পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরুলিয়া জেলার বাঘমুণ্ডি ও ঝালদা থানা এলাকার একাংশ সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তের গ্রামে সব্জি চাষের উপরেই অনেকে নির্ভরশীল। লকডাউনের প্রথম দিকে পাইকারি বিক্রেতারা গ্রামে এসে সব্জি নিয়ে জেলা ও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে যেতে পারলেও গত কয়েকদিনে তা একেবারেই বন্ধ। বাইরের জেলা বা রাজ্যের কোনও পাইকারি বিক্রেতা যেমন করোনা আতঙ্কে গ্রামে প্রবেশ করতে পারছেন না, তেমনই ভিন রাজ্যে সব্জি নিয়ে যাওয়া কার্যত সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বিক্রেতারা অনেকেই স্থানীয় বাজারে নিয়ে গিয়ে সব্জি বিক্রির চেষ্টা করছেন। কিন্তু, ব্যাপক জোগানের জেরে সব্জির দাম সেই তলানিতে ঠেকেছে।
বাঘমুণ্ডির শশ গ্রামের বাসিন্দা কৃপাসিন্ধু কুইরি বলেন, কাঁচালঙ্কা, টোম্যাটো সহ বিভিন্ন সব্জি রয়েছে। কিন্তু, বিক্রি কোথায় হবে? সুইসা মার্কেটের পাইকাররা এসে ট্রেনে ঝাড়খণ্ডের টাটায় নিয়ে যেতেন। এছাড়াও গ্রামে পাইকারি বিক্রেতারা ছোট গাড়ি নিয়ে এসে সব্জি গিরিডি নিয়ে যেতেন। এখন তো সবই বন্ধ। পাইকারি বিক্রেতারা একদিকে যেমন ভয়ে আসছেন না, তেমনই গ্রামেও বাইরের লোকের প্রবেশ নিষেধ। কি করে সব্জি বিক্রি হবে? তিনি আরও বলেন, এক কেজি কাঁচালঙ্কা জমি থেকে তোলার জন্য পাঁচ টাকা মজুরি দিতে হয়। আবার ওই লঙ্কা কেজিপ্রতি পাঁচ টাকা দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। তাহলে জমি থেকে তুলে কী লাভ?
তিনি আরও বলেন, শশগ্রামের প্রায় ৭৫ শতাংশ বাসিন্দা সব্জি চাষ করেন। এখন কেজিপ্রতি টোম্যাটো তিন টাকা, কাঁচালঙ্কা পাঁচ টাকা, লাউ তিন টাকা, ঝিঙে আট টাকা, বাঁধাকপি দু’টাকা, বেগুন চার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এই দামে বিক্রি করা মানে ফ্রি দেওয়ার মতোই। ওই গ্রামেরই বাসিন্দা অরুণ কুইরি বলেন, সব্জিগুলি বাঁচিয়ে রাখার খরচও উঠছে না। তাই বিক্রির আশা ছেড়ে দিয়েছি। জমিতেই সব্জি নষ্ট হচ্ছে।
ঝালদা থানার পাটঝালদা এলাকার বাসিন্দা অমলা কুইরি বলেন, লকডাউনের জন্য সব্জি বিক্রি করতে পারছি না। গাড়ি না থাকায় কোনও পাইকার আসছেন না। কারও যদি খাবারের কষ্ট থাকে, তাঁরা গ্রামে এলে ফ্রিতে আমরা সব্জিগুলি দিয়ে দেব। ওই গ্রামেরই গৌর কৈবর্ত্য বলেন, দু’টাকা কেজি দরেও শশা বিক্রি হচ্ছে না। ফেলে দেওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই। গয়না বন্ধক দিয়ে সব্জি চাষ করেছিলাম। কী হবে বুঝতে পারছি না। সরকার অন্যান্যদের জন্য এত কিছু করছে, চাষিদের জন্যও কোনও ব্যবস্থা করার দাবি জানাচ্ছি।