বিমাসূত্রে ধনাগম হতে পারে। প্রেম-প্রণয়ে আনন্দ। কাজকর্মে অগ্রগতি ও সুনাম। ... বিশদ
বেশকিছু লকডাউন অমান্যকারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিসের চক্ষুচড়কগাছ। কারণ, পুলিসের চোখে ধুলো দিতে ওষুধ কেনার নামে ৩-৪ বছরের পুরনো প্রেসক্রিপশন নিয়েও বের হচ্ছেন অনেকেই। তবে, পুলিসের হাতে পাকড়াও হওয়ার পর তারা কাচুমাচু গলায় ভুল স্বীকারও করছে। অনেকে লকডাউনের মধ্যেই ছুটির মেজাজে বন্ধুদের সঙ্গে মদের আসর বসিয়েও পাকড়া হচ্ছে। লকডাউনের প্রথমদিন থেকেই জেলাজুড়ে লকডাউন নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে নামে পুলিস। খোদ পুলিস সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়ও বর্ধমান শহর সহ জেলার বিভিন্ন বাজারে গিয়ে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করেন। সাধারণ মানুষকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার আবেদন করেন। দূরত্ব বজায় রাখার জন্য চুন দিয়ে বহু বাজারে পুলিস গোলাকৃতি বৃত্তও এঁকে দেয়। এমনকী, লকডাউন সফল করার জন্য এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য বহু জায়গায় পুলিস করজোড়ে সাধারণ মানুষকে আবেদনও করে। কিন্তু, তারপরেও বহু মানুষ অপ্রয়োজনে বেরিয়ে পড়ছে।
এদিকে, লকডাউনে কালোবাজারি রুখতেও কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে জেলা পুলিস। জেলাজুড়ে অভিযানও চালানো হচ্ছে। বেআইনিভাবে মালপত্র মজুত করার অভিযোগে পুলিস এই জেলায় একাধিক দোকানদারকে গ্রেপ্তার করেছে। সেই সঙ্গে করোনা নিয়ে সোশ্যাল মিড়িয়ায় গুজব ছড়ানোর বিরুদ্ধেও কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে জেলা পুলিস। গত এক সপ্তাহে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে একাধিক মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদিকে, লকডাউনের জেরে গোটা জেলায় কয়েকশো ভবঘুরে অনাহারে দিন কাটাচ্ছিল। জেলা পুলিসই তাঁদের কথা ভেবেও এগিয়ে এসেছে। প্রতিটি থানার পক্ষ থেকে এই ভবঘুরেদের জন্য দু’বেলা খাবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমনকী, পুলিসের পক্ষ থেকে দুঃস্থদের ত্রাণও বিলি করা হয়েছে। লকডাউনের সময় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রক্তের আকাল দেখা দেওয়ায় জেলার প্রতিটি থানা থেকে ১০ জন করে পুলিসকর্মী রোজ বর্ধমান মেডিক্যালে রক্ত দিয়ে যাচ্ছেন। তাতে রক্তের ঘাটতি অনেকটাই মিটছে।
পুলিস জানিয়েছে, লকডাউন সফল করতে বর্ধমান শহর সহ জেলার বিভিন্ন জায়গায় পুলিস দিন ও রাতে চেকিং চালাচ্ছে। নির্দিষ্ট জায়গায় চেকিং চলার পাশাপাশি, চেকিংয়ের স্থানও বদল করা হচ্ছে। কারণ, তা না হলে অনেকে অন্য রাস্তা দিয়ে পালাবার চেষ্টা করছে। অনেকে প্রয়োজন ছাড়াও চার চাকা গাড়িতে করেও বেরিয়ে পড়ছেন। লকডাউনের প্রথম দিকে ফাঁকা রাস্তা দেখে কিছু যুবক ‘এনজয় রাইড’ করতে দ্রুতগতিতে বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়ছিল। পুলিস তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিয়েছে। তারপর থেকে সেই রাইড এখন বন্ধ। বর্ধমান শহরের কার্জন গেট চত্বরে প্রায় সময়ই চেকিং চলছে। অনেক মানুষ জরুরি কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। তাঁদের অনেকের জন্য সংশ্লিষ্ট থানা থেকে বিশেষ পাসও দেওয়া হয়েছে। চেকিং-এ পুলিসকে সেই পাস দেখালে ছাড় মিলছে। পুলিস জানিয়েছে, এখন প্রয়োজনে গাড়ি নিয়ে বাড়ি থেকে বের হলে থানার অনুমতি নিয়ে যেতে হচ্ছে। তা না হলে চেকিং-এ ধরা পড়লে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পুলিসের দাবি, লকডাউনের প্রথম দিকে দোকান ও বাজারে ভিড় হচ্ছিল। কিন্তু, এখন আর সেই ভিড় নেই। মানুষ আগের চেয়ে সচেতনও হচ্ছেন। বাজারে গেলে একে অপরের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টাও করছেন।
পূর্ব বর্ধমান জেলার পুলিস সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, লকডাউন নিয়ে আমরা জেলাজুড়ে মানুষকে সচেতন করছি। সেই সঙ্গে চেকিংও করছি। লকডাউন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন এই জেলায় গড়ে প্রায় ১০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এই অভিযান চলবে। সেই সঙ্গে জেলার সর্বত্র নজরদারি চালানো হচ্ছে।