কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমান জেলায় গত ১৮ মার্চ হোম কোয়ারেন্টাইন শুরু হয়েছে। ওইদিন থেকে সোমবার অর্থাৎ ২৫ মে পর্যন্ত পূর্ব বর্ধমানে ৫০ হাজার ৬১ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ৩৩ হাজার ৫৬৮ জন ২০ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইন থেকে মুক্ত হয়েছেন। ৮০১ জন ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন শেষ করেছেন। তাঁদের আরও ১৪ দিন রাখা হয়েছে। ১৪ হাজার ২৮৬ জনের এখনও ১৪ দিনই পূরণ হয়নি। ২৩৯২ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইন থেকে সরকারি কোয়ারেন্টাইন সেন্টার এবং আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে। গত ১৪ মে পর্যন্ত জেলায় মোট ৩৫ হাজার ৩২৪ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছিল। কিন্তু, সোমবার পর্যন্ত অর্থাৎ গত ১১ দিনেই নতুন করে আরও ১৫ হাজারের বেশি মানুষকে হোম কোয়ান্টাইনে পাঠানো হল।
শুধু তাই নয়, প্রতিদিন এখন হাজার হাজার মানুষকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হচ্ছে। দিন দিন সেই সংখ্যাটাও বাড়ছে। গত সাতদিনের হিসেব দেখলেই তা পরিষ্কার। যেমন, ১৯ মে ১১৫৪ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। ২০ মে ১২০৭ জন, ২১ মে ১৪৩৪ জন, ২২ মে ২০১২ জন, ২৩ মে ২২৫৫ জন, ২৪ মে ১৯১৫ জন এবং ২৫ মে একদিনেই ২৪৮৯ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, হোম কোয়ারেন্টাইন ছাড়াও জেলায় ৩৬টি সরকারি কোয়ারেন্টাইন সেন্টার খোলা হয়েছে। এছাড়াও প্রয়োজনে একাধিক কলেজ ও স্কুলকে কোয়ারেন্টাইনের জন্য নেওয়া হচ্ছে। সেখানেও কয়েকশো পরিযায়ী শ্রমিককে রাখা হয়েছে।
এদিকে, পরিযায়ী শ্রমিকেরা ফিরতেই জেলায় করোনা পরীক্ষার সংখ্যাও এক লাফে ১০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। জেলায় দিন দিন এই করোনা পরীক্ষার সংখ্যাও বাড়ছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন সপ্তাহে আগেও সারা জেলায় করোনা পরীক্ষার সংখ্যা ছিল ৫০০-এর কম। সেখানে গত সোমবার পর্যন্ত জেলায় ১০ হাজার ৩২৫ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, ৫ মে পর্যন্ত জেলায় মোট ৪৯৩ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। অর্থাৎ যেদিন করোনা পরিস্থিতি শুরু হয়েছে তারপর থেকে প্রায় দেড় মাসে ওই সংখ্যা ছিল। কিন্তু, তারপর থেকেই সংখ্যা হু হু করে সংখ্যাটা বেড়ে গিয়েছে। সরকারি হিসেব অনুযায়ী, ৫ তারিখের পর থেকে গত দু’সপ্তাহে ১৯ মে পর্যন্ত জেলায় ৫ হাজার ৬৫৮ জনের পরীক্ষা করা হয়েছে। অর্থাৎ ১৪ দিনে ৫ হাজার ১৬৫ জনের পরীক্ষা করা হয়। আবার ২০ মে ২৫ মে পর্যন্ত অর্থাৎ মাত্র ৬ দিনেই ৫ হাজার ১৬০ জনের পরীক্ষা করা হয়েছে। ২৪ মে ১০০৮ জনের নমুনা নেওয়া হয়েছিল।
জেনারেল পদ্ধতিতে এক একজনের পরীক্ষার পাশাপাশি কয়েকদিন ধরে জেলায় পুলিং টেস্টিংয়ের উপরেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তবে, একসঙ্গে ৫-১০ জনের বেশি পুলিং টেস্ট করা হচ্ছে না। কারণ, প্রত্যেকের রিপোর্ট নেগেটিভ এলে ভালো। কিন্তু, পজিটিভ এসে গেলেই সবার পৃথকভাবে পরীক্ষা করতে হবে। তাই এর চেয়ে বেশি পুলিং করলে পজিটিভ কেসে সমস্যা হবে।
স্বাস্থ্যদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, সরকারি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে যেমন নিয়মিত চেকআপ করা হয়, তেমনই হোম কোয়ারেন্টাইনেও প্রত্যেকের উপর নজর রাখা হচ্ছে। এছাড়াও পুরসভা এলাকায় পৌর স্বাস্থ্যকর্মীরা এবং গ্রামীণ এলাকায় আশাকর্মী ও ভিলেজ রিসোর্স পার্সনরাও দেখভাল করছেন। বাড়ি বাড়ি গিয়েও নজরদারি চালানো হচ্ছে। যাতে কোনওভাবেই সংক্রমণ ছড়িয়ে না পড়ে।