পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
স্বাস্থ্যদপ্তর ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় লকডাউন অনেকটাই সফলভাবে চলছে। সংক্রমণ রুখতে যা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্যও সচেতন করা হচ্ছে জেলাজুড়ে। সকলকে সরকারি গাইড লাইন মেনে চলতে বলা হচ্ছে। জেলার বিভিন্ন জায়গায় জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। যেহেতু করোনা ভাইরাস ভিন দেশ থেকে এ দেশে ঢুকেছে, তাই প্রথমেই বিদেশ থেকে যাঁরা জেলায় এসেছেন তাঁদের সবাইকে চিহ্নিত করে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। সেই সঙ্গে গত ১৮ মার্চ পর্যন্ত ভিন রাজ্য থেকে যাঁরা পূর্ব বর্ধমানে ফিরেছেন, তাঁদেরও একইভাবে চিহ্নিত করে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। প্রত্যেকের বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনের নোটিসও লাগানো হয়েছে। তাতে লিখে দেওয়া হয়েছে, ১৪ দিন তাঁদের বাড়িতে যেন কেউ না আসেন। সংক্রমণ রুখতেই এই উদ্যোগ।
চীনের উহান প্রদেশ থেকেই করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছে। সেই চীন সহ বিদেশ থেকে পূর্ব বর্ধমান জেলায় মোট ২৭৯ জন ফিরেছেন। সবাইকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছিল। বুধবার পর্যন্ত বিদেশ ফেরত ৪৮ জন হোম কোয়ারেন্টাইন সময়সীমা পার করে মুক্ত হয়েছেন। অন্যদিকে, ভিন রাজ্য থেকে এই জেলায় ৩৩ হাজারের বেশি মানুষ ফিরেছেন। সরকারি হিসেব অনুযায়ী, গত ১৮ মার্চ পর্যন্ত এই জেলায় ৩৩ হাজার ৪২০ জন মানুষ ভিন রাজ্য থেকে ফিরেছেন। বেশিরভাগই ট্রেনে ফিরেছেন। অনেকে বিমানেও ফিরেছেন। সবাইকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছিল। তার মধ্যে বুধবার পর্যন্ত ১৯৬৩ জন হোম কোয়ারেন্টাইন সময়সীমা পার করে মুক্ত হয়েছেন। তাঁরাও আতঙ্ক কাটিয়ে উঠেছেন।
হোম কোয়ারেন্টাইন ছাড়াও ভিন রাজ্য থেকে ফেরা লোকজনদের জন্য বর্ধমানের কালনা রোডের কৃষিভবনে, কাটোয়ায় পুরসভার আরএমসি হলে এবং কালনায় একটি লজে সরকারি কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বুধবার পর্যন্ত সেখানে ২২২ জন ভর্তি রয়েছেন। রাজ্য সরকারের নির্দেশে কেবলমাত্র করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য বর্ধমানের গাংপুরে একটি কোভিড হাসপাতালও প্রস্তুত করা হয়েছে। করোনা আক্রান্ত সন্দেহে সেখানে গত শুক্রবার তিনজনকে এবং গত সোমবার চারজনকে ভর্তি করা হয়েছিল। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পক্ষ থেকে সাতজনেরই নমুনা পরীক্ষা করে কলকাতার নাইসেডে পাঠানো হয়েছিল। সাতজনেরই করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ওই কোভিড হাসপাতালে ছ’জন ভর্তি ছিলেন।
জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, কোভিড হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় সাতজন সহ পূর্ব বর্ধমান জেলায় এখনও পর্যন্ত ২৫ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। ভালো খবর হল, ২৫ জনেরই রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। কোভিড হাসপাতালে যে ছ’জন ভর্তি ছিলেন, তাঁদের করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ হওয়ায় তাঁদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ফেরানো হয়েছে। কারণ, তাঁদের নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। তিনি বলেন, বিদেশ বা ভিন রাজ্য থেকে ফিরে যাঁরা হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন, যাঁদের প্রতিদিন খবর রাখা হচ্ছে। তাঁদের সবার মোবাইল নম্বরও জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরে নথিভুক্ত করে রাখা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজন হলে তাঁদেরকেও ফোন করতে বলা হয়েছে। এছাড়াও কেউ অসুস্থ বোধ করলে, তাঁর করোনার উপসর্গ পাওয়া গেলে তাঁকে কোভিড হাসপাতালে প্রথমে ভর্তি করা হবে। তারপর করোনার পরীক্ষা করা হবে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, বিদেশ ও ভিন রাজ্য থেকে ফিরে যাঁরা হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন, তাঁদের কারও সর্দি হয়েছে কি না, জ্বর হয়েছে কি না, ইত্যাদি সমস্ত খবর নেওয়া হচ্ছে। ভিলেজ রিসোর্স পার্সন এবং আশাকর্মীরা এই কাজ করছেন। জেলাজুড়েই ২৪ ঘণ্টা নজরদারি চলছে।