রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তরের মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র বলেন, সাইক্লোন বিধ্বস্ত বিভিন্ন জেলায় পিএইচই দপ্তরের কাজের জন্য আড়াইশো কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই টাকায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় নানারকম কাজ হবে। তাতে অনেক জায়গায় টিউবওয়েল বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নন্দীগ্রাম-১ ও ২, খেজুরি-১ ও ২ এবং রামনগর-১ ও ২ব্লকে ৩০০টি টিউবওয়েল দ্রুত বসানো হবে।
গত ২০মে সুপার সাইক্লোনের তাণ্ডবের পর এখনও বিদ্যুৎহীন নন্দীগ্রাম-১ ও ২, খেজুরি-১ ও ২ এবং রামনগর-১ ও ২ সহ কাঁথির বিস্তীর্ণ এলাকা। সাইক্লোনের দাপটে অনেক জায়গায় সাবমার্সিবল পাম্পের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কোথাও ট্যাঙ্ক ভেঙে পড়েছে আবার কোথাও সেটা উড়িয়ে নিয়ে চলে গিয়েছে। নন্দীগ্রাম, খেজুরিতে এরকম সাবমার্সিবলের কয়েকশো ট্যাঙ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রচণ্ড জলের সমস্যা চলছে। বেশিরভাগ জায়গায় জল কিনে খেতে হচ্ছে। এরকম পরিস্থিতিতে পিএইচই দপ্তরের মাধ্যমে দ্রুত টিউবওয়েল বসানোর গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাতে সঙ্কট খানিকটা মিটবে বলে অনেকেই মনে করছেন।
নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের খোদামবাড়ি-১ পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কৃষ্ণনগর গ্রামের মানসী দাস এদিন গ্রাম থেকে অনেকটা দূরে পানীয় জল সংগ্রহ করতে যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, উম-পুন সাইক্লোনে আমাদের কাঁচাবাড়ি ভেঙে তছনছ হয়ে গিয়েছে। ২০মে-র পর থেকে গোটা এলাকা বিদ্যুৎহীন। পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। অনেকটা দূর থেকে জল আনতে হয়। এজন্য ১০টাকা করে দিতে হয়। সাইক্লোনের পর পঞ্চায়েত সদস্য এসে ভাঙাবাড়ির ছবি নিয়ে গিয়েছেন। তারপর থেকে কারও দেখা পাইনি।
নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের নন্দীগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত তাজপুর গ্রামের বাসিন্দা মৌসুমী মণ্ডল বলেন, টানা ১১দিন বিদ্যুৎহীন গোটা এলাকা। পানীয় জলের হাহাকার চলছে। এই অবস্থায় কিছু নলকূপ বসালে সত্যিই আমাদের খুব উপকার হবে।
বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার নন্দীগ্রাম সাপ্লাই এলাকায় মোট ১৫০০ইলেক্ট্রিক খুঁটি ভেঙেছে। খেজুরি সাপ্লাই এলাকায় ভেঙে পড়া খুঁটির সংখ্যা ২০২০টি। আর দীঘা সাপ্লাই এলাকায় সাড়ে তিনশো খুঁটি ভেঙেছে। দীঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন সংস্থার এলাকায় ফেব্রুয়ারি মাস নাগাদ আন্ডার গ্রাউন্ড কেবলের কাজ শেষ হয়েছে। সেজন্য বণ্টন সংস্থার ক্ষয়ক্ষতি কিছুটা বাঁচানো গিয়েছে। কিন্তু, রামনগর-১ ও ২ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা তীব্র। সাইক্লোনের তাণ্ডবের পর পিএইচই দপ্তরের মাধ্যমে ৫০টি জেনারেটর ভাড়া করে বিভিন্ন জায়গায় জলের সাপ্লাই দেওয়া হচ্ছে।
বিদ্যুৎ সরবরাহ দ্রুত স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সমস্ত এজেন্সি কাজ করছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কয়েকটি এজেন্সিকে যুক্ত করা হয়েছে। এরপর পুরুলিয়া থেকেও বেশ কয়েকটি এজেন্সি এসে কাজে হাত লাগিয়েছে। মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে এজেন্সির অধীনে যে সমস্ত লোকজন এসেছেন, তাঁরা নন্দীগ্রামে কাজ করছেন। দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্রামীণ জ্যোতি যোজনার কাজে যুক্ত কর্মীরাও কাজ করছেন। কিন্তু, দুর্যোগের ১১দিনের মাথাতেও নন্দীগ্রাম, খেজুরি বিদ্যুৎহীন। এই অবস্থায় পানীয় জলের সমস্যা সমাধানে আপাতত ৩০০টিউবওয়েল বসাচ্ছে পিএইচই দপ্তর।