সংবাদদাতা, শান্তিনিকেতন: করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে ও দেশজুড়ে চলা লকডাউনের জেরে এবার বাতিল হল বীরভূমের অন্যতম সতীপীঠ কঙ্কালীতলার চৈত্র সংক্রান্তির মেলা। প্রতিবার বাংলা বছরের শেষে এই মেলা বসে। যা বাংলা নববর্ষের প্রথম ক’দিন থাকে। মেলা ঘিরে এই দিনগুলিতে সতীপীঠে প্রায় লক্ষাধিক ভক্তের সমাবেশ হয়। পুজো বন্ধ না হলেও ভক্তদের সংখ্যা একেবারে নেই বলা চলে। তার উপর চৈত্র সংক্রান্তির মেলা না হওয়ার সিদ্ধান্তে কঙ্কালী মায়ের মন্দির একেবারে শুনশান হয়ে পড়েছে।
বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসের প্রকোপে মারা গিয়েছেন বহু মানুষ। ভারতবর্ষেও বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এই ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় সামাজিক দূরত্ব। সেজন্য সরকারের তরফে দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। কোনও জায়গায় জমায়েত না করারও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। দেশজুড়ে বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাই এবার শান্তিনিকেতনের সতীপীঠ কঙ্কালীতলায় বন্ধ হয়ে গেল চৈত্র সংক্রান্তির শতাব্দী প্রাচীন মেলা।
স্থানীয় পঞ্চায়েত ও মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে, কঙ্কালীতলায় আয়োজিত সমস্ত অনুষ্ঠানের মধ্যে প্রধান এই চৈত্র সংক্রান্তির মেলা। মন্দির সংলগ্ন এলাকায় বিভিন্ন ধরনের দোকানপাট বসে। প্রতিদিন নানান সাংস্কৃতিক, আধ্যাত্মিক অনুষ্ঠান হয়। এই সময় সতীপীঠে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়। চৈত্র সংক্রান্তির দিন কোপাই নদীতে পুণ্যস্নান সেরে কঙ্কালী মন্দিরে পুজো দেওয়ার লাইন পড়ে ভোররাত থেকে। তিনদিন চলে এই মেলা। সেইমতো এবার ১৩ এপ্রিল মেলা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, করোনার ভয়াবহতায় বাতিল করে দেওয়া হল প্রাচীন এই মেলা।
কঙ্কালীতলা মন্দিরের সেবাইত জয়ন্ত চৌধুরী বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য এবছর মেলা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় পঞ্চায়েত, পুলিস, প্রশাসন ও সংবাদ মাধ্যমের মধ্য দিয়ে আমরা ভক্তদের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দিতে চাই। সংক্রান্তি ও নববর্ষের দিন বোলপুর ও পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষজন যাতে ভিড় না করেন সেদিকেও নজর রাখতে হবে।