বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য দপ্তরের আধিকারিকরা মঙ্গলবার বৈঠক করেছেন। রোগীদের কোভিড হাসপাতালে ভর্তি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। আধিকারিকদের একাংশের দাবি, যেভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তাতে খুব তাড়াতাড়ি কোভিড হাসপাতালের বেড ভর্তি হয়ে যাবে। বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। মহারাষ্ট্র থেকে ফিরে আসা শ্রমিকরাই চিন্তা বাড়িয়েছে। তাঁদের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। নবগ্রাম, সাগরদিঘি, বেলডাঙা-২, খড়গ্রাম এলাকার বহু যুবক মুম্বই থেকে ফিরেছেন। কেরল থেকেও এক হাজারের বেশি শ্রমিক ফিরে এসেছেন। তবে তাঁদের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা কম। এরাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকেও অনেকেই মুর্শিদাবাদে ফিরে এসেছেন। তাঁদের মধ্যে কলকাতা থেকে আসা কয়েকজনের পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছিল। বাকি জেলা থেকে ফিরে আসা শ্রমিকদের মধ্যে এখনও পজিটিভ রিপোর্ট আসেনি। জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর বুলেটিন দিয়ে জানিয়েছে, বিভিন্ন রাজ্য থেকে ফিরে ৩৩ হাজার ৮৮৫জন হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। দু’দিন আগেও সংখ্যাটা অনেক বেশি ছিল। তাঁরা মুম্বই, কেরলের পাশাপাশি অসম, গুজরাত, চেন্নাই, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা এবং বিহার থেকে ফিরে এসেছেন। এরাজ্যের পশ্চিম বর্ধমান, কলকাতা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর সহ বিভিন্ন জেলা থেকে ফিরে এখনও পর্যন্ত ২৮০১ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। অন্য জেলা থেকে আরও কয়েক হাজার শ্রমিক ফিরে এসেছেন। তাঁদের কোয়ারেন্টাইনের মেয়াদ শেষ হয়েছে। এখনও জেলার বহু শ্রমিক বাইরে রয়েছেন। জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ৪৬জন করোনা আক্রান্ত রোগীর কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। বেশ কিছু শ্রমিকের নমুনা পরীক্ষার জন্য মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের রিপোর্ট কী আসে তা নিয়ে আধিকারিকদের একাংশ উদ্বেগে রয়েছেন। আক্রান্তদের পরিবারের লোকজনদেরও নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে।
এদিকে শক্তিপুর এলাকায় একদিনে ছ’জন করোনা আক্রান্ত হওয়ায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। সোমপাড়া-১ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মহম্মদ সইফুদ্দিন শেখ বলেন, আমাদের পঞ্চায়েত এলাকার চারজন আক্রান্ত হয়েছেন। মুম্বই থেকে ফিরে আসার পর তাঁদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। নারিকেলবাড়ি, জোলমাঠপাড়া এবং নতুনপাড়ায় আক্রান্তরা যেসব পাড়ায় ছিলেন সেখানে কন্টেইনমেন্ট জোন করা হয়েছে। বাঁশরা এলাকাতেও দু’জন আক্রান্ত হয়েছে। সেখানেও স্বাস্থ্যদপ্তরের কর্মী এবং প্রশাসনিকরা আধিকারিক গিয়ে পাড়া সিল করে এসেছেন। এলাকায় যেসব পরিযায়ী শ্রমিক ফিরে এসেছেন তাঁদের প্রত্যেককেই নিয়ম মেনে থাকতে বলা হয়েছে। ঘরের বাইরে কোনওভাবেই বেরনো চলবে না। প্রয়োজনে ওরা আমাদের সহযোগিতা নিতে পারে। অন্যদিকে সাগরদিঘি ব্লকের আক্রান্ত পরিযায়ী শ্রমিকরা ১৯মে জেলায় ফিরে আসেন। ২০মে তাঁদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পজিটিভ রিপোর্ট আসার পরেই স্বাস্থ্যদপ্তর ও পুলিস কর্মীরা তাঁদের কোভিড হাসপাতালে নিয়ে এসেছে। তাঁদের পরিবারের সকলকেও হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাগরদিঘি ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি নুরুজ্জামান শেখ বলেন, এর আগেও আমাদের এলাকায় কয়েকজন আক্রান্ত হয়েছেন। তারপর থেকেই বাইরে থেকে ফেরা সকলকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি করা হয়েছে। দলীয়ভাবে আমরাও সচেতনতার জন্য প্রচার করছি। অন্যদিকে, জেলার পরিস্থিতি জটিল হতে শুরু করায় পুলিস আবার কোমর বেঁধে ময়দানে নেমেছে। এদিন বহরমপুর শহরের বিভিন্ন এলাকায় তারা অভিযান চালায়। মাস্ক ছাড়া ঘুরে বেড়ানো লোকজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সূতি থানার পুলিস বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে নাকা চেকিং শুরু করেছে। অকারণে কাউকে ঘুরে বেড়াতে দেখলেই আটক করা হচ্ছে। .