কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
গত ২০ মে এই উম-পুনে পূর্ব বর্ধমান জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মঙ্গলকোটে দেওয়াল চাপা পড়ে একজন বৃদ্ধের মৃত্যুও হয়েছে। জখমও হয়েছেন বেশ কয়েকজন। এই জেলায় ক্ষয়ক্ষতির পূর্বাভাস না থাকলেও ওইদিন ৭৫-৮০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হওয়া এবং জেলায় গড়ে ১১৮.৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল। ফলে, বাড়ি ভেঙে পড়া সহ সমস্ত ক্ষেত্রেই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, উম-পুনের জেরে গোটা জেলায় মোট ২ হাজার ৯৪টি বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই পরিবারগুলিকেই ২০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে। সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ওই টাকা যাবে। সরকারিভাবে এই অনুদানের নাম দেওয়া হয়েছে, ‘হাউস বিল্ডিং গ্র্যান্ট’। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের পক্ষ থেকে এই অনুদান দেওয়া হচ্ছে।
গত শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পূর্ব বর্ধমান জেলার ৫ জনের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে ওই অনুদান দিয়েছিলেন। সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি ছাড়াও জেলায় আরও ১০ হাজার ৬৩৯টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের কত করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে তা এখনও চূড়ান্ত হননি।
পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক বিজয় ভারতী বলেন, উম-পুনে যাঁদের বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এখন তাঁদের ২০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে। আমরা বরাদ্দের টাকাও পেয়ে গিয়েছি। তিনি বলেন, আমাদের জেলা বাংলা আবাস যোজনায় নতুন করে ২১ হাজার ৬০৯টি বাড়ির অনুমোদন পেয়েছে। যাঁদের বাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে গিয়েছে, তাঁরা সকলেই গরিব মানুষ। তাই তাঁদের যাতে বাংলা আবাস যোজনায় নতুন বাড়ি দেওয়া যায়, আমরা তারও পরিকল্পনা করছি। এখন আপাতত ওই অনুদানের টাকা এবং ২৮ হাজার টাকা করে মজুরি দেওয়া হবে।
অন্যদিকে, উম-পুনের জেরে রাজ্যের শস্য ভাণ্ডার জেলা নামে পরিচিত এই পূর্ব বর্ধমান জেলা কৃষিতেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বোরো ধান, তিল, সব্জি, পাট, ফল, মুগডাল, চিনে বাদাম, আখ, ভুট্টা, ফুল সহ সব চাষেই ক্ষতি হয়ছে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, যেখানে ফসলের ক্ষতি হয়েছে, সেখানে চাষিদের উন্নতমানের বীজ ও সামগ্রী দেওয়ার জন্য এই জেলায় ৩৪ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। জেলাশাসক বলেন, এছাড়াও জেলায় যাঁদের কৃষকবন্ধু প্রকল্পে নাম রয়েছে, তাঁরা বছরে আড়াই হাজার টাকা করে ৫ হাজার টাকা পান। উম-পুনের জেরে যে এলাকায় ক্ষতি হয়েছে, সেখানকার কৃষকবন্ধু প্রকল্পের উপভোক্তারা অতিরিক্ত ৫ হাজার টাকা করে পাবেন। সরাসরি তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকে যাবে। জেলাশাসক বলেন, আমাদের জেলায় ২৩টি ব্লক রয়েছে। তার মধ্যে ১৫টি ব্লকের ১২২৬টি মৌজাকে ক্ষতিগ্রস্ত বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানকার কৃষকেরা এই সুবিধা পাবেন। জেলায় আরও কোন কোন এলাকা কৃষিতে ক্ষতি হয়েছে, তার সমীক্ষা চলছে। পরবর্তীকালে সেখানকার কৃষকরাও এই সুবিধা পাবেন।