কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
মাত্র চারদিন পরেই পয়লা বৈশাখ। ওইদিনে বাঙালির বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হালখাতা উপলক্ষে পুজো হয়। প্রায় প্রতিটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে পুজো হয় সিদ্ধিদাতা গণেশের। তাই ওইদিনে প্রতিবছরই গণেশ মূর্তির চাহিদা থাকে। সেই চাহিদার কথা মাথায় রেখে এবার মৃৎশিল্পীরা সিদ্ধিদাতা গণেশের ছোট ছোট মূর্তি তৈরি করা শুরু করেন। এছাড়া তার সঙ্গে জোড়া লক্ষ্মী-গণেশের প্রতিমাও থাকে। কিন্তু করোনার সংক্রমণের জেরে লকডাউন চলায় অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, দোকানপাট বন্ধ। লকডাউন আরও বাড়তে পারে বলেও জল্পনা চলছে। তাই এবার আদৌ গণেশ মূর্তি বিক্রি হবে কি না তা নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন মৃৎশিল্পীরা।
মৃৎশিল্পীরা জানিয়েছেন, কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো ও পয়লা বৈশাখ হালখাতার সময় গণেশ, লক্ষ্মীর ছোট ছোট মূর্তির চাহিদা বেশি থাকে। দশকর্মর দোকান সহ প্রতিমা বিক্রেতারা আগাম বায়না দেন শিল্পীদের কাছে। সেই অনুপাতে শিল্পীরা প্রতিমা তৈরি করেন। পাশাপাশি নিজেরা বাজারে বসে সরাসরি বিক্রির জন্যও বেশ কিছু প্রতিমা তৈরি করেন। এবার লকডাউনের আগেই প্রতিমার মাটির কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে শিল্পীদের। সাধারণত দোকানদার ও ব্যবসায়ীরা পয়লা বৈশাখ হালখাতায় সিদ্ধিদাতা গণেশের পুজো করেন। কিন্তু, এবার অধিকাংশ দোকান বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরা এই পরিস্থিতিতে পুজো করবেন কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তাই দুশ্চিন্তায় পড়েছেন মৃৎশিল্পীরা। অন্যান্য বছর এইসময় মূর্তি বিক্রি করে ভালো টাকা রোজগার হয় শিল্পীদের। এবার তা না হলে সকলেই আর্থিক সঙ্কটে পড়বেন বলে দাবি মৃৎশিল্পীদের।
কালনা জাপট পালপাড়ার বাসিন্দা মৃৎশিল্পী কালাচাঁদ পাল, শ্যামল পাল বলেন, আমরা ছোট ছোট ছাঁচের লক্ষ্মী, গণেশ মূর্তি তৈরি করি। দুটি মরশুমে আয় মোটামুটি হয়। এবার করোনার আগেই আমরা প্রায় সব প্রস্তুতি নিয়ে মাটির কাজ সেরে ফেলেছি। শুধু রং করার কাজ বাকি ছিল। কিন্তু এই মুহূর্তে বুঝতে পারছি না ঠাকুরের চাহিদা কেমন হবে। তাতেও রঙের কাজ শুরু করেছি। আগাম বায়না নেওয়া দোকানদাররা পাইকারি মাল নেবেন কি না বুঝতে পারছি না। লকডাউন উঠলে কিছুটা ভরসা পেতাম। কিন্তু লকডাউন দীর্ঘায়িত হলে এবার আমাদের পথে বসতে হবে।
কালনার এক প্রতিমা বিক্রেতা শ্যামসুন্দর মণ্ডল বলেন, প্রতিবছর পয়লা বৈশাখ গণেশ ও জোড়া গণেশ-লক্ষ্মী প্রায় ৫০০টি বিক্রি করি। এবারও সেই হিসেবে মৃৎশিল্পীদের কাছে আগাম অর্ডার দিয়েছি। লক ডাউনের ফলে একদিনও দোকান খুলতে পারিনি। ১৪ এপ্রিল লকডাউন উঠলে একটা চাহিদা থাকবে। কিন্তু লকডাউনের মেয়াদ বাড়লে দোকানও খুলতে পারব না। তখন কী যে হবে ভেবে পাচ্ছি না। একই বক্তব্য ধাত্রীগ্রামের প্রতিমা বিক্রেতা পরাণ পাল, সিঙ্গারকোণের স্বপন পালের।