পাড়ায় বিভিন্ন লেদ মেশিনে নানা সামগ্রী তৈরি হয় প্রায় প্রতি বাড়িতেই। তাই দুষ্কৃতীরা বুঝেছিল এই এলাকায় অস্ত্র তৈরি হলে সহজে তা সাধারণ মানুষের নজরে আসবে না। এছাড়া স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীর সাহায্য পেয়েছিল বলেই অনেকের ধারণা। তাদের মধ্যে স্থানীয় দু’জনকে এখানকার পুলিস আটক করেছিল। মঙ্গলবার রাতে তাদের এসটিএফ গ্রেপ্তার করে নিয়ে গিয়েছে।
এছাড়াও এলাকায় একাধিক নিষিদ্ধপল্লি রয়েছে। আত্মগোপন করার ক্ষেত্রে অনেকেই তা উপযুক্ত জায়গা মনে করে। সবচেয়ে বড় বিষয় পাশেই রয়েছে ঝাড়খণ্ড। তাই সীমানা পার হলেই স্থানীয় পুলিসের হাতের নাগালের বাইরে চলে যায় দুষ্কৃতীরা। এই সব নানা সুবিধাজনক অবস্থান বুঝেই তারা এখানে অস্ত্র কারখানা জোরকদমে চালু করে।