গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
করোনা মহামারির কবলে পড়ে দেশের অত্যাবশ্যকীয় পণ্য উৎপাদনকারি সংস্থা ছাড়া প্রায় সব কল কারখানাই বন্ধ। কিন্তু ইস্পাত কারখানা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা হলে তার ব্লাস্ট ফার্নেস ফের কার্যকর করতে বহু সময় লেগে যাবে। এই বিষয়টি মাথায় রেখে সেইলের কারখানাগুলিকে চালু রাখা হয়েছে। সেই অনুযায়ী বার্নপুরে ইস্কো কারখানাও চালু রয়েছে। কিন্তু এবার এই কারখানার ইঞ্জিনিয়াররা শ্রমিকদের স্বার্থে অভিনব অবিষ্কার করলেন। কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩ এপ্রিল সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এই অবস্থাতেও যাঁরা কারখানায় কাজে আসছেন, তাঁদের পুরো দেহ স্যানিটাইজ করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সেই মতো সংশ্লিষ্ট বিভাগের মেকানিক্যাল ও ইলেক্ট্রিক্যাল বিভাগের ইঞ্জিনিয়ার ও টেকনিশিয়াররা কাজে নেমে পড়েন। তাঁরা একটি কেবিন প্রস্তুত করেন, সেখানে বিভিন্ন অংশে কন্ট্রোল ভাল্ব সহ স্প্রে নজেল লাগানো হয়। ড্রাই ফগ ডাস্ট অপারেশন টেকনোলজির মাধ্যমে কেবিনে কেউ প্রবেশ করলেই ০.১ শতাংশ সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইড দ্রবনের সঙ্গে ডেলট মিশ্রিত বিশেষ স্যানিটাইজার স্প্রে হবে। এই কেবিনের মধ্যে দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময়ে এটি ঘটবে বলে একে স্যানিটাইজেশন ওয়াকওয়েও বলা হচ্ছে। ৭ এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের দিনে এটি প্রথম ব্যবহৃত হয়। এত কম সময়ে এই মেশিন প্রস্তুত করায় খুশি কারখানার শ্রমিক থেকে আধিকারিক সকলেই। প্রতিটি শ্রমিক সংগঠন এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছে।
সেইল আইএসপির সিটুর যুগ্ম সম্পাদক শুভঙ্কর দাশগুপ্ত বলেন, আমাদের কর্মী, আধিকারিকরাই এটি প্রস্তুত করে আমাদের গর্বিত করেছেন। এবার আমরা ব্যাপক মাত্রায় স্যানিটাইজার তৈরি করারও ভাবনা নিয়েছি। অত্যন্ত দ্রুত এই কাজ সম্পন্ন হওয়ায় শ্রমিকদের নিরাপত্তা অনেকটাই বাড়ল।
আইএনটিইউসি অনুমোদিত আসানসোল আয়রন অ্যান্ড স্টিল ওয়ার্কারস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হরজিৎ সিং বলেন, এতে কর্মীদের মনোবল বাড়বে। আমরা চাইব এই ধরনের বিশেষ কেবিন আরও প্রস্তুত করে বাকি কারখানার শ্রমিকদেরও নিরাপদে রাখার উদ্যোগ নিক কর্তৃপক্ষ।
ভারতীয় মজদুর সভার রাজ্য কার্যকরী সভাপতি রবিশঙ্কর সিং বলেন, গর্বের বিষয়। আমরাও চাইব এই সময়ে আরও বেশি করে এই কার্যকর মেশিনটি প্রস্তুত হোক।
এতদিন ধরে চীনে এই ধরনের বিশেষ কেবিনের মাধ্যমে ফুল বডি স্যানিটাইজ করার খবর সামনে এসেছিল। এবার এদেশেও এই প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হওয়ায় করোনা মোকাবিলায় এটি বড় হাতিয়ার হতে চলেছে বলে অনেকের দাবি।