কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
বিশ্ব পরিবেশ দিবস ৫জুন থেকে বিভিন্ন শিল্প সংস্থা এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে হলদিয়াজুড়ে গাছ লাগানোর আবেদন জানিয়েছে। এর পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড়ে উপড়ে পড়া বড় গাছ পুনঃস্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও হলদিয়া পুরসভা। গ্রিন সিটি মিশনে শিল্পশহর সবুজায়নে কয়েক লক্ষ টাকার গাছ লাগাবে হলদিয়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ(এইচডিএ)।
বিধ্বংসী ঝড়ে কয়েক লক্ষ বৃক্ষজাতীয় গাছ উপড়ে পড়ায় হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে ব্যাপকভাবে দূষণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ধূলিকণা ও বিপজ্জনক গ্যাসীয় দূষণ ঠেকাতে বিভিন্ন কারখানার চারপাশে কয়েক দশক ধরে তিল তিল করে গড়ে তোলা গাছ ঝড়ের ধাক্কায় কার্যত উধাও হয়ে গিয়েছে। হলদি নদীর পাশে বালুঘাটায় বনদপ্তরের ঝাউ ও ম্যানগ্রোভ জঙ্গলও ঝড়ে বিধ্বস্ত। শহরের কয়েক হাজার নারকেল গাছও নষ্ট হয়েছে।
সবুজে ঘেরা হলদিয়ার টাউনশিপ শিল্পআবাসন এলাকাতেই শুধু দশ হাজারের বেশি গাছ নষ্ট হয়েছে। ২৯টি ওয়ার্ডে দু’লক্ষের বেশি বড় গাছ উপড়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঝড়ে গাছ পড়ে যাওয়ার সুযোগে দুষ্কৃতীরা রাস্তার পাশের দাঁড়িয়ে থাকা বা সামান্য হেলে পড়া লক্ষ লক্ষ টাকার গাছ কেটে পাচার করে দিচ্ছে। পরিবেশকর্মীদের অভিযোগ, যে গাছগুলিকে উদ্যোগ নিয়ে বাঁচানো যেত, সেগুলি কাঠের লোভে কেটে ফেলা হচ্ছে। এবিষয়ে পুরসভার নজরদারি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
শিল্পশহরের সবুজ ধ্বংস নিয়ে শিল্প সংস্থাগুলির অধিকারিকদের পাশাপাশি উদ্বিগ্ন চিকিৎসক ও পরিবেশপ্রেমীরা। তাঁরা বলেন, হলদিয়ার পরিবেশের ক্ষতির ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যের পাশাপাশি তাঁদের কর্মসংস্থানের উপরেও ব্যাপক প্রভাব পড়বে। ২০১০ সালে হলদিয়ার দূষণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে কেন্দ্রের দূষণ নিষেধাজ্ঞা অর্থাৎ মরিটরিয়াম জারি হয়েছিল। একারণে শিল্প সংস্থাগুলিতে বিনিয়োগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কর্মসংস্থানে তার প্রভাব পড়ে। এইচডিএ সূত্রে জানা যায়, দূষণ নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর গত ৬-৭বছরে প্রায় ২০হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয় এবং কয়েক হাজার মানুষ কাজ পান।
বিভিন্ন শিল্প সংস্থার আধিকারিকরা বলেন, লকডাউন পিরিয়ডে কারখানা বন্ধ থাকায় হলদিয়ার ধূলিকণা দূষণমাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ায় আশার আলো দেখা গিয়েছিল। চিকিৎসক ও ওষুধের দোকানদাররা বলেন, হলদিয়ার দূষণ কমায় ইনহেলার ব্যবহার ৭০শতাংশ কমে গিয়েছিল। প্রচুর গাছ নষ্ট হওয়ায় ধূলিকণা দূষণ ব্যাপকভাবে বাড়বে বলে আশঙ্কা চিকিৎসক ও পরিবেশবিদদের। তাঁরা বলেন, কারখানার চারপাশের বা শহরের বড় গাছগুলি ক্ষতিকারক ধূলিকণা ও বিষাক্ত রাসায়নিক গ্যাস শুষে নিতে পারত। এবার তার মাত্রা আরও কয়েকগুণ বাড়বে।
হলদিয়া থানার আইসি কুদরত ই খোদা বলেন, ঝড়ে প্রচুর গাছ পড়ে যাওয়ায় হলদিয়ার পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। সেজন্য রবিবার থেকে পুলিসের উদ্যোগে গাছ লাগানো শুরু হয়েছে। প্রতি সপ্তাহে হলদিয়া থানার উদ্যোগে স্থানীয় কারখানার শ্রমিকদের নিয়ে ১০০টি করে বৃক্ষজাতীয় গাছ লাগানো হবে। এইচডিএর সিইও হরিশঙ্কর পানিক্কর বলেন, গ্রিন সিটি মিশনে হলদিয়ায় গাছ লাগানোর জন্য ৬৯লক্ষ টাকার টেন্ডার ডাকা হয়েছিল। লকডাউনের জন্য তা থমকে ছিল। এবার সেই প্রক্রিয়া শুরু হবে। -নিজস্ব চিত্র