কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীর ঈর্ষার কারণে সম্মানহানি হবে। ব্যবসায়ীদের আশানুরূপ লাভ না হলেও মন্দ হবে না। দীর্ঘ ... বিশদ
বাঁকুড়ার জেলাশাসক এস অরুণ প্রসাদ বলেন, প্রাথমিক রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রতিটি ব্লক থেকেই ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত রিপোর্ট তৈরি করে রাজ্যে পাঠানো হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের প্রয়োজন অনুযায়ী ত্রাণ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আরামবাগের এসডিও নৃপেন্দ্র সিং বলেন, মহকুমার ৬৩টি গ্রাম পঞ্চায়েতেই কমবেশি ক্ষতি হয়েছে। তবে আগাম পূর্বাভাস অনুযায়ী বিপদগ্রস্ত এলাকার মানুষকে প্রশাসনের তরফে ত্রাণশিবিরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। যেকারণে হতাহত বা প্রাণহানির ঘটনা এড়ানো গিয়েছে। প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী মহাকুমার প্রায় সাড়ে সাতশোর বেশি বাড়ি ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিভিন্ন ত্রাণশিবিরে বহু মানুষ এখনও আটকে রয়েছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
এদিকে বিধ্বংসী ঘুর্ণিঝড়ের দাপটে বাঁকুড়া জেলায় ২২টি ব্লক ও তিনটি পুরসভা এলাকায় মোট প্রায় সাড়ে চার হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাড়ির পাশাপাশি ব্যাপক বৃষ্টির কারণে বোরো ধান, তিল ও সব্জি চাষেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও জেলার বহু জায়গাতেই ঝড়ের তাণ্ডবে গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গিয়েছে। প্রশাসনের তরফে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করার জন্য দ্রুত কাজ চলছে। জেলা কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝড়বৃষ্টির কারণে জেলায় প্রায় ৩০ হাজার ৫১৫ হাজার হেক্টর বোরো ধান, ৩০হাজার ৭৬৬ হেক্টর জমির তিল, তিন হাজার ৪৬২ হেক্টর জমির সব্জি, দু’হাজার ৬০০ হেক্টর আমের বাগান, ১৯০একর পান, ৫৪১ জমির একর মুগ, ৫১ একর জমির চিনাবাদাম চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুধু কৃষিক্ষেত্রেই সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩৪৬ কোটি টাকা।
অন্যদিকে, আরামবাগ মহকুমার ছ’টি ব্লকের ৬৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও একটি পুরসভা এলাকায় কৃষিপ্রধান এলাকা বলে পরিচিত। মহকুমা কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এবছর মহকুমাজুড়ে ৩১ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষের পাশাপাশি বর্তমানে তিন হাজার হেক্টর জমিতে সব্জি চাষ হয়েছে। এছাড়া ১০ হাজার হেক্টর জমিতে তিল ও ১১হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষ হচ্ছে। তিল গাছে সবেমাত্র ফুল ধরতে শুরু করেছিল। এরই মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের পাশাপাশি বৃষ্টিতে তিল চাষের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে।
গোঘাটের চাষি রতন কোলে বলেন, একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগে আমাদের ফসল নষ্ট হয়েছে। প্রায় পাঁচ বিঘা জমিতে এবছর তিল লাগিয়েছিলাম। কিন্তু ঝড়-বৃষ্টিতে তার চিহ্নমাত্র নেই। আরামবাগের কাবলে এলাকার বাসিন্দা পরিমল ঘোষ বলেন, লকডাউনের কারণে বোরো ধান কাটতে খেতমজুর পাওয়া যায়নি। এরপর ঘূর্ণিঝড় ও বৃষ্টিতে চাষের জমি এখন জলের তলায়। বর্তমানে ধান কাটার মেশিন জমিতে নামিয়েও ফসল রক্ষা করতে পারব না। এই পরিস্থিতিতে আমরা চাষিরা দিশাহারা। এখন সরকারি সাহায্যের দিকে তাকিয়ে রয়েছি।