গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
পূর্বস্থলী-১ বিএমওএইচ রত্না দত্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, জাহান্নগরে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে থাকা যুবককে দুর্গাপুরের কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বছর তেইশের ওই যুবক নাদনঘাট থানার মাগনপুরের বাসিন্দা। মহারাষ্ট্রে শ্রমিকের কাজ করতেন। ১৯ মে বাড়ি ফেরার সময় নদীয়ার শান্তিপুরে তাঁর সোয়াব টেস্ট হয়। তারপর থেকে ওই যুবককে জাহান্নগর কুমারানন্দ হাইস্কুলে রাখা হয়েছিল। সোমবার বিকেল নাগাদ সেই রিপোর্ট আমাদের কাছে এসে পৌঁছয়। ওই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে থাকা ২৬ জনেরই সোয়াব পরীক্ষা করা হবে। বুধবার গোটা স্কুলে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হবে।
মঙ্গলবার ওই স্কুল চত্বর সহ ব্রহ্মাণীতলা, ভাণ্ডারটিকুরি স্টেশন রোড, পরাণপুর বাজার সহ সমস্ত দোকানপাট আগামী ২১ দিন পর্যন্ত বন্ধ রাখতে বলে দেওয়া হয়েছে। এদিন স্থানীয় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কেও গ্রাহক পরিষেবা বন্ধ ছিল। এলাকাবাসীর মধ্যে করোনার জেরে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। যাঁরা মাস্ক ব্যবহার করতেন না, তাঁরাও এদিন থেকে মাস্ক ব্যবহার করা শুরু করে দিয়েছেন। এদিনও ওই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে থাকা যুবকদের ফয়েল বন্দি রান্না করা খাবার দেয় পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় বাসিন্দা অনুপ ঘোষ বলেন, বাড়ি থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে রয়েছে ওই স্কুল। ওখানে থাকা যুবকের করোনা সংক্রমণের হদিশ মেলায় আমরা আতঙ্কে রয়েছি। অপ্রয়োজনে বাড়ি থেকে বের হচ্ছি না। এদিন নাদনঘাট পুলিস স্থানীয় বাসিন্দাদের অযথা বাড়ি থেকে বের হতে নিষেধ করে। ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রেই বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
পঞ্চায়েত প্রধান সুভাষ ঘোষ বলেন, এলাকায় করোনা রোগীর সন্ধান মেলার পরই সকলে আতঙ্কিত। আপাতত বাজার, হাট বসা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েতের তরফে এলাকায় জীবাণুনাশক স্প্রে করা হবে।
জানা গিয়েছে, মাগনপুরের ওই যুবক মুম্বইয়ে একটি হোটেলে কাজ করতেন। এলাকার আরও এক যুবক তাঁর সঙ্গে কাজ করতেন। লকডাউন শুরু হওয়ার পর ওই দু’জন বাড়ি আসতে পারছিলেন না। সম্প্রতি শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনে তাঁরা নদীয়ার শান্তিপুরে আসেন। সেখানে দু’জনেরই সোয়াব টেস্ট করা হয়। ১৯ মে তাঁরা পূর্বস্থলী-১ ব্লকে কিষাণ মান্ডিতে এসে পৌঁছন। সেখান থেকে ওই যুবক সরাসরি নিজের বাড়িতে যাননি। একটি বাইকে চাপিয়ে তাঁকে জাহান্নগর হাইস্কুলে নিয়ে আসা হয়। তারপর থেকে সেখানেই বাকি ২৬ জনের সঙ্গে ছিলেন। এদিন করোনা রোগীর সন্ধান মিলতেই এলাকায় খোঁজ খবর শুরু হয়ে যায়। নাদনঘাট এলাকায় ঢোকার পর ওই যুবক কার কার সংস্পর্শে এসেছিলেন তার খোঁজ শুরু হয়েছে। ওইদিন কিষাণ মান্ডি থেকে ওই যুবকের সঙ্গে মাগনপুর ও নসিপুরের দুই যুবক ওই বাইকে চেপেছিলেন। কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে থাকাকালীন আক্রান্তের পরিজনরা নিয়মিত দেখা করতে আসতেন। স্কুলের মাঠে অন্যদের সঙ্গে ক্রিকেটও খেলেছেন। এবার ওই যুবকের রিপোর্ট প্রকাশ্য আসায় ওই সেন্টারের অন্যদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে।