বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সমুদ্র উপকূল এলাকায় প্রায় ১৫০০টি ট্রলার এবং তিন হাজার ভুটভুটি নিয়ে কয়েক হাজার মৎস্যজীবী মাছ ধরতে যান। রামনগর, কাঁথি, খেজুরি, নন্দীগ্রাম, পটাশপুর, ভগবানপুর এলাকায় প্রায় ৪০হাজার মানুষ এই জীবিকার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। এছাড়াও মৎস্য বিপণন, সংরক্ষণ, ট্রান্সপোর্ট পরিষেবার সঙ্গে আরও কয়েক হাজার মানুষ যুক্ত রয়েছেন। গত ২৪মার্চ লকডাউন শুরু হওয়ার সময় থেকেই সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া বন্ধ। তারউপর ২০মে ভয়াবহ উম-পুন সাইক্লোনে উপকূল এলাকা কার্যত ধ্বংসস্তূপের চেহারা নিয়েছে। এই অবস্থায় মৎস্যজীবীরাও সমুদ্রে যেতে অধীর অপেক্ষায় রয়েছেন। ইলিশের হাত ধরেই ধীরে ধীরে তাঁদের দুর্দশা ঘুচবে বলে আশা করছেন তাঁরা।
জুনপুট কোস্টাল থানার শ্যামরাইবাড়ি গ্রামের প্রান্তিক মৎস্যজীবী সুকুমার ভুঁইঞার বাড়ি সাইক্লোনে ভেঙে পড়েছে। সুকুমারবাবু বলেন, ১৫এপ্রিল থেকে ১৪জুন পর্যন্ত ‘ব্যান পিরিয়ডে’ সমুদ্রে মাছ ধরা বন্ধ থাকে। কিন্তু, লকডাউনের জেরে তার আগে থেকেই এবার আমাদের সমুদ্রে যাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাতে আমার মতো হাজার হাজার মৎস্যজীবীর পরিবার প্রবল আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে পড়েছে। তার উপর উম-পুন এসে ঘরবাড়ি নষ্ট করে দিল। রোজগারের আশায় এখন সমুদ্রে যাওয়ার অপেক্ষায় দিন কাটাচ্ছি।
সাইক্লোনের তাণ্ডবে জেলায় অনেক ট্রলার, লঞ্জ, ভুটভুটি এবং ছোট নৌকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলা মৎস্য দপ্তরের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, সাতটি ব্লকে ১৭২টি নৌকা ও ট্রলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই মুহূর্তে সমুদ্র উপকূলে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত নৌকা ও ট্রলার সারানোর কাজ চলছে। তাই মৎস্য শিকার শুরু হলেও বেশকিছু ভুটভুটি ও ট্রলার মেরামতির জন্য উপকূলে আটকে থাকবে। সহ মৎস্য অধিকর্তা(মেরিন) সুরজিৎ বাগ বলেন, ১৫জুন থেকে সমুদ্রে মৎস্য শিকার শুরু হচ্ছে। কিন্তু, মাছ ধরার পর নিলাম এবং মাছ নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত যাবতীয় কাজকর্মে সামাজিক দূরত্ববিধি কীভাবে বজায় রাখা যায়, তানিয়ে ৭জুন দীঘায় মিটিং আছে। সেখানে সভাধিপতি সহ অন্যান্যরা থাকবেন। তারপর জেলাশাসকের সঙ্গে এনিয়ে আলোচনা হবে। দীঘা ফিশারমেন অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রণবকুমার কর বলেন, কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকার আগামী ৮জুন থেকে প্রায় সমস্ত রকমের কাজকর্ম শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে ১৫জুন থেকে সমুদ্রে মৎস্য শিকারে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে। ১৫এপ্রিল থেকে ১৪জুন পর্যন্ত ‘ব্যান পিরিয়ড’ থাকে। সমুদ্রে মৎস্য শিকার শুরুর সঙ্গে সঙ্গে দীঘা মোহনা মার্কেটও চালু হবে।
বুধবার মৎস্য দপ্তরের উপ অধিকর্তা সিদ্ধার্থ সরকার কলকাতা থেকে পূর্ব মেদিনীপুরে উপকূলবর্তী এলাকায় পৌঁছে উম-পুনে ক্ষয়ক্ষতি ঘুরে দেখেন। এদিন জুনপুটে তিনি জেলার মৎস্য আধিকারিকদের সঙ্গে ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে আলোচনাও করেন।