রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
নিজের লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত প্রত্যেকটি বিধানসভা এলাকার কারা বাইরের রাজ্যে আটকে আছেন, তাঁদের সঙ্গে কারা আছেন, কোন নম্বরে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে তার তালিকা তৈরি করছেন সংসদ সদস্য মহুয়া মৈত্র। তাঁদের সবাই পরিযায়ী শ্রমিক। ব্লক ধরে ধরে রিপোর্ট তৈরির পাশাপাশি তাঁরা কী সমস্যায় রয়েছেন এবং সেই রাজ্যের জনপ্রতিনিধি, পুলিস-প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। এব্যাপারে লকডাউনের পর থেকে নিজেই উদ্যোগী হয়েছেন মহুয়া। এখনও পর্যন্ত এমন প্রায় ২৮০০ শ্রমিককে চিহ্নিত করা গিয়েছে। মহুয়াদেবী বলেন, এমন বহু মানুষের প্রাথমিকভাবে যেটুকু দরকার আমরা দেওয়ার চেষ্টা করছি। খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
কালীগঞ্জ, নাকাশিপাড়া, কৃষ্ণনগর-২, চাপড়া, করিমপুর-১, ২, তেহট্টের প্রায় সব জায়গারই এমন বহু শ্রমিককে চিহ্নিত করা গিয়েছে। কালীগঞ্জ, করিমপুর-১, ২ ব্লক, তেহট্টে শ্রমিকদের সংখ্যাটা অনেকটাই বেশি। মহুয়াদেবী নিজে পরিযায়ী শ্রমিকদের উদ্দেশে একাধিক অডিও বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন। প্রত্যেককে আশ্বস্ত করা হয়েছে, অনাহারে কাউকে মরতে হবে না। তাঁর কথায় এবং কাজে খানিক স্বস্তিতে প্রায় সকলেই। কিন্তু উৎকন্ঠা কমেনি। এভাবে কত দিন!
করিমপুরের হরেকৃষ্ণপুর থেকে ছত্তিশগড়ে কাজে গিয়ে আটকে রয়েছেন ৫০ জন। তাঁদের পক্ষে রবি শেখের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সংসদ সদস্যের জন্য আমরা খেতে পাচ্ছি। এখন আর অসুবিধা হচ্ছে না। তবে বাড়িতে টাকা পাঠাতে পারছি না। বাড়ির খোঁজ পেতেও সমস্যা হচ্ছে। এরকম খারাপ সময় কোনও দিন কাটাইনি। ভয়ানক এই দুঃস্বপ্ন কবে শেষ হবে সেই অপেক্ষায় আছি। চাপড়ার সম্রাট খান চেন্নাইয়ে আটকে গিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে আছেন আরও ১২জন শ্রমিক। সম্রাট বলেন,আপাতত সবাই আমরা ঠিক আছি। একটা শেল্টার হোমে রাখা হয়েছে আমাদের, খেতে দিচ্ছে। অসুবিধা হচ্ছে না সেভাবে। তবে বাড়িতে টাকা পাঠাতে পারছি না।
গোটা নদীয়া জেলায় পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা অনেক। ২৮০০জনকে চিহ্নিত করা গেলেও এর বাইরেও অনেকেই থেকে যাচ্ছেন। আবার রানাঘাট মহকুমা এলাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কর্মসূত্রে বহু মানুষ ভিন রাজ্যে থাকেন। লকডাউন ঘোষণার আগে বেশিরভাগ মানুষ ফিরে আসতে পারলেও ভিন রাজ্যে এখনও অনেকে আটকে রয়েছেন। বিশেষ করে হবিবপুর, রাঘবপুর, বারাসাত, কালীনারায়ণপুর, ধানতলা এলাকা থেকে প্রচুর মানুষ মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, দিল্লি সহ বিভিন্ন রাজ্যে কাজে যান। তাঁদের মধ্যে বহু মানুষ ভিন রাজ্যে শ্রমিক, রাজমিস্ত্রি, সোনার কারিগরের কাজ করেন। যে সমস্ত মানুষ ভিন রাজ্য থেকে এসেছেন তাঁদের হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়েছে। সকলকেই ১৪দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় আশা কর্মীরাও তাঁদের ওপর নজরদারি চালাচ্ছেন। পাশাপাশি কিছু শ্রমিক এখনও ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে সেখানেই আটকে রয়েছেন। রানাঘাটের ১১নম্বর ওয়ার্ডের শরৎপল্লি এলাকার চারজন যুবক গোয়ার হোটেলে কাজে গিয়ে আটকে পড়েন। তাঁদের অভিযোগ, সেখানে লকডাউনের ফলে তাঁরা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। এমনকী, তাঁদের কাছে গচ্ছিত টাকাও শেষের পথে। হোটেল মালিক সহযোগিতা করছেন না। কষ্টের মধ্যে দিন কাটানো ওই যুবকরা প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়ে রাজ্যে ফেরার আর্জি জানিয়েছেন। স্থানীয় কাউন্সিলার পবিত্রকুমার ব্রহ্ম বলেন, আমার এলাকার চার যুবক ভিনরাজ্যে গিয়ে আটকে পড়েছেন। তাঁদের পরিবারগুলো এখানে দুশ্চিন্তায় রয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।