পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
দু’জন করোনা আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার জন্য তমলুক শহরের তিনজন চিকিৎসককে আইসোলেশনে রাখতে হয়েছিল। ওই তালিকায় তমলুক জেলা হাসপাতালের এক চিকিৎসক এবং প্রাইভেট প্র্যাক্টিস করা আরও দুই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন। দুই আক্রান্তকে ভর্তি করার জন্য তিনটি নার্সিংহোম বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর। ওই ঘটনার পর চিকিৎসকদের মধ্যে আতঙ্ক চেপে বসে। রাতারাতি তমলুক শহরে অন্তত ১০০টি চেম্বারে তালা পড়ে যায়।
তমলুক শহরে নার্সিংহোমের ছড়াছড়ি। শুধুমাত্র এই শহরেই রয়েছে ৪৮টি নার্সিংহোম। এছাড়াও প্রায় ১০০ চেম্বারে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা প্র্যাক্টিস করেন। তমলুক থানার বল্লুক গ্রামের এক পানের ব্যবসায়ী এবং হলদিয়ার দুর্গাচক এলাকার এক হাতুড়ে চিকিৎসক তথা ওষুধ দোকানদার তমলুক শহরের তিনটি নার্সিংহোম ভর্তি ছিলেন। পরবর্তী সময়ে দু’জনকেই কলকাতায় বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয় এবং তাঁদের নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। ওই ঘটনার পর থেকে জেলাজুড়ে অধিকাংশ নার্সিংহোম এবং চেম্বারে তালা ঝুলছে।
মহিষাদল ব্লকের অমৃতবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত মাগুরী গ্রামের প্রবীণ স্বাধীনতা সংগ্রামী রাধামাধব পট্টনায়ক(৯৩) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তমলুক শহরের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি ছিলেন। করোনা আতঙ্কের পরিবেশে ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ সমস্ত রোগীকে বাড়ি নিয়ে চলে যেতে বলে। তাছাড়া নার্সিংহোমে চিকিৎসকরাও যাচ্ছেন না। এই অবস্থায় রবিবার ভোররাতে সুশীল ধাড়ার সহযোগী ওই স্বাধীনতা সংগ্রামীর মৃত্যু হয়।
নার্সিংহোমগুলিতে চিকিৎসকরা যাচ্ছেন না। বিভিন্ন নার্সিংহোমে কর্মীরাও যাচ্ছেন না। অনেক জায়গায় রোগী ভর্তি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তমলুক শহরের পাশাপাশি হলদিয়া, কাঁথি, এগরা, পাঁশকুড়া, মেচেদা সর্বত্র ছবিটা একইরকম।
প্রোগ্রেসিভ নার্সিংহোম অ্যান্ড হসপিটাল অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সম্পাদক কানাইলাল দাস বলেন, চিকিৎসকরা নার্সিংহোমে আসতে চাইছেন না। যেসব কর্মী নার্সিংহোমে কাজ করেন, তাঁদের পরিবারের লোকজন কাজে আসতে দিচ্ছেন না। এরকম সমস্যার মধ্যে দিয়ে নার্সিংহোমগুলি চলছে। জেলাশাসক পার্থ ঘোষ বলেন, ডাক্তারদের চেম্বার এবং নার্সিংহোম স্বাভাবিক রাখার জন্য আইএমএ সংগঠনের কর্মকর্তাদের কাছে আবেদন জানিয়েছি। আশা করি, ওঁরা আমাদের আবেদনে সাড়া দেবেন।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসদের পাশাপাশি কোয়াক ডাক্তাররাও করোনা আতঙ্কে নিজেদের চেম্বারে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের বল্লুক গ্রামের করোনা আক্রান্ত বৃদ্ধের চিকিৎসা করে স্থানীয় শাবললাড়া গ্রামের এক কোয়াক করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। হলদিয়ার দুর্গাচকেও একজন কোয়াক ডাক্তার করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এই অবস্থায় জেলায় সাড়ে সাত হাজার কোয়াক ডাক্তারের মধ্যে সিংহভাগ চেম্বার বন্ধ করে দিয়েছেন।