বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
জেলা থেকে মোট ৫৬জন নিজামুদ্দিনের ওই ধর্মীয় সভায় অংশ নিয়েছিলেন বলে জেলাশাসক পার্থ ঘোষ জানিয়েছেন। তারমধ্যে সিংহভাগ এখনও আড়ালে রয়েছেন। তমলুক থানার বাড়খোদা গ্রামের একটি জায়গায় ১০-১২জন আত্মগোপন করে রয়েছেন বলে প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট এসেছে। শনিবার স্বাস্থ্যদপ্তরের একটি টিম বাড়খোদা গ্রামে থার্মাল স্ক্রিনিং করতে যাওয়ার সময় হামলার মুখে পড়ে। স্বাস্থ্যদপ্তরের গাড়িতে ভাঙচুরও চালানো হয়। এই অবস্থায় আত্মগোপনকারীদের কীভাবে বের করা হবে, তানিয়ে আতান্তরে পড়েছে জেলা প্রশাসন ও পুলিস।
সোমবার এই জেলা থেকে ১৪জনের নমুনা নাইসেডে পাঠানো হয়েছে। রবিবার জেলায় একসঙ্গে ছ’জন করোনা আক্রান্তের খবর এসেছিল। এদিন অবশ্য নতুন করে আক্রান্তের খবর আসেনি। তবে, বিভিন্ন হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রোগীর চাপ বাড়ছে। এই অবস্থায় আক্রান্তদের পরিবারের সদস্যদের প্রথম দফায় টেস্টে নেগেটিভ রিপোর্ট আসার পরই ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। হলদিয়ার দুর্গাচকের হাতুড়ে চিকিৎসক এবং তমলুক থানার বল্লুক গ্রামের আক্রান্ত পান ব্যবসায়ীর পরিবারের যেসব সদস্যের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছিল, প্রত্যেককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। যদিও স্থানীয় স্তরে এনিয়ে আপত্তি তোলা হচ্ছে। কিন্তু, আইসোলেশন ওয়ার্ডে বেড উপচে পড়ার মতো পরিস্থিতি। এদিন চণ্ডীপুরে একটি বেসরকারি হাসপাতালকে আইসোলেশন হাসপাতাল হিসেবে চালু করা হয়।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় দু’টি বেসরকারি হাসপাতালকে অস্থায়ীভাবে স্বাস্থ্যদপ্তর নিয়েছে। তারমধ্যে পাঁশকুড়ার মেচগ্রামের বেসরকারি হাসপাতালটি করোনা হাসপাতাল হিসেবে চালু হয়েছে। সেখানে সাতজন করোনা পজিটিভ রোগী ভর্তি আছেন। অপরদিকে চণ্ডীপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতালটি শুধুমাত্র আইসোলেশন হাসপাতাল হিসেবে চালু হল। সেখানে করোনা উপসর্গ থাকা লোকজনকে রাখা হবে। এই মুহূর্তে হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে আইসোলেশনে ২৩জন, পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পাঁচজন এবং তমলুক জেলা হাসপাতালে ১১জন আছেন। এখনও পর্যন্ত নিজামুদ্দিন ফেরত যেসব লোকজনকে খুঁজে বের করা হয়েছে, তাঁদের সিংহভাগই হলদিয়া শিল্পাঞ্চল এলাকার বাসিন্দা।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা থেকে এপর্যন্ত ১২৪জনের করোনা টেস্টের জন্য নমুনা সংগৃহীত হয়েছে। তার মধ্যে ১৩জন আক্রান্ত। তমলুক থানার বল্লুক গ্রামের পান ব্যবসায়ী পরিবারের মোট পাঁচজন আক্রান্ত। প্রথমে গৃহকর্তা নিজে আক্রান্ত হন। তিনি কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর চিকিৎসা করে স্থানীয় এক কোয়াক ডাক্তারও করোনা পজিটিভ। এরপর রবিবার ওই পান ব্যবসায়ীর পরিবারের চার সদস্য করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বলে নাইসেড থেকে রিপোর্ট আসে জেলায়। চারজনকেই মেচগ্রামের করোনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বল্লুকের করোনা আক্রান্ত পান ব্যবসায়ীর এক ভাই হৃদরোগী। তিনি কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। দু’দিন আগে ছাড়া পেয়ে রবিবার রাত থেকে ডায়ারিয়ায় ভুগছেন। এই অবস্থায় ফের হাসপাতালে যাওয়ার জন্য একটি গাড়ি কিংবা টোটো জোগাড় করতে পারেননি। বাধ্য হয়ে স্বাস্থ্যদপ্তরের দ্বারস্থ হয় ওই পরিবার। সোমবার দুপুরে ওই প্রৌঢ়কে ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। ইতিমধ্যেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই বাড়িতে সতর্কতামূলক স্টিকার সাঁটা হয়েছে।
এখনও পর্যন্ত দিল্লির নিজামুদ্দিন ফেরত হলদিয়ার দু’জন যুবক করোনা পজিটিভ। তারমধ্যে একজন বন্দরকর্মী, অন্যজন ইঞ্জিনিয়ার। ধর্মীয় সভা ফেরত কয়েকজন এই মুহূর্তে আইসোলেশনে আছেন। শনাক্ত হওয়া প্রত্যেকের করোনা টেস্ট হবে।
এদিকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন বেশ কয়েকটি স্কুলকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। রাজ্য সরকার এক নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছে, কোনও স্কুলে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার করা যাবে না। স্কুলের বদলে বিভিন্ন গেস্ট হাউসকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার হিসেবে তৈরি করা হবে। বিডিওদের গেস্ট হাউস খোঁজার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক পার্থ ঘোষ।