কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৩ মার্চ থেকে রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে লকডাউন। তার ফলে সেইসময় থেকেই মানুষ কার্যত গৃহবন্দি। এপ্রিল মাসের শুরুর দিকে অবশ্য বাসিন্দারা প্রায়োজনীয় কাজে বাড়ির বাইরে বেরচ্ছেন। তবে, অপ্রয়োজনে বেরনোর সংখ্যাও যথেষ্ট রয়েছে বলে অভিযোগ। এক্ষেত্রে অবশ্য বহু মানুষ পোস্ট অফিস, ব্যাঙ্ক বা গ্যাসের অফিসে নানা পরিষেবার জন্য যাচ্ছেন। বীরভূমের জেলা সদর সিউড়িতে সেইসব কার্যালয়গুলিতে গ্রাহকদের কার্যত লম্বা লাইন দেখা গিয়েছে। গ্রাহকদের সেইসব লাইনে অবশ্য সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না। গ্রাহকরা পাশাপাশি গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে থাকছেন। এমনকী, কাউন্টারের সামনেও ভিড় হয়ে যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে জমায়েত এড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। সেইজন্য প্রধানত লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু, দিনের পর দিন বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়ে লম্বা লাইনে দূরত্ব না এড়ানো গেলে সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ থেকেই যাচ্ছে বলে দাবি বাসিন্দাদের। যদিও গ্রাহকদের একাংশের দাবি, বিভিন্ন কার্যালয়ে পর্যাপ্ত শেড নেই। ফলে, লাইনে দাঁড়ালে গ্রাহকদের মাথায় পড়ছে চড়া রোদ। এক্ষেত্রে এই পরিস্থিতিতে যাতে ছাউনির ব্যবস্থা করা যায় তার দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি লকডাউনের জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের তরফে একাধিক আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। সেইজন্য গ্রাহকরা অনুদান নিতে ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিসে লাইন দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনাতেও দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী মহিলাদের রান্নার গ্যাসের জন্য ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। সেই ভর্তুকির টাকা পোস্ট অফিসের অ্যাকাউন্টে দেওয়া হচ্ছে। ফলে, হাজার হাজার গ্রাহক বিভিন্ন ডাকঘরে, গ্যাস অফিসে লাইন দিচ্ছেন। কিছু জায়গায় লাইনে ইট বা অন্য কোনও সামগ্রী রেখে ছায়ায় দাঁড়াচ্ছেন গ্রাহকরা। ফলে, সেক্ষেত্রেও সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকছে না।
সিউড়ি হেড পোস্ট অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বুধবার বীরভূম জেলার বিভিন্ন পোস্ট অফিসে ৩ কোটি ৪৫ লক্ষ ৩৯ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে, সিউড়ি ও শান্তিনিকেতনের পোস্ট অফিসের এটিএম থেকে ৪ লক্ষ ৯২ হাজার ৫০০ টাকা তোলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার জেলায় ৪৫৪৫জনের সঙ্গে পোস্ট অফিসের ৫ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকার লেনদেন হয়েছে। পোস্ট অফিসের পাশাপাশি ব্যাঙ্কে সেইসব টাকা তুলতে লম্বা লাইন পড়ে যাচ্ছে। উজ্জ্বলা যোজনার টাকা ফের সোমবার থেকে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে দেওয়া হবে। তার ফলে ভিড় আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সিউড়ি হেড পোস্ট অফিসের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারিন্টেন্ডেন্ট উজ্জ্বল কুণ্ডু বলেন, বিভিন্ন প্রয়োজনে লেনদেনের জন্য গ্রাহকরা পোস্ট অফিসে আসছেন। দূরত্ব বজায় রেখে লাইন দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। কিন্তু, অনেকে হুড়োহুড়ি করায় দূরত্ব বজায় থাকে না। আগামী সোমবার থেকে অন্য পদ্ধতিতে কাজ করার পরিকল্পনা নেওয়া হবে।
বীরভূমের পুলিস সুপার শ্যাম সিং বলেন, লাইনে দূরত্ব বজায় রাখার জন্য সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করা হয়েছে। সব জায়গাতেই তা মানা হচ্ছে।