বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
বুধবার সরাসরি উম-পুনের ধাক্কা না পড়লেও দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতেও তার তাণ্ডবলীলা চলেছে সমানতালে। হাজার হাজার গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়েছে। উম-পুনের ধাক্কায় লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে প্রায় সব জেলাই। তবে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ঘুর্ণিঝড়ের যাত্রাপথে পড়া নদীয়া ও মুর্শিদাবাদে। এই দুই জেলাতেই কয়েক হাজার বাড়ির ক্ষতির পাশাপাশি শুধু নদীয়াতেই সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। নদীতেই প্রায় ১৬ হাজার বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পরিবারগুলি এখন ত্রাণ শিবির অথবা আত্মীয় বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। এজেলায় ধান, তিল, কলা, ফুল, সব্জি, পাট সহ বিভিন্ন চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির হিসেব করতে শুক্রবার ড্রোন ওড়ানো হয়। সামগ্রিকভাবে ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে পর্যালোচনা করতে আজ শনিবার জেলা প্রশাসনের আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করবেন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। পৃথকভাবে কল্যাণী ও কৃষ্ণনগরে এই বৈঠক হবে। তার আগেই জেলা প্রশাসনের হিসেবে নদীয়া জেলায় শুধুমাত্র কৃষিক্ষেত্রেই ৯৪৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। প্রশাসন জানিয়েছে, বাকি ক্ষয়ক্ষতির হিসেব চলছে। পাশের জেলা মুর্শিদাবাদেও ক্ষতির পরিমাণ বিপুল। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, সামগ্রিক ক্ষয়ক্ষতি প্রায় ১১৬২ কোটি টাকা। কৃষিক্ষেত্র ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রচুর বাড়ি। এই জেলায় ধান, পাটের পাশাপাশি অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল আম ও লিচুর ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক। এজেলায় সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ছ’হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলাও। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ধান, তিল, সব্জি, আম সব মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৩১৪ কোটি টাকা। এজেলায় প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার বাড়ি ভেঙেছে। কালনায় এখনও বেশ কিছু এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে রয়েছে। তেমনই বীরভূম জেলাতেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৪৬১ কোটি টাকার। বাঁকুড়া এবং আরামবাগ মহকুমা মিলিয়ে চাষে ক্ষতির পরিমাণ ৪০০ কোটি টাকা। পশ্চিম বর্ধমানে অবশ্য ক্ষতির পরিমাণ কম।
ঘুর্ণিঝড়ের দাপটে বিপর্যস্ত জেলাগুলিতে জনজীবন শুক্রবারও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। ভাঙাঘরের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন বাড়ির লোকজন। এখনও আরামবাগ, বর্ধমান, নদীয়া, মুর্শিদাবাদে বহু চাষের জমি জলের তলায়। চাষিরা জল থেকে সেই ধান তুলে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। মুর্শিদাবাদ, নদীয়া, পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী প্রভূতি এলাকায় গাছ থেকে সিংহভাগ আম ঝরে পড়েছে।