পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
লকডাউন শুরুর কয়েকদিন পর থেকে মানুষ অন্য রাজ্য থেকে বিভিন্নভাবে ফিরতে শুরু করেছেন। সেই সঙ্গে ভিনরাজ্যে চিকিৎসা করাতে গিয়ে আটকে পড়া মানুষজনও ফিরছেন। বর্তমানে নিত্যদিন শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন ধরে হাজার হাজার মানুষ জেলায় ফিরছেন। এতদিন তাঁদের সরকারি কোয়ারেন্টাইনে রেখে লালারস সংগ্রহ করে হোম কোয়ারেন্টাইন পাঠানো হচ্ছিল। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এখনও পর্যন্ত যতজন করোনা পজিটিভ হয়েছেন অধিকাংশই উপসর্গহীন পরিযায়ী। যাঁরা সংক্রামিত রাজ্যে শ্রমিকের কাজে গিয়েছিলেন। জেলায় এই মুহূর্তে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দেড়শো ছাড়িয়েছে। তার মধ্যে বেশ কয়েকটি শিশুও রয়েছে। যারা বাবা-মায়ের সঙ্গে রেড জোন মুম্বই থেকে ফিরে এসেছে। প্রচুর সংখ্যক পরীক্ষা হওয়ার ফলেই এই জেলায় করোনা আক্রান্তের হার বেড়েই চলছিল। সেই সঙ্গে বাড়ছিল কন্টেইনমেন্ট জোনের সংখ্যা। এই মুহূর্তে সেই জোনের সংখ্যা ৪০। যার মধ্যে রামপুরহাট মহকুমাতেই ৩২।
কিন্তু, এবার সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী উপসর্গ থাকলে তবেই পরিযায়ীদের করোনা পরীক্ষা করা হবে। রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলার ডেপুটি সিএমওএইচ(২) ডাঃ স্বপনকুমার ওঝা বলেন, নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, গুজরাত, দিল্লি ও মধ্যপ্রদেশে থেকে ফেরা ব্যক্তিদের সাতদিন সরকারি কোয়ারেন্টাইনে রাখতেই হবে। ওই সময়সীমার মধ্যে কোনও উপসর্গ দেখা দিলে তবেই তাঁর করোনা পরীক্ষার জন্য লালারস সংগ্রহ করা হবে। যদি কোনও উপসর্গ দেখা না দেয়, তাহলে সাতদিন পর ছেড়ে আরও ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হবে। তবে, যাঁদের পরীক্ষায় পজিটিভ ধরা পড়বে, তাঁদের করোনা হাসপাতালে স্থানান্তরের পাশাপাশি আক্রান্তদের খুব কাছাকাছি সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের নমুনা সংগ্রহ করা হবে।
চিকিৎসকদের অনেকেই বলছেন, করোনা ভাইরাস মানুষকে কোনওভাবে অসুস্থ না করেও তার ভিতরে ১৪-২১ দিন পর্যন্ত বিস্তার করতে পারে। এরকম ব্যক্তিদের তাই কোভিড-১৯’এর ‘অ্যাসিম্পটম্যাটিক’(রোগের কোনও উপসর্গ নেই) বা লক্ষণবিহীন বাহক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এই ব্যক্তিরাই ভাইরাসটি ছড়ানো বা ‘কমিউনিটি স্প্রেডিং’-এ মূল ভূমিকা পালন করেন। এধরনের সংক্রমিত ব্যক্তিরাই এই রোগকে স্টেজ-২ থেকে স্টেজ-৩ পর্যায়ে নিয়ে যেতে সবচেয়ে সাহায্য করেন। এরকম কতজন লক্ষণবিহীন ভাইরাস বাহক অজান্তে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, তা ব্যাপকহারে পরীক্ষা না হলে বলা সম্ভব নয়। যদিও প্রশাসনিক কর্তারা বলছেন, আইসিএমআরের গাইডলাইনের বাইরে তো আর যাওয়া যাবে না।
এব্যাপারে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের রামপুরহাট মহকুমার সম্পাদক ডাঃ দেবব্রত দাস বলেন, এক বা দু’হাজার নয়। লক্ষ লক্ষ মানুষ ভিনরাজ্য থেকে ফিরে আসছেন। তাঁদের সকলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা কতটা সম্ভব জানি না। সেজন্য একটা পথ তো নিতেই হবে। উপসর্গহীনদের পরীক্ষা না করে কোয়ারেন্টাইনে রাখলে অসুবিধা হওয়ার তো কথা নয়। কারণ, তিনি তো অন্য কারও সংস্পর্শে আসছেন না। এবার কোয়ারেন্টাইন সময়সীমার মধ্যে তাঁর কোনও উপসর্গ দেখা না দিলে ধরেই নিতে হবে তিনি নেগেটিভ। বিশেষজ্ঞরা সবকিছু দেখেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।