কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝালদা-১ ব্লকের ইচাগ গ্রাম পঞ্চায়েতের সারজুমাতু গ্রামেরই প্রায় ২০টি পরিবার অভাবের কারণে তাঁদের রেশন কার্ড বন্ধক রেখে গ্রামের এবং পাশের গ্রামের একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে নগদ টাকা ধার নিয়েছেন। কারও দু’বছর, কারও আবার চার বছর ধরে রেশন কার্ড অন্য ব্যক্তির কাছে বন্ধক দেওয়া রয়েছে।
সারজুমাতু গ্রামের বাসিন্দা ভগীরথ কালিন্দি বলেন, বাবা প্রায় চারবছর আগে মারা যান। বাবার মৃত্যুর পর শ্রাদ্ধের কাজের জন্য জামলহর গ্রামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে সাত হাজার টাকা নগদ ধার নিয়েছিলাম। ওই টাকা ধার নেওয়ার বিনিময়ে পারিবারিক রেশন কার্ড বন্ধক রাখতে হয়েছিল। সেই টাকা শোধ করতে পারিনি। তাই কার্ডও ফেরত পাইনি। ইট ভাটায় কাজ করতাম। তাতে সংসার চলে যেত। কিন্তু, লকডাউনে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছি। তবে অভিযোগ জানানোর পর বুধবার কার্ড ছাড়াই চাল পেয়েছি।
ইন্দিরা কালিন্দি বলেন, গ্রামেরই এক ব্যক্তির কাছ থেকে মেয়ের বিয়েতে ১০হাজার টাকা ধার নিয়েছিলাম। সেই সময়ই কার্ডটি বন্ধক দিতে হয়। এখন কোনও সামগ্রী পাচ্ছি না। ডিলার বলেছেন, যাঁর হাতে কার্ড থাকবে তাঁকেই চাল দেবেন।
এবিষয়ে রেশন কার্ড বন্ধক নেওয়া গুনা কুইরি বলেন, আমি সখা কালিন্দির পরিবারের দু’টি কার্ড চারবছর ধরে বন্ধক রেখেছি। ওদের ২২ হাজার টাকা ধার দিয়েছিলাম। ওরা নিজেরাই সমস্যায় পড়ে আমাদের কাছে এসে কার্ডগুলি বন্ধক দিয়েছিল। ওরা নগদ টাকা ধার নিয়েছে বলেই ওদের কার্ড নিয়ে আমরা ডিলারের কাছে গিয়ে ওদের চাল তুলি। ওরাই ডিলারের কাছে গিয়ে আমাদের ওই সামগ্রী দিতে বলেছিল।
সারজুমাতু গ্রামের ডিলার অমরেশ মাহাত বলেন, আমার কাছে এখনও পর্যন্ত মাত্র দু’জনের এরকম সমস্যা হয়েছিল। আমরা কী করে জানব, ওরা ওই কার্ড বন্ধক দিয়েছিল। ওরা নিজেরাই ওদের চাল ওই লোকেদের দিতে বলেছিল। প্রায় দু’বছর ধরে ওরা এভাবে চাল নিত। তবে এবার জানতে পেরে তা বন্ধ করেছি। কার্ড ছাড়াই ওদের চাল দিয়েছি।
ইচাগ গ্রামের আর এক রেশন ডিলার সত্যজিৎ মাহাত বলেন, প্রায় ১৫টি পরিবারের এরকম সমস্যা আপাতত জানতে পেরেছি। খাদ্যদপ্তরের নির্দেশে তাঁদের কার্ড ছাড়াই চাল দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
এবিষয়ে ঝালদা-১ ব্লকের খাদ্য দপ্তরের ইন্সপেক্টর সুদীপ জানা বলেন, বিষয়টি জানতে পেরেই আমরা ওই পরিবারগুলিকে রেশন দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। আগে ওদের হাতে চাল তুলে দেওয়াটা জরুরি। পরে যারা বন্ধক নিয়ে রেখেছে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।